কম্পিউটার কি? কম্পিউটার এর প্রকারভেদ?কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত (২০২৩-২০২৪ )

5/5 - (1 vote)

আধুনিক যুগে কম্পিউটার ব্যবহার করে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে দিন দিন কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। অফিসের কাছ থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেম,মুভি এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের ব্যবহার বেরিয়ে চলেছে।

তবে কম্পিউটার সম্পর্কেও আমাদের জানার শেষ নেই কম্পিউটার কি,প্রকারভেদ,কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেছে এ সম্পর্কে আজকের আলোচনায় আমরা জানতে পারবো। তাছাড়া আরো জানতে পারবো নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে, আর কম্পিউটারে বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে। সুতরাং সবকিছু জানতে পুরো পোস্টটি ভালো করে পড়বেন ।

কম্পিউটার কি?

কম্পিউটার শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘Computare’ (কম্পিউটেয়ার) থেকে। আবার অনেক বিজ্ঞানীর মতে, শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Compute’ (কম্পিউট) থেকে এসেছে। বাংলায় এই শব্দ দুটির অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার (Computer) শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো গণনাকারী বা হিসাবকারী যন্ত্র।

সহজভাষায়, কম্পিউটার (Computer) হলো একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা খুব দ্রুত ও নির্ভুলভাবে বিভিন্ন  ধরনের গাণিতিক ও যৌগিক সমাধান করতে পারে। শুরুর দিকে প্রাচীন গণনাকারী যন্ত্র হিসেবে আবিষ্কার করা হলেও, বর্তমানের আধুনিক কম্পিউটারগুলো দিয়ে গণনা ছাড়াও, বিভিন্ন রকমের আলাদা আলাদা কাজ করা যায়।

কম্পিউটারের যাত্রা শুরু হয় কবে?

১৮৮২ সালে বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ প্রথম কম্পিউটার আবিষ্কার করেন, তবে প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো তৈরি শুরু হয় ১৯৪২ থেকে ১৯৬৬ এর মধ্যে। তবে সেই যন্ত্রগুলো এতোটাই বড়ো ছিলো যে, সেগুলো রাখতে বিশাল এক কক্ষের প্রয়োজন হতো। পৃথিবীর সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার নির্মাণ করা হয় ১৯৪৩ সালে, যার নাম ছিলো ENIAC (Electronic Numerical Integrator And Computer).

কম্পিউটার আবিষ্কার করেছেন কে?

খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে যন্ত্রের সাহায্যে গণনার যাত্রা শুরু হলেও, কম্পিউটার তৈরির প্রথম ধারণা দেন বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ। ১৮৮২ সালে তিনিই প্রথম মেকানিক্যাল কম্পিউটার (Mechanical Computer) তৈরি করেছিলেন। তার তৈরি নকশার ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে আধুনিক কম্পিউটার (Computer) তৈরি করা হয়। তাই চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের জনক বলা হয়।

কম্পিউটার কত প্রকার কি কি?

গঠন ও বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে, কম্পিউটার তিন প্রকার:

) এনালগ কম্পিউটার (Analog Computer)
) ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
) হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)

) এনালগ কম্পিউটার (Analog Computer)

ভৌতো পরিমাপ, গ্যাসীয় বা তরল পর্দার্থের পরিমাপ, বৈদ্যুতিক তারের ভোল্টেজ, বায়ু প্রবাহ ও চাপ পরিবর্তিত হওয়া ইত্যাদি অ্যানালগ ডেটা প্রক্রিয়া করার জন্য যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাকে এনালগ কম্পিউটার বলে।

Analog Computer –এর বৈশিষ্ট্য

  • এটি একের বেশি চিপ দিয়ে তৈরি;
  • এরা কম ফ্লেক্সিবেল ও ধীর গতির হয়ে থাকে;
  • ভৌত পরিমানে ডেটা সঞ্চয় করে;
  • পরিমাপের সাহায্যে গণনার কাজ সম্পাদন করে;
  • ভৌত পরিমাণ, বৈদ্যুতিক তারের ভোল্টেজের উঠানামা, পাইপের ভেতরে গ্যাসীয় বা তরল পদার্থের চাপের তারতম্য ইত্যাদি পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

) ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)

সহজভাষায় বললে, যে কম্পিউটার বাইনারি সিস্টেম (0 ও 1) ব্যবহার করে গনণার কাজ করে তাকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলে। ডিজিটাল কম্পিউটারে দ্রুত গতিতে গণনা এবং যৌক্তিক ক্রিয়াকলাপের কাজ করা যায়। উচ্চ গতির ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করার জন্য এই ধরণের যন্ত্রগুলো মেমোরি সম্পন্ন ডিস্ক এবং ইনপুট ও আউটপুট ইউনিট দিয়ে ডিজাইন করা হয়। ডেক্সটপ, মোবাইল, ল্যাপটপ এবং স্মার্ট ফোন এই সবকিছু ডিজিটাল কম্পিউটারের উদাহরণ।

Digital Computer –এর বৈশিষ্ট্য

  • বাইনারি পদ্ধতিতে ০ ও ১ নিয়ে কাজ সম্পন্ন করে;
  • এটি সব ধরনের ডাটা বাইনারি ০ ও ১ এর মাধ্যমে ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে;
  • এতে তিনটি অংশ থাকে: ইনপুট, প্রসেসিং ও আউটপুট;
  • সংখ্যা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তিতে কাজ করে;
  • কাজের সুক্ষ্ণতা অত্যন্ত বেশি (১০০ %)
  • কাজে ফলাফল সরাসরি মনিটরে প্রদর্শিত হয় বা অন্য কোনো আউটপুট ডিভাইসে প্রকাশিত হয়।

) হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)

এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলিকে একত্রিত করে যে যন্ত্র তৈরি হয়, তাকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে। সাধারণত এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও ব্যবহার করা হয়। হাইব্রিড কম্পিউটারে অ্যানালগ ও ডিজিটাল উভয়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি একদিকে যেমন অ্যানালগেরর মতো দ্রুত, আবার অন্যদিকে ডিজিটালের মতো নির্ভুলতার সাথে কাজ করতে পারে। আরো সহজ ভাবে বললে, হাইব্রিড কম্পিউটার এনালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের একটি আংশিক সংমিশ্রণ।

ডিজিটাল কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

আকার-আয়তন ও ব্যহারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটার ৪ প্রকার। যথা:-

১) সুপার কম্পিউটার (Super Computer)
২) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)
৩) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)
৪) মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer)

১) সুপার কম্পিউটার (Super Computer)

সুপার কম্পিউটার (Super Computer) হলো সবচেয়ে বড়ো ও দ্রুততম কম্পিউটার । বিপুল পরিমাণ ডেটা প্রক্রিয়া করার জন্য এগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। একটি Super Computer এক সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করতে পারে। এতে রয়েছে হাজার হাজার আন্তঃসংযুক্ত প্রসেসর।

Super Computer-গুলি বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশলিক ব্যবহার, যেমন: আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বৈজ্ঞানিক সিমুলেশন এবং পারমাণবিক শক্তি গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।

Super Computer -এর বৈশিষ্ট্য

  • বিপুল পরিমাণ গণনা পরিচালনা করতে পারে;
  • দ্রুত তথ্য প্রসেসিং করতে সক্ষম হয়;
  • প্রসেসিং স্পিড 100 Million instructions per second (MIPS) পর্যন্ত হয়ে থাকে;
  • 64 বিট বা তার থেকে বেশি মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ব্যবহার করা হয়;
  • বিশাল সংখ্যার প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট রয়েছে;
  • RAM টাইপ মেমরি ইউনিটের একটি বিশাল সংগ্রহ;
  • নোডের মধ্যে উচ্চ গতির আন্তঃসংযোগ;
  • উচ্চ ইনপুট/আউটপুট সিস্টেমের গতি;
  • কাস্টম সফ্টওয়্যার ব্যবহার;
  • কার্যকর তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা;
  • অল্প সময়ে প্রচুর পরিমাণ গণনা করতে পারে, কারণ এদের Data Storage Capacity সব থেকে বেশি;
  • অনেকগুলি প্রসেসর থাকে এর ফলে একসাথে অনেক কাজ (Multiple Tasks) করা যায়।
২) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)

