তারাবির নামাজের নিয়ম,দোয়া ও মোনাজাত

5/5 - (1 vote)

তারাবির নামাজের নিয়ম-রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত। এশার নামাজের ওয়াক্তে এশার নামাজ আদায় করে তারাবির নামাজের জন্য নিয়ত করতে হয়। তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মতোই শুধুমাত্র কিঞ্চিৎ এ দিক সেদিক রয়েছে। তারাবি একটি আরবি শব্দ। এর বাংলা আভিধানিক ও অর্থ হলো বিশ্রাম করা, আরাম, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা ইত্যাদি।

মূলত তারাবির নামাজ ২০ রাকাত মতান্তরে ৮ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা।পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে সেইদিন এশারের নামাজের পরেই তারাবি শুরু হয়ে যায়।টানা ৩০ দিন রমজান মাসে তারাবির সালাত আদায় করতে হয়। এটি একটি সুন্নত এবাদত। ২০২৫ এর রমজান মাস আসতে আর খুব বেশি বাকি নেই। কাজেই রমজান মাস শুরুর আগেই তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে জেনে রাখুন।

সম্মানিত পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম। শুরুতেই সবার সুস্থতা আশা করছি। তারাবির নামাজ আমাদের মুসলমানদের জন্য রমজান মাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারাবির নামাজ আদায় করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য সুন্নাত। আর তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে তারাবির নামাজের নিয়ম,দোয়া  ও মোনাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ।

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নয়। তাদের কাছে অনুরোধ আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন এবং তারাবির নামাজের নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত আরবি এবং বাংলা উচ্চারণসহ শিখে নিবেন।

তারাবির নামাজ কি

তারাবি শব্দটি একটি আরবি শব্দ। আরবি শব্দ তারাবিহ শব্দটি মূল ধাতুর রাহাতুন যার অর্থ করা বা বিশ্রাম করা। শরীয়তের পরিভাষায় রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়ার সময় প্রতি দুই রাকাত কিংবা চার রাকাত নামাজ আদায় করার পরপর বিশ্রাম করা বা আরাম করার জন্য কিছু সময় পাওয়া যায় যার কারনে এই নামাজকে তারাবিহ নামাজ বলা হয়।

রমজান মাস শুরুর প্রথম দিন থেকেই এশার নামাজের রাকাত ৪ রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায়ের পর ৩ রাকাত বেতের নামাজ আদায়ের আগে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। কোরআন হাদিসে তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে মুসলমানদের স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার জন্য অনেক বাণী উল্লেখিত আছে।

তারাবির নামাজের নিয়মকানুন মহিলাদের

মহিলাদের তারাবির নামাজের নিয়ম,দোয়া  ও মোনাজাত  সম্পর্কে ইসলামের বিধান হচ্ছে নারীদের জন্য এই নামাজ ঘরে পড়া উত্তম। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “নারীদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না তবে তাদের জন্য ঘরে উত্তম। ” (আবু দাউদ)

তারাবির নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। নারীরা মাসে এশার নামাজের ওয়াক্তে এশার নামাজের অত্যাবশ্যকীয় চার রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নত আদায় করার পর এবং ৩ রাকাত বেতের নামাজ আদায়ের আগে তারাবির নামাজ দুই দুই রাকাত করে ৪ রাকাত আদায় করবে। এইভাবে তারা ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়বে। তবে তারাবির নামাজ কেউ কেউ ৮ রাকাত কেউ কেউ ১২ রাকাত আদায় করেন।

তারাবির নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মহিলারা মসজিদে গিয়ে পড়তে পারেন।তবে মহিলাদের জন্য তারাবির নামাজ আদায় করার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো ঘরে বসে নামাজ আদায় করা। তারাবির নামাজ মহিলারা যদি মসজিদে আদায় করেন তাহলে ইমাম হতে হবে মাহরাম (পিতা, পুত্র, ভাই, ভাতিজা ইত্যাদি) ।অন্যথায় মহিলারা তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করতে পারবে না ।

তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া সমূহ

তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার এই পর্যায়ে তারাবির নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ সম্পর্কে জানবো। তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তারাবির নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ তা’আলা অতি পছন্দ করেন। যারা রমজান মাসে নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করেন তাদের পূর্বের সকল গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। তবে অনেকের মধ্যেই একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে তারাবির নামাজ না পড়লে তার রোজা কবুল হবে না। ইবাদত কবুল করার মালিক আল্লাহ। তারাবির নামাজ সাথে রমজানের রোজা না হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বরং দুটি আলাদা আলাদা ইবাদত।

