কি পরিমাণ ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং ফাইবার জাতীয় খাবারের তালিকা সূমহ

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য। উদ্ভিতজাত খাবার যেসব কারণে স্বাস্থ্য সম্মত তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এসবের মধ্যে থাকা ফাইবার বা আঁশ। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং ক্রনিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, ইত্যাদি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। কিন্তু সব ফাইবার এক নয়। ভিন্ন ধরনের ফাইবের আছে ভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা।

তাই আজকে আমরা ফাইবার কি তা জানব এবং ফাইবার জাতীয় খাবার কি কি তা নিয়ে আলোচনা করব।

কি পরিমাণ ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে

ফাইবার কি?

ফাইবার হলো কার্বোহাইড্রেট জাতীয় সেই সকল খাবার যা আমরা হজম করতে পারি না। এগুলো পরিপাক ছাড়াই বৃহদান্ত্রের দিকে চলে যায়। পরিপাক না হলেও এটা শরীরের জন্য অপরিহার্য। পেট পরিষ্কার রাখতে, পরিপাক তন্রের ক্যান্সার প্রতিরোধে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফাইবারের গুরুত্ব অপরিসীম। যদিও এটি আমাদের শরীরের কোনো উৎস নয়।

(একজন পূর্ণ বয়স্ক নারীর জন্য দৈহিক ফাইবার প্রয়োজন ২৪গ্রাম এবং পুরুষের জন্য ৩৮গ্রাম)

ফাইবারের প্রকারভেদ

ফাইবার ২ প্রকারের। যথা-

দ্রবণীয় ও অদ্রবনীয় ফাইবার উভয় প্রকারের ফাইবারই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

জন্ডিস হলে কি কি খাবেন আর কি কি খাবেন না তার তালিকা

১. দ্রবণীয় ফাইবার :

এ ধরনের ফাইবার খাওয়ার পর তা পানিতে মিশে জেল জাতীয় পদার্থে পরিনত  হয়।এ পদার্থ খাবার হজম করার গতি কমিয়ে দেয় ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে।

২. অদ্রবনীয় ফাইবার :

এ ধরনের ফাইবার খাওয়ার পর পানিতে মিশে যায় না।পরিপাক নালীর ভেতরে হজম প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় এগুলো গোটা অবস্থাতেই থাকে। অদ্রবনীয় ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করতে সাহায্য করে।

এছাড়া এটি মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ফলে শরীর থেকে সহজেই মল বেড়িয়ে যেতে পারে। এভাবে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে ও পায়খানা নিয়মিত করে।

ফাইবার আমাদের শরীরে যে যে কাজ করে

১।ফাইবার ভাল ব্যাক্টেরিয়ার খাদ্য

ব্যাক্টেরিয়া বাস করে আমাদের ত্বকে, মুখে, নাকে, এবং বেশীরভাগ বাস করে আমাদের বৃহদন্ত্রে।  প্রায় ৫০০ প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়া আমাদের অন্ত্রে বাস করে। এসব অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়াকে বলা হয় গাট ফ্লোরা । এটা খারাপ কিছু নয়। এখানে আমাদের অন্ত্র এবং ব্যক্টেরিয়ার মধ্যে একটি পারস্পরিক উপকারিতা কাজ করছে। আমরা ব্যাক্টেরিয়াকে দিচ্ছি খাদ্য, আশ্রয়স্থল এবং নিরাপদ বাসস্থান। অপরদিকে এরা আমাদের শরীরের এমন উপকার করে যা শরীর একা করতে পারে না।

এসব বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে কিছু আমাদের ওজন কমাতে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, এমনকি মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

সমস্যা হচ্ছে, বেশীরভাগ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট বৃহদান্ত্রে পৌঁছানোর আগেই রক্তে মিশে যায়, ফলে গাট ফ্লোরার জন্য কিছুই থাকে না। এখানেই আসে ফাইবারের প্রয়োজনীয়তা। আমাদের শরীরে ফাইবার হজম করার জন্য এনযাইম নেই, তাই ফাইবার সহজেই বৃহদান্ত্রে পৌঁছাতে পারে।

তবে, অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়ায় আছে ফাইবার হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় এনযাইম। এই কারণেই ডায়েটারি ফাইবার স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই প্রয়োজনীয়। এসব ফাইবার অন্ত্রের ভাল ব্যাক্টেরিয়ার খাদ্য, যা প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।