বৃহৎ-স্কেল কম্পিউটিং উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত উচ্চ-কার্যক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারগুলোকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer) বলা হয়, যা প্রযুক্তির জগতে বিগ আয়রন নামেও পরিচিত। ব্যাঙ্কিং ও টেলিকম সেক্টরের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই ধরনের Computer ব্যবহার করা হয়। তবে Super Computer থেকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী এই মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)।

Mainframe Computer -এর বৈশিষ্ট্য

  • দ্রুত কাজ করার জন্য হাই এন্ড প্রসেসর ও সফটওয়্যার থাকে;
  • একসাথে অনেকগুলো নেটওয়ার্ক সংযোগ, মেমোরির সাপোর্ট ও ডিস্ক স্টোরেজ থাকে;
  • এতে ব্যবহার করা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড হার্ডওয়্যার ও সফ্টওয়্যার কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই, ২০ বছর ধরে চলতে পারে।
  • সিকিউরিটি ফিচার রয়েছে, যা একটি ব্যাংকের সিকিউরিটি ফিচারের সাথে ম্যাচ করে;
  • যে কোনো বড় প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রে বড় বড় ব্যবসায়ী লেনদেনের কাজে Mainframe Computer ব্যবহার করা।

৩) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)

মাইক্রো কম্পিউটারের চেয়ে বড়ো এবং মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট কম্পিউটারগুলোকে মিনি কম্পিউটার (Mini Computer) বলা হয়। মাঝারি আকারের মাল্টিপ্রসেসিং কম্পিউটারগুলো দুটি বা ততোধিক প্রসেসর নিয়ে গঠিত, যা একইসাথে প্রায় ২০০ জন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারে। বিলিং, অ্যাকাউন্টিং এবং ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টের মতো কাজের জন্য এই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

Mini Computer -এর বৈশিষ্ট্য

  • আকারে ছোট এবং কাজের ক্ষমতাও কম;
  • কিছু সংখ্যক ডাম্ব টার্মিনাল যুক্ত থাকে;
  • এতে একাধিক মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে;
  • প্রকৃতপক্ষে এটি Mainframe Computer -এর ক্ষুদ্র সংস্করণ;
  • ব্যাংক, শিল্প প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বড় গার্মেন্টস কারখানা এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে ব্যবহার করা হয়।

৪) মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer)

মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer) ব্যক্তিগত কম্পিউটার হিসেবেও পরিচিত। ব্যক্তিগত ব্যবহার বা সাধারণ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এই ধরনের Computer ডিজাইন করা হয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ Micro Computer -এর উদাহরণ। অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা প্রেজেন্টেশন তৈরি করা থেকে শুরু করে, মুভি দেখা ও অফিসের কাজের জন্য সাধারণ এগুলো ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এই Micro Computer.

Micro Computer -এর বৈশিষ্ট্য

  • ক্ষুদ্রাকৃতির মাইক্রো প্রসেসর চিপ দিয়ে তৈরি;
  • একটি প্রধান মাইক্রো প্রসেসর, প্রধান মেমোরি, সহায়ক মেমোরি, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস নিয়ে গঠিত হয়;
  • এতে একজন মানুষই একই সময়ে কাজ করতে পারে;
  • প্রকৃতপক্ষে এটি Mini Computer -এর ক্ষুদ্র সংস্করণ ;
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যক্তিগত ব্যবহার, খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের কাজে ব্যবহার করা হয়।
  • বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের Micro Computer রয়েছে। যেমন: ডেস্কটপ, নোটবুক বা ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ইত্যাদি।

কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে?

কম্পিউটার  সাধারণত দুইটি মাধ্যমের সমন্বয়ে কাজ সম্পাদন করে থাকে। নিচে উদাহরণ সহকারে আলোচনা করা হলো।

১।প্রথমত, হার্ডওয়্যার: কম্পিউটারের বাহ্যিক আকৃতিসম্পন্ন সকল যন্ত্র, যন্ত্রাংশ ও ডিভাইস সমূহকে হার্ডওয়্যার বলে। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে আবার তিনভাগে ভাগ করা যায়।

ক) ইনপুট যন্ত্রপাতি: কী-বোর্ড, মাউস, ডিস্ক, স্ক্যানার, কার্ড রিডার, ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি।

খ) সিস্টেম ইউনিট: হার্ড ডিস্ক, মাদারবোর্ড, এজিপি কার্ড, ইত্যাদি।

গ) আউটপুট যন্ত্রপাতি: মনিটর, প্রিন্টার, ডিস্ক, স্পিকার, প্রোজেক্টর, হেড ফোন ইত্যাদি।

২।দ্বিতীয়ত, সফটওয়্যার: সমস্যা সমাধান বা কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কম্পিউটারের ভাষায় ধারাবাহিকভাবে সাজানো নির্দেশমালাকে প্রোগ্রাম বলে। প্রোগ্রাম বা প্রোগ্রাম সমষ্টি যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারকারীর মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে হার্ডওয়্যারকে কার্যক্ষম করে তাকেই সফটওয়্যার বলে। কম্পিউটারের সফট্ওয়্যারকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

ক) সিস্টেম সফটওয়্যার: সিস্টেম সফট্‌ওয়্যার কম্পিউটারের বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে কাজের সমন্বয় রক্ষা করে ব্যবহারিক প্রোগ্রাম নির্বাহের জন্য কম্পিউটারের সামর্থ্যকে সার্থকভাবে নিয়োজিত রাখে।

খ) এপ্লিকেশন সফটওয়্যার: ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান বা ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামকে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার বলে। ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক রকম তৈরি প্রোগ্রাম বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে পাওয়া যায়, যাকে সাধারণত প্যাকেজ প্রোগ্রামও বলা হয়।

সুতরাং একটি কম্পিউটার হল  হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর যৌথ সমন্বয়।

কম্পিউটার কী কী কাজে ব্যবহার হয়

কম্পিউটার কী কী কাজে ব্যবহার হয় লিখা শুরু করলে, হয়তো শেষ হবে না। যদিও এই যন্ত্রটির ব্যবহার শুরু হয় মূলত হিসাব বা গণনা যন্ত্র হিসেবে, জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধান করার জন্য। তবে বর্তমানে এমন কোনো কাজ নেই যাতে কম্পিউটারের ব্যবহার নেই।

তাই চলুন এবার জেনে নেই কম্পিউটার কী কী কাজে ব্যবহার হয়, যেগুলো না জানলেই নয় –

১।শিক্ষাক্ষেত্রে

শিক্ষাক্ষেত্রে Computer কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো কোভিট-১৯ মহামারীর সময় সবাই উপলব্ধি করেছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ব্যবহার রয়েছে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রেজেন্টেশন তৈরি থেকে শুরু করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন, এই সবগুলো কাজ এই যন্ত্রটির সাহায্য ছাড়া এখন কল্পনা করাও সম্ভব নয়।

২।চিকিৎসাক্ষেত্রে

চিকিৎসাক্ষেত্রে যে কোনো রোগ নির্ণয়ে বর্তমানে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটারাইজড ডায়াগনোস্টিক সিস্টেম। ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফ, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান থেকে শুরু করে অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি, চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের সব কাজে এই যন্ত্রটির প্রয়োজন হয়।

৩।গবেষণায়

আধুনিক সময়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা যে কোনো গবেষণার কাজে অপরিহার্য মাধ্যম কম্পিউটার। কারণ এটি দিয়ে গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ, তথ্য সংরক্ষণ এবং জটিল গণনাকে অতি দ্রুত করা যায় খুব সহজেই। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও তথ্য সঞ্চয় করে রাখতে কম্পিউটার অবদান অনেক। 

৪।চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে

বিনোদনের ক্ষেত্রে কম্পিউটারে ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। ভিডিও গেমস খেলা, মুভি দেখাসহ কিংবা অ্যানিমেশন ও স্পেশাল এফেক্ট তৈরির কাজ এই যন্ত্রটি ছাড়া করা যায় না।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি?

দুই বা তারও বেশি কম্পিউটারের মধ্যকার আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থাকে কম্পিউটার বলে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এমন একটি সংযোগ ব্যবস্থা যা তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য দুই বা ততোধিক কম্পিউটিং ডিভাইসকে সংযুক্ত করে। কম্পিউটিং ডিভাইসের মধ্যে একটি মোবাইল ফোন থেকে সার্ভার পর্যন্ত সবকিছু অন্তর্ভুক্ত থাকে।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কিভাবে তৈরি হয়?

দুই বা তারও বেশি কম্পিউটারের মধ্যকার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে যে উপাদানগুলো প্রয়োজন হয়, তা হলো:

  • প্রেরক (Sender)
  • গ্রহীতা (Receiver)
  • বার্তা বা তথ্য (Message)
  • নিয়ম-নীতি (Protocol)
  • পরিবহনকারী মাধ্যম (Transportation Media)
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার ও কি কি?

বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলিকে বিভিন্ন প্রকারে করা যেতে পারে, যেমন: ট্রান্সমিশন মাধ্যম, নেটওয়ার্কের আকার, ভৌগলিক অবস্থান ও সাংগঠনিক অভিপ্রায় ইত্যাদি।

ভৌগলিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে, নেটওয়ার্কগুলো হলো:

  • Nanoscale Network
  • PAN (Personal Area Network)
  • LAN (Local Area Network)
  • SAN (Storage Area Network)
  • CAN (Campus Area Network)
  • MAN (Metropolitan Area Network)
  • WAN (Wide Area Network)
  • HAN (Home Area Network)
  • Enterprise Private Network (EPN)
  • Virtual Private Network (VPN)
  • Cloud Network

ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে, নেটওয়ার্কের প্রকারগুলো হলো:

  • Intranet
  • Internet
  • Extranet
  • Darknet
কিছু প্রশ্ন ও উওর:

১।কম্পিউটার বলতে কী বোঝ?

Compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার (Computer) শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে।

২।কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

গঠন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কম্পিউটার ৩ প্রকার।

ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপ মাইক্রো বা ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সেরা উদাহরণ যা আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি। সাত ধরনের কম্পিউটার আছে

1। সুপার কম্পিউটার

2। মেইনফ্রেম

3।মাইক্রোকন্ট্রোলার

4। সার্ভার কম্পিউটার

5।পার্সোনাল কম্পিউটার

6।ওয়ার্কস্টেশন কম্পিউটার

7 ।স্মার্টফোন।

৩।কম্পিউটার এর জনক কে?

চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের জনক বলা হয়। 1820 সালে চার্লস ব্যাবেজ, আধুনিক বৈদ্যুতিন কম্পিউটার প্রত্যাশিত নীতির উপর ভিত্তি করে যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর এবং ডিফারেন্স ইঞ্জিন পরিকল্পনা এবং নির্মাণ করেছিলেন।

৪।কম্পিউটারের স্থায়ী স্মৃতিশক্তিকে কি বলা হয়?

একটি কম্পিউটারের স্থায়ী মেমরি ROM (রিড-অনলি মেমরি) নামে পরিচিত। কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে, রিড-অনলি মেমরি (ROM) অনুদ্বায়ী মেমরির একটি

৫।তারিখ ও সময় ঠিক না থাকলে কি করতে হবে?

অনেক সময় কম্পিউটারে সঠিক তারিখ এবং সময় দেখা যায় না। উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারের সেটিংস থেকে সময় ও তারিখ সহজেই পরিবর্তন করা যায়। এ জন্য প্রথমে Windows এবং ‘I’ কী একসঙ্গে চেপে সেটিংস অপশন চালু করতে হবে। এরপর সেটিংস উইন্ডো থেকে Time & Language অপশনে ক্লিক করলেই Date and Time পেজ খুলে যাবে।

শেষকথা

ডিজিটাল যুগে  প্রতিটি কাজে  ব্যবহার হয় কম্পিউটার।  আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে কম্পিউটার।  ঘরের কাজ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক, বৈজ্ঞানিক ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে এর অপরিসীম ব্যবহার। তবে আমরা অনেকেই জানিনা কম্পিউটার সম্পকে। আজকের পোস্টটিতে আপনারা জানতে পারবেন কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত। আশাকরি  পোস্টটি ভাল লাগবে।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

  • ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম, আমি একজন অনলাইন কনটেন্ট রাইটার। আমার লেখাগুলো পড়ে বিন্দুমাত্র আপনার কোন উপকারে আসলে অবশ্যই পোস্টটিতে কমেন্টস করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ

Leave a Comment