তারাবির নামাজের নিয়ম

রমজান মাসে এশার নামাজের ৪ রাকাত সুন্নত, ৪ রাকাত ফরজ ও ২ রাকাত সুন্নতের পর এবং বেতের (৩ রাকাত) নামাজের আগে শুরু হয় তারাবির নামাজ। ২ রাকাত করে ১০ বার তাশাহুদ অথাৎ ১০ বার সালাম ফিরানোর মাধ্যমে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ বা তারাবিহ আদায় করতে হয়।

আমাদের দেশে সাধারণত এক নাগাড়ে তারাবিহ নামাজ পড়ানো হয়ে থাকে। তবে নিয়ম হচ্ছে- শরীর সহনীয় অবস্থায় ধীরে ধীরে তারাবিহ নামাজ পড়া।

একনজরে:

– এশার ৪ রাকাত সুন্নত।

– এশার ৪ রাকাত ফরজ।

– এশার ২ রাকাত সুন্নাত।

– এশার ৩ রাকাত বেতের।

– তারাবির নামাজ ২ রাকাত-২ রাকাত করে ২০ রাকাত, এর মধ্যে ৪ রাকাত পর পর দোয়া

তারাবিহ নামাজের নিয়ত

উচ্চারণ: নাওয়াইতুআন উসালি­য়া লিল্লাহি তাআ’লা, রাকাআ’তাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআ’লা * মুতাওয়াযজ্জিহান ইলা যিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার। (যদি জামাআ’তের সহিত নামাজ হয় তাহলে * চিহ্নের জায়াগায় ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম বলতে হবে)।

অর্থ: আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়্যত করছি, আল্লাহু আকবার। (যদি জামাআ’তের সহিত নামাজ হয় তবে- এই ইমামের ইমামতিতে জামাআ’তের সহিত)।

যাদের আরবী উচ্ছারণ করতে সমস্যা হয় অথবা পড়তে পারেন না। তারা বাংলায় বলবেন ‘আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়্যত করছি, আল্লাহু আকবার’। এটা বলেই নিয়্যত করতে পারবেন।

তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া:

سبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت. سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت ابدا ابدا سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح

উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাযিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযি লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

তারাবির নামাজের দোয়া

তারাবির নামাজের জন্য বিশেষ কোনো দোয়া নেই। তবে আমাদের দেশে প্রচলিত নিয়মে প্রতি চার রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করার পর কিছুক্ষণ আরাম করা বা বিশ্রাম করার সময় একটি দোয়া পাঠ করা হয়। দোয়াটি আমরা ইতো পূর্বেই উপরে উল্লেখ করেছি। এই পর্যায়ে বাংলা অর্থসহ তারাবির নামাজের দোয়া টি দেখে নিন;

سبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت. سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح.

উচ্চারণ: ‘সুবহানাজিল মুলকি ওয়ালমালাকুতি সুবহানাজিল ইজ্জাতি ওয়াল আজমাতি ওয়ালহাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারুতি; সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানুমু ওয়া লা ইয়ামুতু, সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাববুনা ওয়া রাব্বুন মালাইকাতি ওয়ার রূহ। ’

অর্থ: আল্লাহ পবিত্রময় সাম্রাজ্য ও মহত্ত্বের মালিক।

তিনি পবিত্রময় সম্মান মহত্ত্ব ও প্রতিপত্তিশালী সত্তা। ক্ষমতাবান, গৌরবময় ও প্রতাপশালী তিনি পবিত্রময় ও রাজাধিরাজ যিনি চিরঞ্জীব, কখনো ঘুমায় না এবং চির মৃত্যুহীন সত্তা। তিনি পবিত্রময় ও বরকতময় আমাদের প্রতিপালক, ফেরেশতাকুল এবং জিবরাইলের (আ.) প্রতিপালক।

অতঃপর-আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি।

তারাবির নামাজের মোনাজাত

তারাবির নামাজে প্রতি চার রাকাত পর পর একবার করে মোনাজাত করা হয়। তারাবির নামাজে মোনাজাত করার সময় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় একটি দোয়া পড়া হয়। তারাবির নামাজের নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার এই পর্যায়ে তারাবির নামাজের মোনাজাতে বাংলা উচ্চারণ এবং বাংলা অর্থসহ বিশেষ দোয়াটি দেখে নিন;

তারাবি নামাজের মোনাজাত:

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ: (আল্লা-হুম্মা ইন্না নাস আলুকাল্ জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারি বিরাহমাতিকা ইয়া আজীজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহিমু ,ইয়া জাব্বারু ইয়া খালেকু, ইয়া রাররূ, আল্লাহুমা আজির না মিনান্নারি, ইয়া মূজিরু ইয়া মুজিরু, বিরাহ্মাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।)