এভাবেই ফাইবার আমাদের অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়া উৎপাদন বৃদ্ধি করে ফলে বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম, ক্রোনস ডিজিজ, আলসার, ইত্যাদি।

২।কিছু কিছু ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে

কিছু ফাইবার আছে যা আপনার ক্ষুধা কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশী বেশী ফাইবার খেলে ক্যালরি খাওয়া কমে যায় ফলে ওজনও কমে। ফাইবার অন্ত্রের পানি শুষে নেয় ফলে নিউট্রিয়েন্ট এবসর্ব করা ধীর হয় এবং পেট ভরা থাকে। ওজন কমাতে সবচেয়ে কার্যকর ফাইবার সাপ্লিমেন্ট হচ্ছে গ্লুকোম্যানান।

অতি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পর ব্লাড সুগার বেড়ে গেলে ফাইবার তা কমিয়ে আনে বেশী মাত্রার ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারে পরিশোধিত শর্করা  যুক্ত খাবারের তুলনায় কম গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স আছে। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা এটা শুধু ভিশাস ফাইবারের বেলায় প্রযোজ্য। ভিশাস ফাইবার  যেসব খাবারে আছেঃ বিন, তিসির বীজ, কলাই, শুঁটি, এসপারাগাস, ওট, ইত্যাদি।

এসব ফাইবার উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবারের সাথে খেলে ব্লাড সুগার বৃদ্ধি কমবে।

৩।ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য

ফাইবারের অন্যতম গুণাবলী হল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা। তবে এতে পরস্পরবিরোধী মতবাদ আছে। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বেশী বেশী ফাইবার খেলে তা কোষ্ঠিন্যের সমস্যা দূর করে, আবার কিছু গবেষণায় দেখা গেছে খাবার থেকে ফাইবার বাদ দিলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। বিজ্ঞানীরা বলেন ফাইবারের এই প্রভাব নির্ভর করে ফাইবারের প্রকারের উপর।

যেসব সলুবল ফাইবার পরিপাক নালীতে জেল সৃষ্টি করে সেসব ফাইবার খুবই কার্যকরি, যেমন ইসবগুল। আরেক ধরনের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর সেটা হল আলু বোখারা। ফাইবারের এই সাপ্লিমেন্টকে বলা হয় সরবিটল।

সঠিক ফাইবার খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, কিন্তু ভুল ফাইবার গ্রহণ করলে ফল হবে বিপরীত। এজন্য, ফাইবার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।

৪।ফাইবার কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

কোলন ক্যান্সার বা মলাশয়ের ক্যান্সার সারা বিশ্ববাসীর মৃত্যুর মৃত্যুর তৃতীয়তম কারণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বেশী মাত্রায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এছাড়া উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন ফলমূল, শাকসব্জ এবং হোল গ্রেইনে আছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর পরিপোষক এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।

ফাইবার জাতীয় খাবার কি কি তা জানব।এগুলো হলো

আপেল :

আপেল একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল।যা খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আপেলের প্রায় ৮০ শতাংশ হলো পানি এবং এর মধ্যে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। একটি মাঝারি সাইজের আপেল থেকে ৪.৪ গ্রাম ( প্রতি ১০০ গ্রাম আপেলের ২.৪ গ্রাম)  ফাইবার পাওয়া যায়। আপেল খোসা সহ খাওয়া উচিত। কারণ খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও ভিটামিন। যারা কম পরিমাণ সুগার আর বেশি পরিমাণ ফাইবার পেতে চান তারা লাল আপেলের তুলনায় সবুজ আপেল খাওয়া বেশি উপকারী হবে।

নাশপাতি :

নাশপাতি যার ৮৩ শতাংশ হলো পানি এবং প্রতি ১০০ গ্রাম থেকে ৩.১ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। সেই সাথে নাশপাতিতে ভিটামিন এ,বি,সি,ই,কে সহ ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম, আয়রন, কপার ইত্যাদি বেশি রয়েছে

স্ট্রবেরি :

লাল টুকটুকে দেখতে স্ট্রবেরি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল।যার প্রতি ১০০ গ্রাম থেকে ২ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায় এবং সেই সাথে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন রয়েছে। ফল হিসেবে এটি সরাসরি খাওয়া যায় আবার অন্য রেসিপির সাথে যুক্ত করে স্বাদ ও ঘ্রান বাড়ানো যায়।

