কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো –ক্রেডিট কার্ড দিনে দিনে বিশ্বব্যাপি একটি জনপ্রিয় লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে পরিণত হচ্ছে। এটি এমন একটি বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক কার্ড যা ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ি ইস্যু করে থাকে। গ্রাহক এই কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা, ভ্রমণ, হোটেল বুকিং সুবিধা সহ আরো অনেক কিছু করতে ও পেতে পারেন।
এই ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা গুলো পর্যায়ক্রমে নগদ লেনদেনের পরিমাণকে কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে নগদ বহণের যে ঝুকি তা অনেক আংশে কমে যাচ্ছে। লেনদেন হয়ে যাচ্ছে আরো সহজ এবং আরো দ্রুত। যা শুধু দেশের মধ্যে সিমাবদ্ধ থাকছে না। অর্থ লেনদেন হচ্ছে বিশ্ব ব্যাপি কার্ডের মাধ্যমেই।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও Credit Card খুবই জনপ্রিয়। কম বেশি প্রায় সব ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে। এখানে আপনি হয়তো এমনই কোনো এক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নিবেন বলে ভাবছেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো।
Also Read
আজকের এই পোস্টে আমি আলোচনা করবো কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো তা নিয়ে। কিন্তু তার আগে কিছু সাধারণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে যা আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় ক্রেডিট কার্ডটি খুজে পেতে সাহায্য করবে।
ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন কেন?
আস্তে আস্তে মানুষ অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম এর সাথে জড়িয়ে পড়ছে তার সাথে সাথে ক্রেডিট কার্ড এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমারা অনেক প্রয়োজন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকি।যেমন-
১।ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনারা অনলাইন ভিত্তিক লেনদেন করতে পারবেন।
২। এছাড়াও অনলাইন থেকেই বিভিন্ন কেনাকাটা বা হোটেলের রুম বুকিং, ভ্রমণ খরচ সহ ইত্যাদি সকল খরচই আপনারা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।
৩।ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে শুধু দেশে না বিদেশেও আপনারা টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
৪।ক্রেডিট কার্ড আসার পর থেকে নগদ লেনদেন এর চাহিদা অনেকটা কমে গিয়েছে যার ফলে আমাদের নগদ লেনদেনের ঝুঁকিও কমে গিয়েছে।
৫।অনেকগুলো টাকার সাথে না নিয়ে আমরা শুধুমাত্র একটি কার্ড নিয়ে চলাচল করতে পারি, সেই কার্ডটি হলো ক্রেডিট কার্ড।
৬।ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য, দেশের বাহিরের কোন অনলাইন শপিং থেকে শপিং করার মত সুবিধা।
দেশের বাহিরে ও টাকা লেনদেনের সুবিধাসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমান সময়ে ক্রেডিট কার্ড অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে শীর্ষ কয়েকটি ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক
যেমনটা বলেছি, একটি ভালো আছে ক্রেডিট কার্ড বাছাই করা মটেও সহজ কাজ নয়, হোক তা বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও। এটি মূলত নির্ভর করে আপনার উপর। আপনি যদি বেস্ট একটি ক্রেডিট কার্ড বাছাই করতে চান তবে আপনাকে উপরের প্রসেস গুলো অনুসরণ করতে হবে।
এখানে আমি কয়েকটি ক্রেডিট কার্ডের কথা বলবো যে ক্রেডিট কার্ড গুলো বাংলাদেশে শীর্ষ ক্রেডিট কার্ড গুলোর মধ্যে কয়েকটি। তবে এ কার্ড গুলো হয়তো আপনার লাইফস্টাইলের সাথে বেস্ট কার্ড নাও হতে পারে। চলুন সেগুলো নিচে দেখে নেয়া যাক।
১।EBL Credit Card: যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন বা রেগুলার ভ্রমণ করে থাকেন তাদের জন্য ইস্টার্ণ ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড একটি ভালো অপশন হতে পারে। আপনি, তাদের EBL SKYLOUNGE ব্যবহার করতে পারেন বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে। তবে এর জন্য আপনাকে একজন প্লাটিনাম কার্ড হোল্ডার হতে হবে।
এখানে আপনি পাবেন APR রেট 27.00%, 45 দিনের একটি গ্রেস পিরিওড। এছাড়া থাকছে Installment facilities,
Supplementary Card সুবিধা, এবং Renewal একদম ফ্রি ( যদি বছরে আঠারোটি লেনদেন করে থাকেন)।
২।DBBL Credit Card: ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশে প্রথম ব্যাংকিংয়ে পুরোপুরি অটোমেটেড সিস্টেম চালু করেছে। পুরো দেশে এর একটি বিশাল ব্যাপ্তি রয়েছে, এমনকি দূর্গম এরিয়া গুলোতেও তাদের সেবা পাওয়া যায়। ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রেও তারা অনেক অফার দিয়ে থাকে।
এখানে আপনি পাবেন APR রেট 15.00%, 50 দিনের একটি গ্রেস পিরিওড। এছাড়া থাকছে ফ্রি Supplementary Card সুবিধা, এবং Renewal -ও একদম ফ্রি।
৩।City Bank Amex Credit Card: এই ব্যাংক সবসময় তাদের গ্রাহকদের নতুন কিছু দেয়ার চেষ্টা করে। খুব কমই ব্যাংক আছে যারা তাদের গ্রাহকদের এই এমেক্স কার্ডটি ইস্যু করে থাকে। এই কার্ডটির মাধ্যমে ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে থাকে।
এখানে আপনি পাবেন APR রেট 27.00%, 45 দিনের একটি গ্রেস পিরিওড। এছাড়া থাকছে ফ্রি Supplementary Card সুবিধা, এবং Renewal -ও একদম ফ্রি।
৪।MTB Credit Card: মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক বর্তমানে এই দেশে মুটামুটি একটি সফল ব্যাংক। তারাও তাদের গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডে অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে।
এখানে আপনি পাবেন APR রেট 25.00% বা তার একটু বেশি, 45 দিনের একটি গ্রেস পিরিওড। এছাড়া থাকছে ফ্রি Supplementary Card সুবিধা। তবে এর Renewal ফি ১০০০/- থেকে ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোন কোন ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে
সাধারনত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সকল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড বহুল জনপ্রিয় একটি লেনদেনের মাধ্যম। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনারা দেশের বাহির থেকে কোন কেনাকাটা অথবা হোটেল বুকিং শহর যাবতীয় ব্যাংকিং লেনদেন করতে পারবেন।
নগদ ক্যাশ এর ঝামেলা কম থাকার কারণে ব্যবহারকারীরা ক্রেডিট কার্ড থেকে অনেক বেশি পছন্দ করে। কোন একটি নির্দিষ্ট ক্রেডিট কার্ড কে সবথেকে বেস্ট হিসেবে সিলেকশন করার কোনো মাধ্যম নেই। তবে আপনার কি কাজের জন্য ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজন তার উপরে ভিত্তি করে আপনারা একটি কার্ড সিলেক্ট করতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ডের ধরন কি কি?
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাধারণত আমরা ক্রেডিট কার্ডকে ধরন হিসেবে দুই ভাগে বিভক্ত করতে পারি
১) ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড।
২) সাধারণ ক্রেডিট কার্ড।
নিচে আমরা এই দুই ধরনের ক্রেডিট কার্ড নিয়ে আলাদা আলাদা আলোচনা করা হলো-
১।ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড
ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড গুলোতে আপনারা সুদ মুক্ত ভাবে লেনদেন করতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা সুদ এর সাথে জড়িত থাকতে চান না তারা চাইলে ইসলামিক শরিয়া ভিত্তিক যে ক্রেডিট কার্ড গুলো আছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিং গুলো আমরা পুরোপুরি সুদ মুক্ত বলতে পারিনা তবে তারা যথাসম্ভব ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক পরিচালনা করার চেষ্টা করে। অন্যান্য সাধারণ ব্যাংকিং এর থেকে ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সিস্টেম একটু আলাদা। বর্তমান বাংলাদেশের ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড গুলোর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড।
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ
ইসলামী ব্যাংক সাধারণত শরিয়াভিত্তিক ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আপনারা যারা সুদ মুক্ত ভাবে লেনদেন করবেন এবং একটি ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার চাচ্ছেন তারা ইসলামী ব্যাংকের “ইসলামিক ব্যাংক খিদমাহ ক্রেডিট কার্ড” নিতে পারেন।
২।সাধারণ ক্রেডিট কার্ড
সাধারণত বাংলাদেশ যে সকল ক্রেডিট কার্ড গুলো জনপ্রিয় এবং জনপ্রিয় কিছু ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
-DBBL Credit Card
-EBL Credit Card
-MTB Credit Card
-City Bank Amex Credit Card
এছাড়াও বাংলাদেশে অনেক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান আছে যারা ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে। প্রথমে আপনারা সঠিকভাবে যাচাই করে তারপরে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করবেন। এছাড়াও আপনারা ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে অবশ্যই ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে ক্রেডিট কার্ডের বাৎসরিক চার্জ এবং ইন্টারেস্ট সহ যত ধরনের চার্জ আছে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন।
কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো তা বাছাই করুন
যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড নেয়ার কথা ভাবেন তবে আপনার জন্য হয়তো প্রচুর অপশন খোলা আছে। আলাদা আলাদা ক্রেডিট কার্ডের আলাদা আলাদা সুবিধা। তাই এটা খুবই কঠিন যে কোনো একটি ক্রেডিট কার্ডকে বেস্ট হিসেবে চয়েস করা। আপনার প্রয়োজন বা আপনার লাইফস্টাইল বলে দিবে আপনার জন্য কোন ক্রেডিট কার্ডটি দরকার।
তাই আপনার কার্ডটি সংগ্রহ করার আগে আপনাকে কিছু বিষয় আগে ভাবতে হবে। যদি তা না করেন তবে হয়তো ভালো ক্রেডিট কার্ডটি আপনার পাওয়া হবে না। এখন আসুন দেখি কি কি বিষয় আপনার ভাবা উচিত আপনার ক্রেডিট কার্ডটি সংগ্রহ করার আগে।
যেভাবে বাছাই করবেন কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো
এখানে চারটি নিয়মের দেওয়া হলো। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ি Credit Card বাছাই করতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ড বাছাই হয়ে গেলে আপনি উক্ত ব্যাংকের শাখায় ভিজিট করে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন, অথবা তাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং থাকলে তার মাধ্যমেও আপনি কার্ডের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
১।আপনার ক্রেডিট কার্ড নেয়ার কারণ বের করুন
আপনার ক্রেডিট কার্ড নেয়ার পেছনে নিশ্চই কোনো কারণ আছে। সেই কারণটি প্রথমে খুজে নিন। হতে পারে আপনার ক্রেডিট কার্ড নেয়ার কারণ অনলাইনে শপিং করা বা কেনাকাটার ক্ষেত্রে লেনদেন আরো সহজ করা অথবা ভ্রমনও একটি কারণ হতে পারে।
২।আপনার কারণের সাথে সংগতিপূর্ণ ক্রেডিট কার্ডের লিস্ট করুন
এমন অনেক ক্রেডিট কার্ড প্রোভাইডার আছে যারা কোনো নির্দিষ্ট খরচের উপর বিভিন্ন সুবিধা অফার করে থাকে। যেমন ধরুন সুপারস্টোর থেকে কেনাকাটা করলে ক্রেডিট কার্ডধারী গ্রাহকদের প্রায় ডিসকাউন্ট দেয়া হয়।
আবার ট্রাভেল পেকেজে ক্রেডিট কার্ড থেকে পে করলে থাকে আকর্ষণীয় সব ছাড়। তাই ক্রেডিট কার্ড বাছাই করার সময় আপনার পারপাসকে গুরুত্ব দিন। দেখুন কোন কোন ক্রেডিট কার্ড আপনার প্রয়োজনের উপর বিশেষ অফার দিচ্ছে। সে অনুযায়ি একটি লিস্ট করে ফেলুন।
৩।আপনার ক্রেডিট কার্ড নেয়ার যোগ্যতা দেখে লিস্ট সর্ট করুন
ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড দেয়ার আগে তাদের যোগ্যতা যাচাই করে। গ্রাহকের প্রফেশন দেখা হয়, তার স্যালারি দেখা হয় এবং দেখা হয় আরো বেশ কিছু বিষয়। বিশেষ করে আপনার কার্ড লিমিট ঠিক করার জন্য ব্যাংকের এই ইনফর্মেশন দরকার হবে।
তাই একটি ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য ঐ ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ফুলফিল করতে পারছেন কিনা তা দেখুন।আজকাল কমবেশি সব ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। আপনি হয়তো তাদের ক্রেডিট কার্ডের জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে তা অনলাইনেই জানতে পারবেন।
জেনে আপনার লিস্টে আপনার জন্য এলিজেবল কার্ড গুলো বাছাই করুন। অন্য গুলো বাদ দিয়ে দিন।
৪।লিস্টের সেরা কার্ডটি বেঁছে নিন
আপনার লিস্ট করা যদি সম্পন্ন হয় তাহলে এখন আপনার লিস্টে থাকা সমস্ত কার্ড গুলির মধ্যে সেরা কার্ড কোনটি তা বাছাই করে নিন। এর অফার, বাৎসরিক চার্জ, ইন্টারেস্ট রেট এবং আরো যেসকল হিডেন চার্জ আছে তা পর্যালোচনা বা পার্থক্য করে দেখে নিন কোন কার্ডটি আপনার জন্য সেরা।
ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করবেন কিভাবে
ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রথমে আপনারা যাচাই করে আপনার জন্য বেস্ট কার্ডটি সিলেক্ট করবেন এর পরে ওই কার্ডের প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে এর সকল সুযোগ সুবিধা গুলো জেনে নিবেন এবং তাদের মাধ্যমেই আপনারা ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অথবা যে সকল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান করে থাকে আপনারা চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের কাছে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। ক্রেডিট কার্ড রেডি হওয়ার পরে আপনারা উক্ত ব্যাংকে ভিজিট করে আপনার কার্ডটি সংগ্রহ করে নিবেন।
ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে কি কি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিবেন
ক্রেডিট কার্ড নেয়ার আগে কিছু ব্যাপারে সঠিক তথ্য নিয়ে তবেই কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নেবেন সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে আপনার আয়ের উপর নির্ভর করে। এছাড়া ব্যাংক ছাড়াও বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে। কোন ব্যাংকের বা প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কার্ড আপনার নেয়া উচিত সে বিষয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা থাকছে। তো চলুন জেনে নেই ক্রেডিট কার্ড নেয়ার আগে কী কী বিষয় ভেবে দেখা উচিত আপনার।
১।ব্যাংকের অবস্থা
দেশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে বর্তমানে। তবে সব ব্যাংক নিজেদেরকে এখনও সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। কাজেই নতুন কিংবা কম পরিচিত ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট কার্ড নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। এসব ব্যাংক হয়তো অন্যান্য বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে অনেক আকর্ষণীয় সুবিধা দিয়ে ক্রেডিট কার্ড দেয়ার প্রস্তাব দেবে। তবে এসব ব্যাংকের হিডেন চার্জ বা অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা থাকার সম্ভাবনা থাকে বেশি। কাজেই ক্রেডিট কার্ড নিলে প্রতিষ্ঠিত ও সুনাম রয়েছে এমন ব্যাংককেই গুরুত্ব দেয়া উচিত।
২।ব্যাংকের শাখা ও গ্রাহক সেবা
ক্রেডিট কার্ড নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের শাখা বা গ্রাহক সেবার মান সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত। যেসব ব্যাংকের সারা দেশেই শাখা রয়েছে এবং আপনার অবস্থানের খুব কাছেই তাদের সেবা পাওয়া যায় এমন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নেয়া উত্তম। কেননা টাকা জমা কিংবা বিল পেমেন্টের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এছাড়া গ্রাহক সেবার মান উন্নত কিনা এই ব্যাপারটিও জেনে নেয়া উচিত। কেননা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে যে কোন সমস্যায় দ্রুত সমাধান পাওয়া যায় তাহলে।
৩।হিডেন চার্জ ও বার্ষিক চার্জ
অনেক সময় ক্রেডিট কার্ডের পিছনে যুক্ত থাকে নানা রকম হিডেন চার্জ যা না জেনেই অনেকে ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ফেলেন। এসব হিডেন চার্জ আপনার খরচ বাড়াবে। অনেক সময় ক্রেডিট কার্ডের সাথে বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স ফি যুক্ত থাকে। এসব ব্যাপারে জেনে ও বুঝে নিয়ে এরপরই ক্রেডিট কার্ড নেবার ব্যাংক পছন্দ করা উচিত। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ডের জন্য বার্ষিক একটি ফি নিয়ে থাকে। এই ফি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে কম ফি ও ভালো সেবা দেয় এমন ব্যাংক পছন্দ করা উত্তম। এছাড়া হিডেন চার্জের ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে হবে।
৪।সুদের হার
ক্রেডিট কার্ডে সুদের হার একটি বড় ব্যাপার। প্রতিটি ব্যাংকে কাছাকাছি সুদের হার থাকলেও বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট ও ক্রেডিটের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শতাংশে ব্যাংকগুলো সুদ নিয়ে থাকে। আর তাই যে ব্যাংকে সবথেকে কম সুদে ও চার্জে সবথেকে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে সেরকম ব্যাংক পছন্দ করাই ভালো। অনেক ব্যাংকেই নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে বিভিন্ন চার্জ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এসব ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দেখতে পারেন।
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার
অনেকেই নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং বিদেশেও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন কেনাকাটা বা অন্যান্য কাজে। এসব ক্ষেত্রে দেখে নেয়া উচিত যে ব্যাংক আপনাকে বিদেশে ব্যবহার করার জন্য বাড়তি কোন চার্জ করছে কিনা। যে কার্ডে বিদেশে কেনাকাটার জন্য বাড়তি চার্জ নেই এমন কার্ড নেয়া উচিত। এতে করে অনেক চার্জ থেকে বাঁচা সম্ভব।
ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নাকি প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কার্ড ভালো
শুধু ব্যাংক নয়, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে। ব্যাংক থেকে এরা সাধারণত বেশি সুবিধা দিতে চেষ্টা করলেও ব্যাংকের বেশ কিছু সুবিধা তাদের থেকে পাবেন না। যেমন ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি সারা দেশে অসংখ্য শাখা পাবেন বা অনেক ভালো গ্রাহক সেবা পাবেন। কিন্তু ব্যাংক ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কার্ড নিলে এসব পাবেন না। সুতরাং এগুলো বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
সুতরাং ক্রেডিট কার্ড নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য ভালো সেটি নির্ধারণ করতে হবে আপনাকেই। প্রত্যেকের প্রয়োজন ও চাহিদা ভিন্ন হওয়ায় একজনের পছন্দ আরেকজনের সঙ্গে না মেলাটাই স্বাভাবিক। কাজেই ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রেখে তবেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১।বর্তমান বাংলাদেশের কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে কত সুদ?
উত্তরঃ শীর্ষ ক্রেডিট কার্ড ব্যাংকগুলো সুদের হার৷
-এইচডিএফসি ব্যাংক 1.99% – 3.60%
-সিটি ব্যাংক 2.50% – 3.25%
-স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক 3.49% – 3.49%
-এইচএসবিসি ব্যাংক 2.49% – 3.35%
২।কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি?
উত্তরঃসেপ্টেম্বর, 2022 পর্যন্ত, HDFC ব্যাংকের প্রায় 1.70 কোটিরও বেশি সক্রিয় ক্রেডিট কার্ড রয়েছে এবং এইভাবে এটিকে দেশের বৃহত্তম কার্ড প্রদানকারী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
৩।ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ড হল একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড, যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থার ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। এই কার্ডের বাহক পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারেন এবং মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। সাধারণত স্থানীয় ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়ন ভোক্তাদের কাছে এই কার্ডগুলি ইস্যু করে থাকে।
৪।চারটি প্রধান ক্রেডিট কার্ড কি কি?
উত্তরঃমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চারটি প্রধান ক্রেডিট কার্ড নেটওয়ার্ক হল ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস এবং ডিসকভার । চারটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশে ব্যাপকভাবে গৃহীত, আপনার সেরা বাজি হতে পারে ভিসা বা মাস্টারকার্ড, কারণ কিছু দেশে Amex এবং Discover গ্রহণযোগ্যতা পিছিয়ে আছে।
৫।ইবিএল ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার উপায়?
উত্তরঃকার্ডধারী যেকোন সময় কার্ডের ব্যবহার বন্ধ করে দিতে পারেন এবং ব্যাঙ্ককে লিখিত নোটিশ দিয়ে এবং অর্ধেক কাটা সমস্ত কার্ড ফেরত দিয়ে বা EBL যোগাযোগ কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে কার্ড অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পারেন৷
৬।কোন সরকারি ব্যাংক সর্বোচ্চ সুদের হার দেয়?
উত্তরঃনির্ধারিত প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে, বন্ধন ব্যাঙ্ক 500 দিনের মেয়াদের জন্য 7.85% pa পর্যন্ত সেরা FD সুদের হার অফার করে। তফসিলি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে, 555 দিনের মেয়াদের জন্য পাঞ্জাব ও সিন্ধু ব্যাঙ্ক 7.35% পর্যন্ত সর্বোচ্চ FD হার অফার করে।
৭।বাংলাদেশে সুদের হার কত?
উত্তরঃসাম্প্রতিক প্রতিবেদনে, বাংলাদেশ স্বল্পমেয়াদী সুদের হার: মাসের গড়: বাংলাদেশ: ট্রেজারি বিলের হার: 91 দিনের মে 2023-এ 6.63% প্রতি রিপোর্ট করা হয়েছে। নগদ হার (পলিসি রেট: মাস শেষ: রেপো রেট: 1 থেকে 3 দিন) জুন 2023-এ 6.00% নির্ধারণ করা হয়েছিল।
৮।ক্রেডিট কার্ড ভালো নাকি খারাপ?
উত্তর -দিনের শেষে, একটি ক্রেডিট কার্ড পাওয়া ক্রেডিট এবং আর্থিক কেনাকাটা তৈরি করার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে তবে এটি আপনার ক্রেডিট স্কোরকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এবং ঋণের কারণ হতে পারে – এটি শেষ পর্যন্ত আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।
শেষকথা
কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো এটা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় তবে আমরা কিছুটা ধারণা দিয়েছি যাতে আপনারা খুব সহজেই আপনার জন্য বেস্ট ক্রেডিট কার্ডটি বাছাই করতে পারেন।
তাই ক্রেডিট কার্ড নেয়ার আগে আপনার সবকিছু পর্যালোচনা করে নিন। এতে করে আপনি একটি ভালো ক্রেডিট কার্ড খুজে পাবেন যা আপনার জন্য সুবিধাজনক হবে।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-
প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নাম্বার জেনে নিন-২০২৪ পূবালী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।