কোন কোন খাবারে আমরা আয়োডিন পেয়ে থাকি তার তালিকা-Healthy Tips

কোন কোন খাবারে আমরা আয়োডিন পেয়ে থাকি তার তালিকা-মানব দেহের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হচ্ছে আয়োডিন। শরীরে থাইরক্সিন হরমোন তৈরী করতে আয়োডিন সাহায্য করে। দেহের তাপমাত্ৰা নিয়ন্ত্রনে, দেহের পুষ্টি সরবরাহের কাজে এবং দেহের জোড়া অংশ গুলো সচল রাখতে আয়োডিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তাই তো আজ আলোচনা করবো কোন কোন খাবার থেকে আপনারা পেতে পারেন  প্রয়োজনীয় আয়োডিন যারা আয়োডিন যুক্ত খাবারের তালিকা খুঁজছেন আজকের পোস্টেটি তাদের জন্য।

কোন কোন খাবারে আমরা আয়োডিন পেয়ে থাকি তার তালিকা

আয়োডিন কি?

আয়োডিন একটি রাসায়নিক পদার্থ, যা আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে সহায়তা করে। শরীর নিজে আয়োডিন তৈরি করতে পারে না। তাই আমাদের খাবারের সঙ্গে বাইরে থেকে এটা গ্রহণ করতে হয়।

আয়োডিন কেন দরকার

আয়োডিন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা খনিজ পুষ্টি উপাদান। আমাদের শরীরে থাইরক্সিন হরমোন তৈরির কাঁচামাল এই আয়োডিন। থাইরক্সিন হরমোন মানুষের বিকাশ, বৃদ্ধি ও বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষকেরা বলেন, গর্ভাবস্থার ৩ থেকে ৫ মাস সময়ে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের থাইরক্সিনের অভাব হলে গর্ভস্থ শিশু সঠিক পরিমাণ থাইরক্সিন পায় না। ফলে শিশুর বুদ্ধি ও বিকাশে বিপর্যয় দেখা দেয়। এমনকি জন্ম নেওয়া শিশুটি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী পর্যন্ত হতে পারে। জন্মগতভাবে আয়োডিন বা থাইরয়েড হরমোনের অভাবে ক্রিটিনিজম বা বৃদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকে।

আমাশয় রোগীর কি কি খাবার খাওয়া উচিত তার তালিকা

আয়োডিনের অভাবে আরও অনেক সমস্যা দেখা দেয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়ন্ত শিশুর চিন্তাশক্তি ও মেধার স্বাভাবিক বিকাশ। গর্ভাবস্থায় শিশু মৃত্যু বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। শিশুর দৈহিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে শিশুর মধ্যে পরবর্তী সময়ে বামন ও বধির হওয়ার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে নারীদের আয়োডিন ঘাটতি আছে, তাঁদের মধ্যে গর্ভপাত ও মৃত শিশুর জন্মদানের হার বেশি। আয়োডিনের অভাবগ্রস্ত শিশুরা অন্যদের চেয়ে বেশি অপুষ্টি সমস্যায় ভোগে, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও কম থাকে।

আয়োডিন কোথায় পাওয়া যায়

থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য যে খনিজ উপাদানটি অত্যাবশ্যকীয় তা হচ্ছে আয়োডিন। শরীরের বৃদ্ধিও বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড। এছাড়াও আয়োডিনের ঘাটতির ফলে প্রেগনেন্সির সময়ে এবং শিশুর জন্মের সময়ও জিটিলতা দেখা দিতে পারে। একজন মানুষের দৈনিক ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন গ্রহণ করা উচিৎ।

আয়োডিন যেভাবে পাওয়া যায় –

১। প্রাণিজ উৎস যেমন-সামুদ্রিক মাছ (তাজা/শুটকি)

২। প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সামুদ্রিক আগাছা

৩। আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ

এছাড়াও যেসব এলাকায় মাটিতে আয়োডিন আছে সেসব এলাকায় সবজিতেও পাওয়া যায়।

আয়োডিনের উপকারিতা

১। থাইরক্সিন নামক হরমোন তৈরীর জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

২। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

৩। মানব দেহে যে কোন রাসায়নিক পরিবর্তনে জন্য সাহায্য করে।

৪। গ্রহণকৃত খাবার হজমশক্তি, আত্মীকরন, শোষণ, সংগ্রহণ ও মল নিঃসরণ সহয়তা করে।

৫। শরীরে তাপমাত্রা রক্ষা করে।

৬। শরীরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পুষ্টি উপাদান পৌছায়।

৭। শরীরের জোড়া অংশ নড়াচড়ায় জন্য সাহায্য করে।

৮। শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে দেয়।

আয়োডিনের অভাবজনিত রোগের লক্ষণ

শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি দেখা দিলে প্রয়োজনীয় থাইরোয়েড হরমোন উৎপন্ন হয় না। আয়োডিনের অভাবে যখন শরীরে পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি হয় না তখন তাকে হাইপোথাইরয়ডিজম বলা হয়। এর ফলে আলসেমির ভাব, ঠাণ্ডা সহ্য করতে অক্ষমতা, অনিদ্রা, চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। আয়োডিনের অভাব হলে, হাইপোথাইরয়েডিজম, অটো ইমিউন ডিজিজ, গলগণ্ড ইত্যাদি সমস্যা হয়। তাছাড়া যে সমস্যা গুলো হয়-

১।শরীর প্রচন্ড দুর্বল লাগা।

২।মুখ ফুলে যাওয়া।

৩।চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।

৪।হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা হওয়া।

৫।মাংশপেশি নড়াচড়ায় কষ্ট হওয়া।

৬।মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়া।

৭।অতিরিক্ত আয়োডিনের ঘাটতি হলে মহিলারা বন্ধ্যাও হয়ে যেতে পারে।

৮।থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে গিয়ে গলগন্ড রোগ হওয়া।

আয়োডিনের অভাবে কোন রোগ হয়

আমাদের গলার কাছে থাকা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও অন্যান্য হরমোন বেরোয় যা আমাদের বুদ্ধির বিকাশ-সহ নানান শারীরিক বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আয়োডিন থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।

অল্পবিস্তর আয়োডিনের অভাবে হাইপোথাইরয়েডিজম অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়। আয়োডিনের অভাবে আরও কিছু সমস্যা হয়। যেমন-

১।থাইরয়েড গ্রন্থি আকারে বেড়ে যায়।

২। থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণ কমে গিয়ে হাইপো-থাইরয়েডিজম হয়।

৩। বুদ্ধির বিকাশ কমে যায়।

৪।মানসিক অসুস্থতা শুরু হয়।

৫। এমনকি মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

৬।এছাড়া স্নায়ু ও সংলগ্ন পেশির স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে গিয়ে পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৭। হবু মায়ের আয়োডিন ঘাটতি হলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ হয় না।

৮। মানসিকভাবে বিপন্ন ও স্প্যাস্টিক শিশুর জন্ম হয়।

৯।এমনকি ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই ভ্রূণ মারা যেতে পারে।

১০।এছাড়া চুল ঝরে যাওয়া, ওজন বাড়া, ত্বক খসখসে হয়ে যাবার মত সমস্যা হয়।

আয়োডিনের অভাবে শিশুদের কোন রোগ হয়

বড়দের পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য আয়োডিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।  তাই বাচ্চাদের খাবার গুলো যেন আয়োডিন যুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  আয়োডিন অভাবে শিশুদের যে রোগ হতে পারে তা হলো

১।বাচ্চাদের কানে কম শোনা।

২। কথা বলতে না পারার মত সমস্যার ঝুঁকি থাকে।

৩। জন্মের পর আয়োডিনে অভাব হলে বাচ্চা ক্রমশ জড়বুদ্ধি হয়ে পড়ে।

৪। বাচ্চার বেড়ে উঠতে সমস্যা হয়।

৫।বৃদ্ধি ব্যাহত হয়ে শিশুটি ডোয়ার্ফ বা বামন হয়ে যেতে পারে।

প্রতিদিন যে পরিমাণ আয়োডিন প্রয়োজন

আয়োডিনের ঘাটতি কাটাতে খাদ্যে বাড়তি আয়োডিন নিতে হবে। এর সহজ সমাধান হচ্ছে আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ। সামুদ্রিক মাছ, মাছের যকৃতের তেল যেমন কডলিভার তেল, হেলিবার্ড লিভার তেল, শার্ক লিভার তেল, শামুক, সামুদ্রিক উদ্ভিদ এবং ছাগলের দুধে আয়োডিন পাওয়া যায়। আয়োডিন দেহে বেশি পরিমাণে সংরক্ষণ করা যায় না। তাই নিয়মিত এবং পরিমাণমতো আয়োডিন গ্রহণ করতে হবে।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ১০০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন হলেই চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু কিডনির আয়োডিন নিষ্কাশন করার ক্ষমতা বেশি, ফলে গৃহীত আয়োডিনের ৮০ শতাংশই প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, একজন মানুষের প্রায় ৫০০ মাইক্রোগ্রাম বা ৫ মিলিগ্রাম আয়োডিন প্রতিদিন গ্রহণ করা উচিত। বিশেষ করে গর্ভবতী ও শিশুর খাদ্যে অবশ্যই আয়োডিনের পরিমাণ নিশ্চিত করতে হবে।

আমাদের ন্যূনতম দৈনিক পরিমাণ আয়োডিন প্রয়োজন তা হলো –

১।প্রাপ্তবয়স্কদের: 150 মাইক্রোগ্রাম।

২।1 থেকে 13 বছর বয়সী শিশু: 90 মাইক্রোগ্রাম।

৩।গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের: 290 মাইক্রোগ্রাম একটি দিন।

আয়োডিন যুক্ত খাবার তালিকা

১। দুধ

দুধে কমবেশী প্রায় সকল পুষ্টি উপাদানই বিদ্যমান। কিন্তু এতে যে আয়োডিনও আছে তা হয়তো আপনি আগে জানতেন না। শরীরের জন্যে অতি দরকারী ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি’র পাশাপাশি এক কাপ পরিমাণ দুধে থাকে ৫৬ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন।

২।চিংড়ি

সামুদ্রিক মাছ সাধারণত আয়োডিনের ভালো উৎস। প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এই সুস্বাদু খাবারে আছে আয়োডিন। ৩ আউন্স পরিমাণ চিংড়িতে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত আয়োডিন পেতে পারেন আপনি।

৩।টুনা মাছ

বাজারে এই মাছটি ক্যানে বা এমনিতেই পাওয়া যায়। এম্নিতে মাছটি রান্না করে খেতে পারেন। তবে ক্যানে থাকা টুনা মাছে আয়োডিনের পরিমাণ বেশী থাকে। ৩ আউন্স ওজনের ১ ক্যান টুনা মাছে প্রোটিন, ভিটামিন ডি ও আয়রন ছাড়াও প্রায় ১৭ আউন্স পর্যন্ত আয়োডিন থাকে।

৪।সেদ্ধ ডিম

সেদ্ধ ডিম তো কতভাবেই খাওয়া যায়। তরকারী, স্যান্ডুইচ, সালাদ বা এমনি এমনিই!আপনি কি জানেন একটি সেদ্ধ ডিমে ভিটামিন এ, ভিতামিন ডি, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, এন্টিওক্সিডেন্ট ছাড়াও ১২ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ আয়োডিন থাকে!

৫। টকদই

এক কাপ টকদই আপনার প্রতিদিনের আয়োডিন চাহিদার প্রায় ৫৮ শতাংশ পূরণ করে। এই দারুণ সুস্বাদু আর পুষ্টিকর খাবারটিতে প্রচুর প্রোটিন আর ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি মাত্র ১ কাপ টকদইয়ে থাকে ১৫৪ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন!

৬। কলা

কলা খেতে যেমন ভালো, দামে সস্তা আর সারাবছরই পাওয়া যায়। সেই সাথে পুষ্টিগুণেও অনন্য। প্রচুর পটাশিয়ামের পাশাপাশি প্রতিটি কলায় আপনি পাচ্ছেন ৩ মাইক্রগ্রাম পরিমাণ আয়োডিন।

৭। স্ট্রবেরী

স্ট্রবেরী ফলটি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও ভারি সুস্বাদু। আর সেই সাথে প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেলের পাশাপাশি ১ কাপ পরিমাণ স্ট্রবেরিতে রয়েছে ১৩ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন।

৮।ভুট্টা

ভুট্টা তো আজকাল নানা ভাবেই আমরা শহুরে জীবনে খেয়ে থাকি। পুড়িয়ে, স্যুপের সাথে, পপকর্ন অথবা সালাদের সাথে। অথচ আপনি কি জানেন মাত্র আধা কাপ ভুট্টা থেকে আপনি পেতে পারেন ১৪ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ আয়োডিন।

৯।ফুলকপি

ফুলকপি শীতের সবজি। এটি পুষ্টিকর খাবার, এতে রয়েছে আয়োডিন। ১৫৬ গ্রাম ফুলকপিতে ১ মিলিগ্রাম আয়োডিন থাকে তাছাড়া ফুলকপিতে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফাইবারের মতো উপাদান রয়েছে।

১০।সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছে আয়োডিন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। রক্তে কোলেস্টরলের মাত্ৰা ঠিক রাখতে ও দেহে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন প্রতিরোধে সামুদ্রিক মাছের গুরুত্বঅপরিসীম। সাগরের ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছে ৩ মিলিগ্রাম আয়োডিন রয়েছে। আয়োডিনের ঘাটতি পূরণের জন্য সব ধরণের মাছ খাবারের তালিকায় রাখা উচিত।

১১।শুটকি

শুটকি একটি সহজলভ্য খাবার। এতে অ্যামিনো অ্যাসিড সহ আয়োডিন ও আয়রন রয়েছে। শুঁটকি খনিজ লবণ এর ঘাটতি পূরণ করে ও রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১২।আয়োডিনযুক্ত লবণ

প্রচলিত একটি কথা আছে,”যদি সুস্থ থাকতে চান, আয়োডিন যুক্ত লবণ খান”। আয়োডিনের অভাবে গলগন্ড রোগ হয়। আপনি কি জানেন, খাবার লবণে আয়োডিন আছে কি’না তা, কিভাবে বাসায় পরীক্ষা করা হয়। তাহলে জেনে নিন। কয়েকটি ভাতের সাথে খানিকটা লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে মাখলে তা যদি বেগুনি রঙ ধারণ করে তবে এতে আয়োডিন আছে।

আর রঙ না হলে এতে আয়োডিন নেই। আয়োডিন যুক্ত লবণ দেহে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। হিমালয়ান সল্ট আয়োডিনযুক্ত লবণ হিসেবে পরিচিত। এতে আয়োডিনের পরিমান সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি থাকে। .০৫ গ্রাম হিমালয়ান সল্ট এর মধ্যে ২৫০ গ্রাম আয়োডিন থাকে তাই আয়োডিনযুক্ত লবণ দেখে কিনুন।

১৩।কলিজা

গরুর মাংসের কলিজায় আয়োডিনের পরিমাণ অন্য প্রাণীর কলিজার চেয়ে বেশি থাকে। ১০০ গ্রাম কলিজাতে ৬.৫ মিলিগ্রাম আয়োডিন রয়েছে। কলিজায় ভিটামিন বি, কপার, প্রোটিন ও সেলেনিয়াম রয়েছে। কলিজায় যে উপাদান রয়েছে তা ব্রেইন ও লিভারের জন্য উপকারী।

১৪।টার্কি মুরগি

টার্কির মাংস সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর আয়োডিনযুক্ত খাবার। ১০০ গ্রাম মাংসে ২.৩ মিলিগ্রাম আয়োডিন রয়েছে। টার্কিতে জিঙ্ক, ভিটামিন বি, মিনারেল, সেলেনিয়াম ও উচ্চ মাত্রার প্রোটিন রয়েছে।

১৫। আলু

গোল আলু আয়োডিনের একটি ভালো উৎস। সিদ্ধ আলু শুধু আয়োডিনেই সমৃদ্ধ নয় বরং এর ক্যালরিও কম থাকে। মাঝারি আকারের একটি সিদ্ধ আলুতে ৬০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন থাকে।