অ্যাভোকাডো:

অ্যাভোকাডোতে অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম থেকে ৬.৭ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাট সহ পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন বি,সি,ই,কে ইত্যাদি পাওয়া যায়।

কলা:

সহজলভ্য ফলের মধ্যে কলা অন্যতম।পাকা কলা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। একটি পাকা কলাতে ৩ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। সেই সাথে পটাসিয়াম, ভিটামিন বি,সি সহ ক্যালরিও পাওয়া যায়। পাকা কলার মতো কাচা কলাও ভর্তা বা রান্না করে ও খাওয়া যায়। যার মধ্যে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে।

ব্রকলি :

এই সবুজ সবজি টি ফাইবার এবং ভিটামিন সি উভয়ই সমৃদ্ধ। গবেষণা অনুযায়ী ব্রকলিতে প্রতি কাপে ৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। এই সুস্বাদু সবজিটি উপভোগ করতে রসুন ও তেল দিয়ে টস করে খেতে পারেন।

পালংশাক :

পালংশাক খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো হয়।এই শাক অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে অদ্রবনীয় ফাইবার রয়েছে যা স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

মটরশুঁটি :

সবুজ ডাল যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টির ভান্ডার। এটি ফাইবার,আয়রন এবং ভিটামিন এ ও সি সমৃদ্ধ।

ঢেঁড়স :

এই সবজিটিতে পুষ্টি অনেক। এটি ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, এনজাইম এবং অন্যান্য অনেক খণিজ গুলির একটি ভালো উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। উচ্চ ফাইবার সামগ্রীর কারণে ওকরা অন্র পরিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে।

লাউ:

অনেকেই এই সবজি পছন্দ করেন না। তবে আমরা আপনাকে বলি যে এটি ক্যালসিয়াম,ভিটামিন এ এবং কে এর একটি ভালো উৎস। এটি মিষ্টি ও সুস্বাদু উভয় আইটেম তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এই সবজি টি একটি চমৎকার বিকল্প।

এছাড়াও ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবারের তালিকায় রয়েছে : বাদাম, বিন,ওটস্,বার্লি,লাল আটা,গাজর,ছোলা, শিম,মিষ্টিআলু,ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে।

ফাইবার জাতীয় খাবারের উপকারীতা

সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ফাইবার আমাদের দেহে যেভাবে ভূমিকা পালন করে –

১. স্বাস্থকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।

২. কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

৩. পরিপাক তন্ত্রের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যেমন : পাইলস,ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম ও ডাইভারটিকুলাইটিস।

৪. রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

৫. রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

৬. ডাইভারটিকুলার ডিজিজ এর মতো রোগের ঝুঁকি কমায়।

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ফাইবার জাতীয় খাবারের   ভূমিকা:

১।ফাইবার রক্ত প্রবাহ থেকে রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে সরিয়ে পায়খানার মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয় এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।ফলে হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ ও রক্ত নালীর নানা রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে আসে।

২।ফাইবার কোলেস্টেরল কমানোর পাশাপাশি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।হজমের প্রক্রিয়ায় শ্বেতসার জাতীয় খাবার ভেঙে সুগার তৈরি হয়।আঁশযুক্ত খাবার এই প্রক্রিয়া কমিয়ে দেয় এবং রক্তে হটাৎ বেড়ে যাওয়া সুগারের মাত্রা প্রতিরোধ করে। এভাবে আশযুক্ত খাবার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

৩।মানসিক স্বাস্থ্যের সাথেও ফাইবার গ্রহণ করার সম্পর্ক আছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যায় ভুগলে সেটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই এসব অসুস্থতা দূরে রাখার জন্য আঁশযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। এভাবে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে তৈরি হওয়া অশান্তি, উদ্বিগ্নতা ও অনিদ্রা এড়ানো সম্ভব হবে।

দৈহিক কতটুকু ফাইবার গ্রহণ করা প্রয়োজন

বয়সভেদে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কতটুকু ফাইবার থাকা উচিত সেটা নিচের ছকে তুলে ধরা হলো :

বয়স         দৈনিক ফাইবার প্রয়োজন

২-৫              ১৫ গ্রাম

৫-১১            ২০ গ্রাম

১১-১৬          ২৫ গ্রাম

১৭ বছরও     ৩০ গ্রাম

ফাইবার জাতীয় খাবার সম্পর্কে কিছু টিপস

১. বেশি করে পানি ও তরল খাবার খেতে হবে।

২. ফাইবার এর পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে।

৩. নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।

৪. খাবার কেনার সময় ফাইবারের পরিমাণের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।

ফাইবার জাতীয় খাবার সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর

১।প্রশ্ন:ফাইবার জাতীয় খাবার কি কি?

