কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত

4.3/5 - (6 votes)

খাবারে বিশেষত্ব আনতে রান্নায় কিসমিস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।কিসমিস শুধুমাত্র রান্নায় ব্যবহৃত হয় এমনটা নয় অনেকে শুকনো কিসমিস এমনিতেও খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু এই কিসমিস রান্নায় ব্যবহার কিংবা এমনিতে খাওয়া ছাড়াও কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন।বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেলে ভরপুর এই কিসমিস। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ফলেও শরীরে এই ভিটামিন এবং মিনারেল প্রবেশ করবে। ভিটামিন এবং মিনারেলের পাশাপাশি কিসমিসে রয়েছে ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলের পুরো আলোচনা জুড়েই থাকবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে খুঁটিনাটি অনেক তথ্য।কাজেই আজকের আর্টিকেলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে সাথে থাকুন।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

একটি স্বাস্থ্য গুণ সম্পূর্ণ খাবার হলো কিসমিস। শুকনো কিসমিস চিবিয়ে খেলেও উপকার তবে তার চেয়েও বেশি উপকার পাওয়া যাবে যদি কিসমিস ভেজানো পানি পান করা হয়।কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি দূর হওয়ার পাশাপাশি রক্ত লাল কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন আপনি যদি ভেজানো পানি পান করেন তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি সকল সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।একটি বিশেষ নিয়মে আপনি কিসমিস ভেজানো পানি পান করতে পারেন। যেমন:

👉সারারাত কয়েকটি কিসমিস নিয়ে এক গ্লাস পানির মধ্যে রাখুন। এতে করে কিসমিসের পুষ্টি উপাদান সহজেই পানিতে দ্রবনীয় হয়ে যাবে।

👉সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই কিসমিস ভেজানো পান করুন। এই পানি পান করার ফলে শরীর সহজেই কিসমিসের গুনাগুন শোষণ করে নিতে পারবে।

👉অবশ্যই প্রতিদিন খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে কিসমিসের গুনাগুন গুলোর সহজেই শরীর গ্রহণ করতে পারবে।

👉কিসমিস ভেজানো পানির সম্পূর্ণ গুনাগুন পেতে হলে সপ্তাহে অন্তত চার দিন কিসমিস ভেজানো পানি পান করতে হবে। এতে করে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে। বিশেষ করে যারা প্রায়ই সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এটি খুবই কার্যকরী হবে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি জানা থাকে তাহলে আপনি চাইবেন নিয়মিত কিসমিস ভেজানো পানি পান করতে। শুকনো কিসমিস পুষ্টিগুণে ভরপুর এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু এর পুষ্টিগুণ আরো অধিক মাত্রায় বেড়ে যাবে যখন এই কিসমিস ভেজানো আপনি পান করবেন। এ পর্যায়ে আমরা কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। চলুন দেখি নেই কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি?

আয়রনের উৎস

কিসমিস কে আয়রনের খুব একটি ভালো উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আয়রনের অভাবজনিত যারা ভোগে থাকে যেমন অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তস্বল্পতা কমাতে কিসমিস ভেজানো পানি পান করা খুবই উপকারী। ভেজানো কিসমিসে আয়রনের পরিমান থাকে শুকনো কিসমিসের তুলনায় অনেক বেশি। তাই আয়রনের ভালো উৎস পাবেন ভেজানো কিসমিসে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

ভেজানো কিসমিসের উত্তম একটি উপকারিতা হলো এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটি হৃদপিণ্ডকেও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ভেজানো কিসমিসের রয়েছে পটাশিয়াম যা মানুষের হৃদপিন্ডের সুস্থতার জন্য কার্যকারী খনিজ। যারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা নিয়মিত ভেজানো খেতে পারেন।

দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করে

ভেজানো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সুদূরপ্রসারী। অনেকেই বাড়তি ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। তাদের জন্য একটি উত্তম কৌশল হলো প্রতিদিন ভেজানো কিসমিস পানি পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।কিসমিস খাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকবে এবং ক্ষুধা কম লাগবে এতে করে ওজনও হ্রাস পাবে।

হজমশক্তি উন্নত করে 

হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো খুবই কার্যকরী। আর এই ফাইবারের বড় একটি অংশ পাওয়া যায় ভেজানো কিসমিসে। তাই হজমশক্তিকে উন্নত করতে ভেজানো কিসমিস খেতে পারেন।

হাড়কে মজবুত করে

হারকে মজবুত করতে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি খুব জরুরী। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে এই ভেজানো কিসমিস একটি। ভেজানো কিসমিস খেলে ক্যালসিয়ামের ভালো একটি উৎস পেতে পারেন। তাই আর কে শক্ত মজবুত রাখতে ভেজানো কিসমিস একটি উত্তম খাবার।

ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে

ত্বককে উজ্জ্বল এবং মসৃণ রাখতে কিসমিসে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই কার্যকরী। ভেজানো কিসমিস আরো বেশি ত্বকের জন্য ভেজানো কিসমিসে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ থাকে বেশি যার কারণে এটি ত্বককে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং আদ্রতা ধরে রাখতে নিয়মিত ভেজানো কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য কিসমিস অনেক বেশি উপকারী। কিসমিসের রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ যা বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেস কমাতে এবং বার্ধক্য জনিত দৃষ্টি সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আমরাই তো মধ্যেই জেনে গেছি।তবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতার তুলনায় এর অপকারিতার সংখ্যা খুবই কম। এই পর্যায়ে চলুন দেখে নেই কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি:

উপকারিতা

👉কিসমিস রয়েছি প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি এতে থাকা পটাশিয়াম হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখার জন্য সাহায্য করে।

👉কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।এতে করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভোগেন তাদের রক্ত কণিকা তৈরি হতে সাহায্য করে।

👉কিসমিস ভেজানো পানি খালি পেটে পান করলে তা হজম শক্তি উন্নত করে।

👉কিসমিস ভিজিয়ে যদি আপনি নিয়মিত সেই পানি পান করেন তাহলে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে।

👉যারা কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যায় ভুগছেন প্রতিদিন খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেলে কাঠিন্যের সমস্যা চলে যাবে।

👉ভেজানো কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ফ্রী রেডিকেলের ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

অপকারিতা

👉যাদের শরীরের ওজন বেশি তাদের জন্য কিসমিস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।অতিরিক্ত শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

👉ডায়াবেটিকস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিসমিস খেলে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিকস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

👉যাদের অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

👉এলার্জেটিক সমস্যার ক্ষেত্রে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে।

👉শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে করে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ইতোমধ্যেই আমরা অনেক তথ্য জেনেছি।তবে আপনি কি জানেন গর্ভাবস্থায় কিসমিস খেলে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে কতখানি উপকারী হতে পারে? এই পর্যায়ে গর্ভাবস্থায় কিসমিস উপকারিতা গুলো দেখে নিন-

👉কিশমিশে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।

👉কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, আয়রন এবং পটাশিয়াম যা একজন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। এছাড়াও ফাইবারের একটি ভালো উৎস হচ্ছে কিসমিস।

👉গর্ভবতী মায়েদের হজম শক্তি উন্নত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে কাজ করে কিসমিস।

👉গর্ভবতী মায়েদের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে কিসমিস। কেননা কিসমিসে এনার্জি একটি ভালো অংশ পাওয়া যায়।

👉একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় যদি কিসমিস অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে সে এতে থাকা আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানগুলো গ্রহণ করতে পারবে।

কিসমিসের ক্ষতিকর দিক

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানলাম। নিঃসন্দেহে কিসমিস একটি অত্যন্ত উপকারী খাবার। কিন্তু তবুও এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে এই সব ক্ষতিকর দিক গুলো দেখা দিতে পারে। যেমন-

*অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে।

*অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে পাতলা পায়খানা কিংবা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

*আপনার যদি বমি বমি ভাব হয় কিংবা বমি হয় তাহলে তার জন্য দায়ী হতে পারে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া।

*কিসমিস বেশি খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা হতে পারে।

*শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে অতিরিক্ত কিসমিস খেলে।

কিসমিস খেলে কি মোটা হয়

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তবে অনেকই মনে করেন কিসমিস খেলে ওজন কমে আবার কেউ কেউ মনে করেন কিসমিস খেলে ওজন বাড়তে পারে। তবে কিসমিস খেলে মোটা হয় কিনা কিংবা ওজন বাড়ে কিনা সেটা একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্যকর পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে।

কিসমিসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি এবং ক্যালরি যা খুব দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন এক মুঠো করে কিসমিস নিয়ে নিয়মিত খান আপনার পক্ষে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে। একজন ব্যক্তির ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে ৫০০ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হয় যেটি আপনি মাত্র ১০০ গ্রাম কিসমিসের মধ্যেই পেয়ে যাবেন। মাত্র ১০০ গ্রাম কিসমিসেই রয়েছে ২৯৯ গ্রাম যা দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।কাজেই আপনার যদি নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস থাকে এবং সেটা বেশি পরিমাণে তাহলে আপনি খুব দ্রুত মোটা হয়ে যাবেন।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

নিঃসন্দেহে কিসমিস খুবই উপকারী ড্রাই ফুডস এর মধ্যে একটি। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ফাইবার, আইরন, পটাশিয়াম, এবং ক্যালসিয়ামের মতো উপকারী কি উপাদান। কিন্তু প্রতিদিন যদি পরিমাণের বেশি কিসমিস খাওয়া হয় তাহলে তা শরীরে ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিসমিসের মধ্যে এইসব পুষ্টি উপাদানের বাইরেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা এবং ক্যালরি যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

তাই কিসমিসের উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন পরিমাণ মতো খেতে হবে যেন তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ না হয়। অর্থাৎ আপনি যদি দিনে ২৫- ৫০ গ্রাম কিসমিস খান তাহলে আপনার শরীরে তা উপকারী হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু এর বেশি কিসমিস খেলে এতে থাকা সুগার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেবে যা বিশেষ করে ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য বেশি ক্ষতি করা হবে।

যাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী তাদের জন্য কিসমিস নিয়ে একটি দুঃসংবাদ হল কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যার কারণে অতিরিক্ত কিসমিস খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাই প্রতিদিন ২০-৫০ গ্রাম এর বেশি কিসমিস না খাওয়াই ভালো।

রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়

বিভিন্ন পুষ্টিবিদদের মতে, পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে এ পুষ্টিগণ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায় যখন কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়া হয়।কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই ভেজানো কিসমিস খেলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যাবে। যেমন-

১।রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে তা আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে করে পেট ভরাও থাকে এবং ওজনও কমে।

২।কিসমিসের মধ্য রয়েছে পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি। কিসমিসের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম শরীরের লবণাক্ত তার ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালীর উপর ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।

৩।শরীরের রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে কিসমিস একটি সহায়ক খাবার। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি কয়েক টুকরো কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে এতে থাকা লৌহ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে সাহায্য করবে।

৪।হাড়কে মজবুত রাখতে ক্যালসিয়ামের ভালো একটি উৎস। আপনি আপনার দেহের হাড়কে শক্তিশালী রাখতে প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে কিসমিস ভেজানো পানি পান করতে পারেন।

৫।মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণে কিসমিসে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান খুবই সাহায্য করে।যাদের মুখে দুর্গন্ধ হয় তারা প্রতিদিন রাতে কয়েক টুকরো কিসমিস মুখে নেড়েচেড়ে ঘুমোতে পারেন।

৬।কিসমিস এনার্জির ভালো একটি উৎস।কিসমিসে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্লুকোজ যা কর্মশক্তিকে জোরদার করে।

৭।দৃষ্টিশক্তিকে ভালো রাখতে প্রতিদিন রাতে নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন।চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কিসমিস খুবই উপকারী খাদ্য।

শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার গুনাগুন সম্পর্কিত আমরা কমবেশি জানলাম। কিন্তু কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি শুকনো কিসমিস খেলেও গুনাগুন রয়েছে। শুকনো ফলের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু হলো কিসমিস। আঙ্গুর ফলকে শুকানো হলে তাকে বলে কিসমিস।শরীরের শক্তি জোগাতে কিসমিসের ভূমিকা অনেক।

প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনো কিসমিসে রয়েছে ২৯৯ কিলো ক্যালোরি শক্তি।এছাড়াও রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ৭৯.১৮গ্রাম, প্রোটিন ৩.০৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ৭৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৯৯ মিলিগ্রাম, খাদ্য আঁশ ৩.০৭ গ্রাম।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা যেমন অনেক বেশি তেমনি শুকনো কিসমিসেও রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। শুকনো কিসমিস দেহে দ্রুত রক্ত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, শক্তি যোগায়, হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজম শক্তি উন্নত করে, হাড়ের সুরক্ষা দেয়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এছাড়াও এসিডিটির সমস্যা দূরীকরণের সাহায্য করে। তাই কিশমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি শুকনো কিসমিসেও প্রচুর পরিমাণ উপকারী উপাদান রয়েছে।

সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয়

প্রতিদিন সকালে কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। শরীরের ভালোর জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি পান করা আপনাকে স্বস্তি দিবে অনেক রোগ থেকে।কিসমিসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মত জরুরি পুষ্টি উপাদান। তাই প্রতিদিন সকালে চাইলেই এইসব পুষ্টি উপাদান নিজের শরীরকে গ্রহণ করাতে পারেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে সকালে খালি পেটে কিসমিস কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে তার শরীরের জন্য বহুমুখী উপকার সাধন করে। যারা উচ্চ রক্তচাপ কিংবা এসিডিটি অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন জন্য প্রতিদিন সকালে কিসমিস খাওয়া উত্তম সিদ্ধান্ত। দেখে নিন প্রতিদিন সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা গুলো-

👉হার্ট কে সুস্থ রাখে।

👉ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

👉পুষ্টিহীনতার দূর করে।

👉উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।

👉কিডনি এবং লিভার স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে।

👉রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

👉এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে।

👉কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত করে।

উল্লেখিত রোগ গুলো থেকে আপনাকে মুক্তি দিবে কিসমিস। আপনি চাইলে শুকনো কিসমিস খেতে পারেন তবে শুকনো কিসমিসের চেয়ে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি।তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম করে কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করলে সহজেই উল্লেখিত সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাবেন।

প্রশ্ন উত্তর

কিসমিসের উপকারিতা কি কি?

কিসমিসে রয়েছে বহু গুণাগুণ। কিসমিস এমন একটি ড্রাই ফ্রুট যার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম যা হার্ট এবং হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখে, এবং শরীরের লবণের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা দূরীকরণের সাহায্য করে।ইস্পিসের মধ্যে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা শরীরে কর্মশক্তি জোগাতে সাহায্য করে।

কিসমিস কি ভিজিয়ে খেতে হয়?

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে কোনে মতভেদ নেই। ড্রাই ফ্রুট হিসেবে আপনি কিসমিস খেতে পারেন। শুকনো কিসমিসে যে সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার চেয়ে বেশি পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে ভেজানো কিসমিস খেলে। আপনি সারারাত পানিতে কিসমিস ভিজিয়ে যদি সকালে সেই পানি পান করেন তাহলে এতে থাকা পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার পুষ্টি উপাদান আপনার শরীর সহজে শোষণ করতে পারবে। ভেজানো কিসমিস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুবই সাহায্য করে।

কিসমিস ভিজিয়ে খেলে কি ওজন বাড়ে?

সারারাত পানিতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে যদি সেই ভেজানো কিসমিস খাওয়া হয় তাহলে আপনার ওজন দ্রুত কমবে। শুধু তাই নয় এটি আপনার হজম শক্তিকে ভালো রাখবে টক্সিন দূর করবে এবং আপনার শরীর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাবে।

কিসমিস কি ত্বকের জন্য ভালো?

ত্বকের সুরক্ষায় কিসমিস উপকারী কেননা কিসমিসের যেসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা ফ্রী রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথা –

শুকনো ফল গুলোর মধ্য কিসমিস কে প্রথম সারিতে রাখা যায়। কারণ এটি বহু পুষ্টিগুণে ভরপুর।কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক তথ্য জানলাম। আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে আশা করি আপনি কিসমিসের গুনাগুন সম্পর্কে অনেক তথ্যই জানতে পেরেছেন।আজকের আর্টিকেলে এটিই ছিল আমাদের মূল আলোচ্য বিষয়। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন টিকেট করার নিয়ম

পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকিট বুকিং করার নিয়ম

ইউনিক বাস অনলাইন টিকেট কাটার নিয়ম

বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকিট কাটার নিয়ম

জাতীয় জাদুঘর অনলাইন টিকেট করার নিয়ম

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

  • ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

Welcome to our banking tips blog! I'm Sanaul Bari, a passionate financial educator and experienced banking professional dedicated to helping individuals and businesses navigate the complex world of finance. With over a decade of experience in the banking industry, I’ve held various positions, from customer service representative to financial advisor, gaining a comprehensive understanding of banking products, services, and strategies.

Leave a Comment