 ১৬। সামুদ্রিক শৈবাল

সামুদ্রিক শৈবালে প্রচুর পরিমানে আয়োডিন থাকে। আপনার প্রতিদিনের আয়োডিনের চাহিদা পুরণে সামুদ্রিক শৈবাল চমৎকার একটি খাদ্য উপাদান । আপনি জেনে অবাক হবেন যে, ৭ গ্রাম শুষ্ক  সামুদ্রিক শৈবালে আয়োডিন আছে  ৪,৫০০ মাইক্রোগ্রাম।

১৭। পাউরুটি

দিনের আয়োডিনের প্রয়োজনীয়তা মেতাতে পাউরুটি একটি উৎস হতে পারেন। মাত্র ২ স্লাইস সাদা পাউরুটিতে ৪৫ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন রয়েছে যা আপনার আয়োডিনের দৈনিক চাহিদার ৩০% পূরণ করতে পারে।

আয়োডিন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

১।আয়োডিনের উৎস কি?

উত্তরঃসারা বিশ্বেই খাবারের মধ্যে সম্ভবত আয়োডিনের সবচেয়ে উৎস সাদা মাছ এবং ডিম। বেশিরভাগ দেশে খাবারের লবণেও আয়োডিন যুক্ত থাকে। যুক্তরাজ্যের মতো অনেক দেশে মানুষ দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে সরাসরি আয়োডিন পেয়ে থাকে, কারণ গরুর খাবারে আয়োডিন যোগ করা হয়। কিন্তু শিল্পোন্নত দেশেও অনেক মানুষের মধ্যে আয়োডিনের ঘাটতি দেখা যায়।

২।আয়োডিন আমাদের শরীরে কী কী কাজ করে?

উত্তরঃমস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ও থায়রয়েড হরমোন তৈরির জন্য আয়োডিন প্রয়োজন। এই হরমোন রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অংশের চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করে। গলার সামনের দিকে প্রজাপতির মতো এ গ্ল্যান্ডের অবস্থান। শরীরের তাপ ও শক্তির জন্যও আয়োডিন প্রয়োজন।

৩।অতিরিক্ত আয়োডিন খেলে কি ওজন বাড়ে যাবে?

উত্তরঃদীর্ঘ সময়ের জন্য আয়োডিনের উচ্চ মাত্রা গ্রহণ আপনার থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ করার উপায় পরিবর্তন করতে পারে। এটি বিভিন্ন উপসর্গের বিস্তৃত পরিসরের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যেমন ওজন বৃদ্ধি ।

৪।দই এ আয়োডিনের পরিমাণ কত?

উত্তরঃঅন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের মতো, দই আয়োডিনের একটি ভাল উৎস। মাত্র এক কাপ দই 116 mcg পর্যন্ত আয়োডিন সরবরাহ করে।

৫।আয়োডিন যুক্ত লবণ কি ক্ষতিকর?

উত্তরঃআয়োডিনযুক্ত লবণ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য, তবে আপনার এটি পরিমিত হওয়া উচিত।

শেষ কথা

একজন সুস্থ মানুষের জন্য আয়োডিন অনেক জরুরি। আয়োডিনের অভাবে বিভিন্ন রোগ হয়। তাই আয়োডিনের চাহিদা যোগানোর জন্য আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। তাই বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে হলে দেহে আয়োডিন নিশ্চিত করতে হবে।

Post tags-

যেসব খাবারে আয়োডিন আছে, আয়োডিন এর কাজ,কোন কোন সবজিতে আয়োডিন আছে,আয়োডিন ট্যাবলেট,আয়োডিন এর অভাবে কি রোগ হয়,আয়োডিনের অভাবজনিত রোগের লক্ষণ,আয়োডিন যুক্ত লবণ চেনার উপায়,আয়োডিনের অভাবে শিশুদের কোন রোগ হয়

আপনার জন্য আরো –

আপনার জন্য-

কোন খাবারে কত ক্যালরি আছে?

শর্করা জাতীয় খাবারের তালিকা

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার তালিকা-উপকারিতা-অপকারিতা

ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার এর তালিকা

হার্টের রোগীর খাবার তালিকা

ক্যালসিয়ামের অভাব কি ভাবে হয় ?

আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা সমূহ

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *