মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ  সম্পর্কে জেনে নিন

5/5 - (5 votes)

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম-প্রতিটি মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ।নামাজ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার প্রতি ইবাদত গুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবাদত। হাদিসে বর্ণিত আছে,কিয়ামতের দিন সকল আমল গুলোর মধ্য থেকে সর্বপ্রথম বান্দা-বান্দীদের  সালাতের হিসাব নেওয়া হবে। প্রতিটি নারী পুরুষেরই নিয়মিত নামাজ আদায় ফরজ। পুরুষের ক্ষেত্রে জামাতে সালাত আদায় করতে হয় এবং মহিলাদেরকে বেশিরভাগ ঘরেই সালাত আদায় করতে হয় যার কারনে মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে অবগত থাকা অত্যন্ত জরুরি।

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়মসমূহ  সম্পর্কে জানা থাকলে নামাজের ভুল ত্রুটি হবে না। নারী পুরুষ নামাজ পড়া আবশ্যক হলেও মহিলা এবং পুরুষদের নামাজের নিয়মগুলো  ভিন্ন।তাই পুরুষদের সাথে নারীদের একই নিয়মে নামাজ পড়া যাবে না।

সম্মানিত মুসলমান পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। আমাদের অনেক মুসলিম বোনেরা রয়েছেন যারা নামাজের নিয়মগুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না যার কারনে সালাত আদায় করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল ত্রুটি হয়ে যায়।

তাই আজকের আর্টিকেলে মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়মসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করব ।মহিলাদের নামাজে কিভাবে দাঁড়াতে হবে,কিভাবে রুকু দিতে হবে, সিজদা দিতে হবে এই সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আজকের আর্টিকেলে জানতে পারবেন। নামাজ হচ্ছে মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক এবাদত।তাই কোন মহিলা যদি আমাদের সঠিক নিয়ম না জানেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে জেনে নিন।

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম

নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি। অনেক হাদিসে আছে যে,আপনি দুনিয়ায় সকল ভালো কাজের জন্য যখন জান্নাতে প্রবেশ করতে যাবেন তখন জান্নাতের দরজায় তালা থাকবে। যদি আপনার আমলে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা হয় তাহলে আপনি সেই চাবি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন। তাই নারী পুরুষ সকলের জন্যই নামাজ আদায় করা ফরজ। মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে অনেক মহিলা সঠিক ভাবে জানেন না।তাই মহিলাদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সমূহ সম্পর্কে নীচে দেওয়া হলো ;

নামাজের পূর্ব শর্ত

👉নামাজের প্রথমে নিজেকে পবিত্র রাখা আবশ্যক। আর পবিত্রতার পূর্ব শর্ত হলো ওযু করা। কাজেই নামাজ পড়ার আগে অজু অথবা গোসল নিতে হবে। অবশ্যই নামাজের আগে নিজের পোশাক পরিচ্ছেদ,  নামাজের জায়গা পবিত্র থাকতে হবে। ওযু করার পর নারীদের হাত পায়ের কব্জি,  মুখমন্ডল ছাড়া অন্যান্য সকল অঙ্গ ঢাকা থাকবে।

👉নামাজের পূর্ব শর্তগুলো মেনে মুখী হয়ে নামাজে দাঁড়াতে হবে।নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সাথে সরাসরি বান্দা বান্দির কথোপকথন হয় তাই অবশ্যই নামাজের সময় অত্যন্ত মনোযোগ দিতে হবে।যে স্থানে সিজদা দেওয়া হবে দুই চোখ সেখানে রাখতে হবে। এবং অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার পায়ের আঙ্গুলগুলো যেন ক্বিবলার দিকে সোজা থাকে।নামাজের দাঁড়ানোর সময় অবশ্যই দুই পা যতটা সম্ভব কাছাকাছি রাখতে হবে যাতে দুই পায়ের মধ্যাকর দূরত্ব কম থাকে।

তাকবির ই তাহরিমা

তাকবীর ই তাহারিমা বাধার আগে দুই হাত তাদের বরাবর সমান উচ্চতায় উঠাতে হবে। তাকবীরে তাহরিমা বাধার সময় অবশ্যই দুই হাতের আঙুল গুলোকে কাছেই রাখতে হবে যাতে মাঝে দূরত্ব না থাকে এবং চোখ দুটো যথারীতি সিজদার স্থানে থাকবে। তাকবীরে তাহরিমা বাধার সময় বলতে হবে ‘আল্লাহু আকবার।’

ক্বিয়াম করা

তাকবীরে তাহরিমার পর নারীদের কিয়াম পড়ার জন্য বুকের ওপর বাম হাত আগে দিয়ে তার ওপর ডান হাত রাখতে হবে। এবং হাতের আঙ্গুলগুলো অবশ্যই সমান থাকবে। পুরুষরা ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে বাম হাত পেচিয়ে রাখেন যেটা নারীরা করতে পারবেন না।

ক্বিয়াম করার দোয়া হচ্ছে, ‘সুবাহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারকাসমুকা, ওয়া তা’লা জাদ্দুকা  ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা।'(তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

এটি পাঠ করার পর, আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে। এবং সুরা ফাতিহা পড়া শেষ হলে তার সাথে যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। সূরা পড়া শেষ হলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে রুকুতে চলে যাবেন।

রুকুতে যেতে হবে রুকুতে এসে মহিলাদেরকে এমন ভাবে ঝুঁকতে হবে যাতে আঙুল দিয়ে হাটু স্পর্শ করা যায় এবং যখন হাটু স্পর্শ করবেন তখন অবশ্যই আঙুলগুলো যেন পাশাপাশি থাকে তা খেয়াল করবেন। রুকুতে থাকা অবস্থায় তিনবার পড়তে হবে ‘সুবাহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আজিম ‘(তিরমিজি, আবু দাউদ)

ক্বিয়ামাহ

রুকু থেকে সোজা দাঁড়িয়ে যাওয়াকে বলে ক্বিয়ামাহ।অর্থাৎ রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো এবং সিজদায় যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তকে ক্বিয়ামাহ বলে।

রুকু থেকে সোজা দাঁড়ানোর সময় বলবেন, ‘সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ।’

সিজদায় যেতে হবে

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়মসমূহ অনুযায়ী ক্বিয়ামাহ এরপর সিজদায় যেতে হয়। সিজদায় যাওয়ার  পর ভূমিতে দুই হাত  এবং সর্বশেষে কপাল সিজদা স্থানে রাখতে হবে। সিজার সময় চোখ থাকবে আপনার নাকের দিকে।নারীদের ক্ষেত্রে শরীরের অঙ্গগুলো যাতে মাটির কাছাকাছি থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন এবং আঙ্গুল গুলো কেবলামুখি করে রাখবেন।

সিজদায় গিয়ে ৩ বার পড়তে হবে, ‘সুবহানা রাব্বি আল আলা।’

তারপর আবার সোজা হয়ে বসতে হবে এবং পড়তে হবে ‘আল্লাহু আকবার ‘।পুনরায় আবার সিজদায় যেতে হবে তারপর আবার তিনবার পড়তে হবে, ‘সুবহানাল্লাহ রাব্বি অাল আলা’।আবার উঠে বসে ‘আল্লাহু আকবার’ পড়তে হবে।মনে রাখবেন অতি রাকাতে মোট দুইবার সেজদা করতে হবে প্রতিবারই উপরোক্ত দোয়াটি তিনবার করে পড়তে হবে ।

দুই সিজদার মাঝখানে অল্প সময়ের মধ্যে পড়বেন, ‘আল্লাহুম্মা মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনী, ওয়াল যুকনি। ‘(মুসলিম মিশকাত)

এইভাবে এক রাকাত শেষ করার পর হাত বাধা অবস্থায় আরেক রাকাত পুনরায় একই নিয়মে শুরু করবেন। সিজদা দেওয়া পর্যন্ত আগের নিয়ম অনুযায়ী আদায় করবেন তবে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদা দেওয়ার পর উঠে না দাড়িয়ে বসতে হবে।

শেষ পর্যায়

নামাজের শেষ পর্যায়ে বসে প্রথমে তাশাহুদ তারপর দুরুদ শরীফ এবং সর্বশেষে দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করতে হবে। এই দুয়ার তিনটি পাঠ করার পর ডানে এবং বামে ঘাড়ের দিকে তাকিয়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে  নামাজ শেষ করতে হবে।

সালাম ফেরানোর সময় ধীরস্থিরে নম্রতার সাথে প্রথমের ডান দিকে ঘুরে বলবেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।তারপর বামদিকে ঘুরে একই দোয়া বলতে হবে।

মহিলাদের নামাজ নিয়ে হাদিস

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে জানার সাথে সাথে মহিলাদের নামাজ নিয়ে যেসব হাদিস রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও ধারণা থাকা প্রয়োজন।মহিলাদের নামাজের বিষয়ে বহু সহিহ হাদিস রয়েছে।

১)হযরত উম্মে উমাইদ আস সাদী রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে একদিন বললেন, হে রাসুল! আমি আপনার পেছনে আদায় করিতে চাই। তখন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ভালো করেই জানি তুমি আমার পেছনে নামাজ আদায় করতে চাও। কিন্তু তোমার জন্য তোমার নিজ কক্ষে নামাজ আদায় করা অন্য কক্ষে নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম হবে।

আর তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় করা কওমের (এলাকার) মসজিদে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার কওমেরর (এলাকার) মসজিদে নামাজ আদায় করা আমার পেছনে নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম। এরপর তিনি তার অন্ধকার কুঠারিতে নামাজের জায়গা নির্ধারণ করেন। তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই নামাজ আদায় করেন। (মুসনাদে আহম্মদ; ৩৭/৪৫)

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন মহিলাদের নিজ কক্ষে নামাজ আদায় করা মসজিদে নামাজ পড়ার তুলনায় অতি উত্তম। আর নির্জন ও অভ্যন্তরীণ স্থানে নামাজ আদায় করা মাছ পড়ার থেকে উত্তম। (সহিহ হাদিস, আবু দাউদ ১/৩৮৩,মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩২৮)

২)হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  থেকে বর্ণিত, ওড়না বা চাদর ব্যতীত মহিলাদের নামাজ কবুল হবে না। (আবু দাউদ ১/৪২১ তিরমিজি ২/২১৫ মুসতাদরাকে হাকেম ১/২৫১)মহিলাদের পায়ের গোড়ালি ঢেকে রাখা না হলে নামাজ সিদ্ধ  হবে না। আর পুরুষদের পায়ের গোড়ালি খোলা রাখতে হবে।

৩)নামাজের জন্য পুরুষ আযান দিবে কিন্তু মহিলারা আযান দিতে পারবে না। এটা হল ফোকাহকেরামদের ইজমা। এর কারণ হলো মেয়েদের আওয়াজ একটা ফিতনা। অর্থাৎ ফোকাহকেরামদের ঐক্য মতে পুরুষদের  জামাতে মেয়েরা আজান এবং একামত  দেওয়া জায়েজ নেই।

৪)কোন মহিলা পুরুষদের ইমামতি করতে পারবে না। অন্যদিকে পুরুষরা নারী পুরুষ উভয়ের ইমামতি করতে পারবেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইমামতি করবে না। (ইমামে মাজাহ)

৫)পুরুষ ইমামতি করলে প্রথম কাতারের আগে একাকী দাঁড়াতে হবে(ওজর না থাকলে) । কিন্তু যদি মহিলা ইমাম হয় তাহলে তাকে মহিলাদের কাতারের মাঝখানে দাঁড়াতে হবে। হাদিসে বর্ণিত আছে যে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু  এবং উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু যখন মেয়েদের ফরজ সালাত অথবা তারাবিহ সালাতে   ইমামতি করতেন তখন তাদের মাঝখানে দাঁড়াতেন।

মহিলাদের নামাজের নিয়ম দলিল সহ

পুরুষদের জন্য জামাতে নামাজ আদায় করা উত্তম এবং নারীদের জন্য ঘরের অভ্যন্তরে  সালাত আদায় করা উত্তম। তবে মহিলারাও জামাতের সালাত আদায় করতে পারবেন। মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস এবং  কোরআনের বর্ণিত রয়েছে অনেক কথা। মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ পুরুষদের থেকে ভিন্ন। মহিলাদের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস বর্ণনা  করা হলো ;

১)সুনানে আবু দাউদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমামর রাদিয়াল্লাহু থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে যেখানে নবী  করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে বারণ করো না কিন্তু ঘরে নামাজ পড়াই তাদের জন্য উত্তম।”

২)সহীহ বুখারীতে হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু থেকে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু এবং তার মা-বাবা খালাকে নিয়ে জামাতে নামাজ পড়ান। আনাস রাদিয়াল্লাহু বলেন তিনি আমাকে তার ডান পাশে এবং মহিলাদেরকে আমাদের পিছে দাঁড় করান।

অর্থাৎ ইমাম মালিক হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু থেকে এই হাদিসটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে আনাস রাদিয়াল্লাহু বলেন আমি এতিম বালক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে ছফ করে দাড়াই আর মহিলারা আমাদের পেছনে ছফ করে দাঁড়ায়।

৩) ইমাম শারানী তার একটি গ্রন্থে বর্ণনা করেন করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালকদেরকে সামনে পুরুষদের সফ বানাতেন আর বালকদেরকে ছফ বানাতেন মহিলাদের সামনে।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, পুরুষদের সর্বোত্তম সফ হল একেবারে সামনে আর সবচেয়ে মন্দ সফ হলো একেবারে পেছনে। আর মহিলাদের সবচেয়ে ভালো সফ হলো একেবারে পেছনে আর তাদের সবচেয়ে মন্দ সফ হলো একেবারে  সামনে।

মেয়েদের নামাজের সিজদার নিয়ম

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহের মধ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সিজদা করার  নিয়ম।আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করার জন্য নামাজে কেবলামুখী হয়ে সিজদা করতে হয়। নামাজের সিজদা করেন ঠিকই কিন্তু তার সঠিক নিয়ম অনেকেই জানেনা।

নারীরা যখন নামাজে সিজদা করবেন তখন তাদের হাতের কুনই ভূমির সাথে মিলিয়ে রাখা সুন্নত। ইয়াজিদ ইবনে আবু হাবিব রাদিয়াল্লাহু বলেন, একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজরত দুই নারীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “যখন তোমরা সিজদা করবে  তখন তোমাদের শরীর জমিনের সাথে যেন মিলে যায়।নারীদের নিয়ম এক্ষেত্রে পুরুষের মতো নয়। (সুনানে আবু দাউদ ;৮০)”

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত, ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন সিজদা করার সময়  (অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ) সামঞ্জস্য রক্ষা কর এবং দের মধ্য কেউ যেন দুই হাত কুকুরের মত বিছিয়ে না দেয়। (সহীহ বুখারী ৭৮৪)’তবে কারো ওজর থাকলে কুনই বিছিয়ে সেজদা করতে পারে।

সিজদায় যাওয়ার  পর ভূমিতে দুই হাত  এবং সর্বশেষে কপাল সিজদা স্থানে রাখতে হবে। সিজার সময় চোখ থাকবে আপনার নাকের দিকে।নারীদের ক্ষেত্রে শরীরের অঙ্গগুলো যাতে মাটির কাছাকাছি থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন এবং আঙ্গুল গুলো কেবলামুখি করে রাখবেন।

মহিলাদের নামাজে পা রাখার নিয়ম

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে সঠিক  জানার জন্য নামাজে কিভাবে পা রাখতে হবে এই বিষয়টিও জানতে হবে। মহিলাদের নামাজে পা রাখার নিয়ম সম্পর্কে একটা হাদিস এসেছে। ইমাম আবু হানিফা রহ: এর অন্যতম অনুসারী ইমাম মুহাম্মদ রহ: বলেন, আমাদের নিকট পছন্দনীয় হলো মহিলারা নামাজে উভয়-পা একসাথে মিলিয়ে রাখবে। পুরুষের মতো এক পা দাড় করিয়ে রাখবে না। (কিতাবুল আসার,ইমাম মুহাম্মদ রহ: ১/৬০৯)

হযরত খালেদ বিন লজ্জাজ রহ:বলেন, মহিলাদেরকে আদেশ করা হতো যেন তারা নামাজে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের ওপর বসে এবং তারা যেন পুরুষদের মতো না বসে। মহিলাদের ক্ষেত্রে আবরণ যোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এমন করতে হয়। (মোসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা  ১/৩০৩,হাদিস নং ২৭৯৯)

নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ এবং পুরুষদের নামাজের নিয়মের মধ্য কিছুটা পার্থক্য থাকলেও নামাজের দোয়া সমূহ একই। নামাজে দাঁড়ানোর পর প্রথমেই জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ শুরু করার আগে জায়নামাজের  দোয়া পড়তে হবে।

দোয়াটি হলো-ইন্নি ওয়াজ্জাহাতু ওয়াজিহিয়া লিল্লাযী ফাত্বরসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বঅ হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন।

এরপর নামাজের নিয়ত করতে হবে (নামাজের ওয়াক্ত, রাকাত অনুযায়ী )।

তারপর সানা পাঠ করতে হবে। সোনা পাঠ করার পর আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে সুরা ফাতিহা পড়তে হবে। সূরা ফাতিহা পড়া শেষ হলে তার সাথে আরো একটি সূরা যোগ করে পড়তে হবে। এরপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবিহ পড়ে রুকু থেকে সোজা দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। দাঁড়ানোর সময় বলতে হবে সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা।রাব্বানা লাকাল হামদ।

এরপর সিজদায় গিয়ে পড়তে হবে সুবাহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আলা তিনবার। দুই সিজদার মাঝামাঝি সময়ে পড়তে হবে আল্লাহুম্মা মাগফিরলি ওয়ার হামনি ওয়ার যুক্কনী।এভাবে এক রাকাত নামাজ শেষ করার পর পুনরায় আবার আরেক রাকাতের তাকবীরে তাহরিমা বাধা অবস্থায় একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়াতু, দুরুদ শরীফ  দোয়ায় মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে।

শেষ কথা –

আমরা এতক্ষণ মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না কিন্তু অনেকেই দ্বিধাবোধ করেন এটি কারো সাথে শেয়ার করতে।তাই আজকে আপনাদের সুবিধার্থে মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়  তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনারা উপকৃত হবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি ।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম জেনে নিন

 

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

  • ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো: সানাউল বারী পেশায় একজন ব্লগার এবং ইউটিউব ও ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।

Leave a Comment