উত্তর: বাদাম, শিম, আপেল, কলা, বিন,গাজর,ছোলা, ডাল ইত্যাদি যা আমাদের দৈহিক খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।

২।প্রশ্ন:দিনে কত গ্রাম ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত?

উত্তর: একজন পূর্ণ বয়স্ক নারীর ২৪ গ্রাম এবং পুরুষের জন্য ৩৮ গ্রাম ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

৩।প্রশ্ন: কোন সবজিতে ফাইবার বেশি থাকে?

উত্তর: গাঢ় রঙের সবজি।সাধারণভাবে, সবজির রঙ যত গাঢ় হবে, আঁশের পরিমাণ তত বেশি। গাজর, বিট এবং ব্রকলি ফাইবার সমৃদ্ধ। কলার্ড গ্রিনস এবং সুইস চার্ডে প্রতি কাপে 4 গ্রাম ফাইবার থাকে। আর্টিকোক সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত সবজির মধ্যে রয়েছে, একটি মাঝারি আকারের জন্য 10 গ্রাম।

৪।প্রশ্ন:সালাদে ফাইবারের পরিমাণ কত?

উত্তর: এমনকি একটি ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ থেকে আপাতদৃষ্টিতে স্বাস্থ্যকর সালাদ প্রায়শই ফাইবারে হালকা হয় – সাধারণ লেটুস সবুজ শাক প্রতি কাপে প্রায় 0.5 গ্রাম ফাইবার সরবরাহ করে। অন্যান্য শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত সালাদের সন্ধান করুন এবং যখনই সম্ভব, আপনার নিজের বাদাম, মটরশুটি বা ভুট্টা যোগ করে ফাইবার সামগ্রী বাড়ান।

৫।প্রশ্ন:ফাইবার কাজ করতে কত সময় লাগে?

উত্তর: প্রত্যেকের পরিপাকতন্ত্র ভিন্ন গতিতে কাজ করে। যাইহোক, আপনার খাদ্যতালিকায় ফাইবার গ্রহণ বাড়ানো থেকে একটি সফল মলত্যাগের জন্য সাধারণত প্রায় 24 ঘন্টা সময় লাগে। তবে মনে রাখবেন এটি কিছু লোকের জন্য কম বা বেশি সময় লাগতে পারে।

৬। প্রশ্ন:ফাইবার কি ভিটামিন শোষণে বাধা দেয়?

উত্তর: খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের ব্যবহার বিভিন্ন পদ্ধতিতে পুষ্টি গ্রহণকে প্রভাবিত করতে পারে । এটি অনুমান করা হয়েছিল যে উপরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে ডায়েটারি ফাইবারের উপস্থিতি পুষ্টির অন্ত্রের শোষণের হার হ্রাস করতে পারে।

শেষকথা

সুস্থতার জন্য ফাইবার বা আঁশ খুবই জরুরি। এটি যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, তেমনি হজমের সমস্যা থেকেও দূরে রাখে। কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আঁশ সমৃদ্ধ খাবার রাখার বিকল্প নেই।

সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত আমাদের ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।

Post Tags-

সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার, উচ্চ ফাইবার খাবার,প্রতিদিন কি পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত,ফাইবার জাতীয় খাবারের অপকারিতা,বাচ্চাদের জন্য ফাইবার জাতীয় খাবার,আঁশযুক্ত সবজি কি কি,কোন শাকে ফাইবার বেশি,আঁশযুক্ত মাছ কি কি

আপনার জন্য আরো –

আপনার জন্য-

কোন খাবারে কত ক্যালরি আছে?

শর্করা জাতীয় খাবারের তালিকা

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার তালিকা-উপকারিতা-অপকারিতা

ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার এর তালিকা

হার্টের রোগীর খাবার তালিকা

ক্যালসিয়ামের অভাব কি ভাবে হয় ?

আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা সমূহ

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

আমাশয় রোগীর কি কি খাবার খাওয়া উচিত তার তালিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *