তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

5/5 - (3 votes)

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত-মুসলমানদের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ অনেক ফজিলত পূর্ণ একটি এবাদত।হাদিসে আছে ফরজ নামাজের পরে নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত বেশি (আহমাদ, মিশকাত ১১০ পৃষ্ঠা) । তাই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে প্রতিটি মুসলমানের অবগত থাকা উচিত। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জানা থাকলে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার জন্য আগ্রহ বাড়বে।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি রাত্রে ঘুম থেকে উঠে এবং সেই তার স্ত্রী কেউ ঘুম থেকে জাগিয়ে নামাজ পড়ায় এমনকি সে যদি জেগে না ওঠে তাহলে তার মুখে খানিকটা পানি ছিটিয়ে দেয় তাহলে তার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষণ করে থাকেন। অনুরূপ কোন মহিলা যদি রাত্রিকালে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে এবং সে তার স্বামীকে ঘুম থেকে জাগায়  এমনকি তার স্বামী না জাগলে স্ত্রী তার মুখে খানিকটা পানি ছিটিয়ে তার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয় তাহলে তার প্রতিও আল্লাহর রহমত  বর্ষিত হতে থাকে(আবু দাউদ, নাসায়ী মিশকাত ১০৯ পৃষ্ঠা)।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত জেনে রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ কেননা যত্নের সাথে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী বিনা হিসেবে জান্নাতে যেতে পারেন।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং তার সাথে তার সাহাবীগণও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ে উৎসাহী ছিল।  তাহাজ্জুদ নামাজ একটি নফল ইবাদত হলেও এটি নফল ইবাদত গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম এবাদত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদ নামাজ কে নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত বলেছেন।

তাহাজ্জুত নামাজ কি

তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি শব্দ। তাহাজ্জুদের বাংলা অর্থ হচ্ছে ঘুম থেকে জেগে ওঠা। তাহাজ্জত নামাজ হলো শেষ রাতের একটি নফল ইবাদত।

মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে সম্পূর্ণ ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ।তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জানার আগে তাহাজ্জুদ নামাজের সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা থাকা উচিত।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্বে তাহাজ্জুদ নামাজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জীবদ্দশায় কখনো তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া বাদ দেননি। তবে নবীর উম্মতের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নতে গায়রে মক্কাদাহ(যা না পড়লে গুনাহ হবে না কিন্তু পরলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায়)।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার জন্য কোন নির্দিষ্ট সূরা নেই। এটি নফল ইবাদত গুলোর মধ্য শ্রেষ্ঠ ইবাদত। প্রতিটি মুসলমানের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিয়ে নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। আমাদের রাসুল (সাঃ) কখনো ৮ রাকাত কখনো ৪ রাকাত কখনো ১২ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তবে নবীর উম্মতের জন্য দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করলেও তার তাহাজ্জুদ আদায় করা হবে। আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সাঃ) দুই দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে বলতে গেলে যেকোনো সূরা দিয়েই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়। সূরা ফাতিহার সাথে কোরআনের যেকোনো সূরার আয়াত মিলিয়ে পড়তে হয়। তবে আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথাসম্ভব বড় সূরা মিলিয়ে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। এছাড়াও লম্বা রুকু এবং সেজদার সাথে অত্যন্ত যত্ন এবং মনোযোগ সহকারে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।

তাহাজ্জুত নামাজের নিয়ম

*তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীরে তাহরীমা বাধতে হবে।

*তাকবীরে তাহরিমা বেঁধে সানা পাঠ করতে হবে। ছানা পড়া হয়ে গেলে ফাতিহার সাথে অন্য যে কোনো সূরা কিংবা কোরআনের যে কোনো সূরার আয়াত মিলিয়ে পড়তে হবে।

*এরপর যথারীতি অন্যান্য নামাজের মতোই রুকু এবং সিজদা করতে হবে।

*ঠিক একই ভাবে দ্বিতীয় রাকাত নামাজ পড়তে হবে।এভাবে রাকাত নামাজ আদায় করার পর শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।

এভাবে আপনি চাইলে ৪ রাকাত, ৮ রাকাত, ১২ রাকাত নামাজ আদায় করতে পারেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা একটি ফজিলত পূর্ণ ইবাদত। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত আল্লাহর অধিক সন্তুষ্টি অর্জনে  তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে রাতের শেষ প্রহরে এই নামাজ আদায় করলে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন। আমাদের নবী করিম (সাঃ)নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদের এটি আদায় করার জন্য উৎসাহিত করতেন।

পবিত্র কোরআন শরীফে তাহাজ্জত নামাজ পড়ার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ করা হয়েছে।পবিত্র কুরআনে এসেছে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে থাকো তোমার জন্য আল্লাহর অতিরিক্ত ফযল ও করম। শীঘ্রই আল্লাহ তোমাকে উভয় জগতে বাঞ্ছিত মর্যাদায় ভূষিত করবেন(বণী ইসরাইল: ৭৯)।

যারা প্রতিদিন নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেন কে তাদেরকে মহসিন ও মুত্তাকী নামে অভিহিত করা হয়েছে। তাদেরকে দুনিয়ায়  আল্লাহ তায়ালার রহমত এবং আখিরাতে চিরন্তন সুখ সম্পদের অধিকারী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘নিশ্চয়ই মুত্তাকী লোক বাগবাকি চাই এবং ঝর্ণার আনন্দ উপভোগ করতে থাকবে এবং যে যে নিয়ামত প্রভু তাদের দিতে  থাকবেন  সেগুলো তারা গ্রহণ করবেন। কারণ নিঃসন্দেহে তারা এর পূর্বে (দুনিয়ার  জীবনে)  মোহসেনিন (বড় নেক্কার)ছিল। তারা রাতের খুব অল্প অংশেই ঘুমাতো এবং শেষ রাতে ইস্তেগফার করত (আল্লাহর কাছে মাগফিরাত চাইতো)’ [সূরা যারিয়াত: ১৫ -১৮ ]।

মানুষের মন ও চরিত্রকে নির্মল ও পবিত্র রাখার জন্য এবং সৎ পথে পরিচালিত করার  জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া কার্যকর একটি পন্থা। আল্লাহপাক বলেন, ‘বস্তুত রাতে ঘুম থেকে উঠা মনকে দমিত করার জন্য খুব বেশি কার্যকর এবং সেই সময়ের কোরআন পাঠ বা জিকির একেবারে যথার্থ ‘(সূরা মুজাম্মিল :৬)।

আল্লাহ পাক আরো বলেন, ‘তারাই আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা যারা প্রতিপালকের দরবারে সিজদা করে এবং দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়। (সূরা ফুরকান ৬৩ – ৬৪)।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

তাহাজত নামাজ পড়ার আগে অবশ্যই নামাজের জন্য নিয়ত করতে হবে। তবে নিয়তি শুধু আরবিতেই করতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই বাংলায়ও নিয়ত করতে পারেন। আমরা ইতোমধ্যেই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জানলাম। তাহাজ্জুদ নামাজের মত অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পালনের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত জানাও গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হয় তাই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত করার সময় দুই রাকাত নামাজের নিয়ত করতে হবে। এভাবে আপনি চাইলে ৪/৮/১২ রাকাত পড়তে পারেন।

তাহাজ্জুদ দুই-রাক’আত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ

☆☆☆ আরবি-উচ্চারন

نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ التَّهَجُّدِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আরবিতে বাংলা উচ্চারণ

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনার  এই পর্যায়ে দেখে নিন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আরবিতে এবং বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ;

☆☆☆ আরবি-উচ্চারন

نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ التَّهَجُّدِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল তাহাজ্জুদী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ

আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত প্রশ্ন করার সাথে অনেকেরই একটি কমন প্রশ্ন তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নিয়ে। তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ হলো ঘুম থেকে ওঠা। কোরআনের কিছু আয়াতে  তাহাজ্জুদ সম্পর্কে যে, রাতের কিছু অংশ ঘুমিয়ে থাকার পর উঠে নামাজ পড়া। অর্থাৎ তাহাজ্জুদের মসনুন সময় এশার  নামাজের পর লোকেরা ঘুমাবে। এরপর অর্ধেক রাতের পর উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়বে। আমাদের নবী করিম  (সাঃ) কখনো কখনো মধ্যরাতে আবার কখনো তার কিছুক্ষণ আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে  সূরা আলে ইমরান এর শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পাঠ করতেন। এরপর মেসওয়াক ও অজু করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন।

অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলো অর্ধ রাতের পরে। রাত্রের শেষ তৃতীয় অংশে তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার মোক্ষম সময় হলো রাত তিনটা থেকে শুরু হয় ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত থাকে। তবে যদি কারো ঘুম থেকে জেগে ওঠার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত ও বেতের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেওয়া জায়েজ। তবে তাহাজ্জুদ নামাজের পরিপূর্ণ মর্যাদা পেতে হলে রাত দুইটা থেকে তিনটার দিকে উঠে নামাজ আদায় করতে হবে।

মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

হযরত নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে পুরুষ মহিলাদের কোন আলাদা নিয়ম নেই। কেননা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হয় না বিধায় পুরুষের নিয়মে মহিলারা এবং মহিলাদের নিয়মে পুরুষরা এই তাহাজ্জুদ আদায় করতে পারবেন। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে একই।আজকের ব্লগের ওপরে তাহাজ্জত নামাজের নিয়ম উল্লেখিত রয়েছে এই নিয়ম অনুসরণ করে মহিলা এবং পুরুষ উভয়ই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারবেন। সর্বোপরি, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত পাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ এবং মহিলাদের কোনো ভিন্নতা নেই।

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল

প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ একটি নিয়মিত এবাদত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং সাহাবীদের তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার জন্য উৎসাহিত করতেন। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে সহিহ হাদিসে সুন্দরভাবে উল্লেখ করা আছে। রাতের শেষ ভাগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে হয়েছে, ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত ব্যয়কারী ও রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থী।’ (সূরা আলে ইমরান আয়াত ১৭)

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,’ আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে এটা তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব অচিরেই তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।'(সূরা বণী ইসরাইল আয়াত ৭৯)

আলেম ওলামাদের মতে, তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নতে গায়েরে মুয়াক্কাদা বা নফল। আমাদের প্রিয় নবী নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং তার উম্মতদেরকে তাহাজ্জুদ আদায় করার তাগিদ দিয়েছেন। তাহাজ্জত নামাজ হলো নফল এবাদত গুলোর মধ্য সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। এটি না পড়লে কোন গুনাহ নেই তবে পড়লে অনেক অনেক সোয়াব পাওয়া যায়।

তাহাজ্জুদ নামাজের আরবি নিয়ত

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত বাংলা এবং আরবীতে দুই ভাবেই করতে পারবেন। তবে আমাদের দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আরবিতেই নিয়ত করা হয় বেশি। তাই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনার এই পর্যায়ে আপনাদের তাহাজ্জুদ নামাজের আরবি নিয়ত জানিয়ে দিচ্ছি।

☆☆☆ আরবি-উচ্চারন

نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ التَّهَجُّدِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল তাহাজ্জুদী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

প্রশ্ন উত্তর

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার ফজিলত কি?

আল্লাহ তায়ালার অধিক সন্তুষ্টি লাভের আশায় ঈমানদার মুসলমানগণ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বান্দা-বান্দীগণ আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করেন। এছাড়াও তাহাজ্জত নামাজ মানুষের মন এবং নির্মল রাখে।বান্দাকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করে। তাহাজ্জুূদ নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ তা’আলা বিশেষভাবে পুরস্কৃত করবেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম কি কি?

তাহাজ্জত নামাজ আদায় করতে হয় দুই দুই রাকাত করে। তাহাজত নামাজে যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, রুকু ও সিজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে পড়তে হয়। তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা নেই। তবে আমাদের প্রিয় নবী বেশিরভাগ ৪/৮/১২ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন।

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল?

আলেম ওলামাদের মতে, তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নতে গায়েরে মুয়াক্কাদা বা নফল। আমাদের প্রিয় নবী নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং তার উম্মতদেরকে তাহাজ্জুদ আদায় করার তাগিদ দিয়েছেন। তাহাজ্জত নামাজ হলো নফল এবাদত গুলোর মধ্য সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। এটি না পড়লে কোন গুনাহ নেই তবে পড়লে অনেক অনেক সোয়াব পাওয়া যায়।

শেষ কথা-

বন্ধুরা আজকের ব্লগে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের ধারণা এখন পরিষ্কার। তবে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে যদি কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের সকল মতামত আমাদের জন্য মূল্যবান। লিখার মধ্যে কোন ত্রুটি থাকলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম জেনে নিন

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ  সম্পর্কে জেনে নিন

তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ
এশার নামাজ মোট কয় রাকাত ও কি কি? পড়ার নিয়ম এবং দোয়া
 

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️IMO চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো: সানাউল বারী পেশায় একজন ব্লগার এবং ইউটিউব ও ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।

Leave a Comment