বাংলা অর্থ:হে আল্লাহ, আমরা তোমার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই। হে জান্নাত ও জাহান্নামের স্রষ্টা, তোমার রহমতের মাধ্যমে। হে পরাক্রমশালী, হে ক্ষমাশীল, হে দানশীল, হে পর্দাশীল, হে দয়ালু, হে জবরদস্ত, হে স্রষ্টা, হে নেককার। হে আল্লাহ, আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী। তোমার রহমতের মাধ্যমে, হে সর্বাপেক্ষা দয়ালু।

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল

তারাবির নামাজ হচ্ছে সুন্নত এবাদত। তারাবির নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রমজান মাসে যিনি তারাবির নামাজ নিয়মিত আদায় করেন আল্লাহ তার প্রতি অতি সন্তুষ্ট থাকেন। রমজান মাস হচ্ছে জান্নাতে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা।

তারাবির নামাজের নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত জানলেও  অনেকেই নিশ্চিত হতে পারেন না তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল ইবাদত। তারাবির নামাজ যদিও সুন্নত ইবাদত কিন্তু এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ জরুরি সুন্নত। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত যেই এবাদত করতেন তা তার উম্মতের জন্য ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যকীয়। আর আমাদের নবী করিম সাঃ এর নিয়মিত ইবাদতের মধ্য তারাবির নামাজ আদায় অন্যতম।তবে আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম তার আমলে প্রতিনিয়ত ২০ রাকাত পূর্ণ তারাবীর জামাত হতে দেননি। আর তাই সালাতুত তারাবি পড়া ওয়াজিব নয়, শুধুমাত্র সুন্নত। কিন্তু নামাজ জরুরী সুন্নত বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা রোজা গুলোকে ফরজ করেছেন এবং রাতে তারাবির নামাজের জন্য দণ্ডামান হওয়াকে অশেষ পুণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।”

সুরা তারাবির নামাজের নিয়ম

পবিত্র মাহে রমজানের ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। অত্যন্ত গুরুত্বতার সাথে এই নামাজ আদায় করতে হয়। আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করতেন বলে এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি। কোন ধরনের ওজর ব্যতীত তারাবির নামাজ পড়া বাদ দিলে গুনাগার হতে হয়। আমাদের পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে রমজান মাসে তাই পবিত্র কোরআন মাধ্যমে অনেক বেশি ফজিলত পাওয়া যায়। যার কারনে তারাবির নামাজে এই কুরআন খতম করা হলে তাকে খতম তারাবি বলা হয়।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

আমাদের দেশে দুই ধরনের তারাবির নামাজ প্রচলিত। একটি হচ্ছে সুরা তারাবি এবং অন্যটি হচ্ছে খতম তারাবি। তারাবির নামাজের নিয়ম দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে আলোচনার এই পর্যায়ে দেখে নিন সুরা তারাবি এবং খতম তারাবি কাকে বলে 👇

সুরা তারাবি:পবিত্র কুরআনের যেকোনো সূরা দিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করাকে বলে সুরা তারাবি। অর্থাৎ সূরা ফাতিহার সাথে কোরআনের যে কোন সূরা মিলিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করলে তাকে সুরা তারাবি বলে।

খতম তারাবি:পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস হলো রমজান মাস। এই মাসে তারাবির নামাজ আদায় করার সময় মসজিদের জামাতে কোরআন শরীফ খতম করা হয় একে বলে খতম তারাবি।

তবে সুরা তারাবির চেয়ে খতম তারাবি পড়লে সওয়াব বেশি।

তারাবির নামাজের চার রাকাত পর পর দোয়া

তারাবির নামাজের নিয়ম,দোয়া ও মোনাজাত নিয়ে আপনারা আজকের ব্লগে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারাবির নামাজ আদায় করার সময় চার রাকাত পর পর আমাদের দেশে যেই দোয়াটি পাঠ করা হয় সেটি কোনো বাধ্যতামূলক দোয়া নয়।তবে অধিক সওয়াবের আশায় দোয়াটি শিখে রাখা ভালো।

তারাবির নামাজের চার রাকাত পর পর দোয়া:

سبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت. سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت ابدا ابدا سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح

উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাযিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযি লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

দোয়াটি হলো

উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুব্হানাযিল ইয্যাতি, ওয়াল আয্মাতি, ওয়াল হাইবাতি, ওয়াল কুদরাতি, ওয়াল কিবরিয়াই, ওয়াল যাবারুত। সুব্হানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা-ইয়াানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থসহ

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ: (আল্লা-হুম্মা ইন্না নাস আলুকাল্ জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারি বিরাহমাতিকা ইয়া আজীজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহিমু ,ইয়া জাব্বারু ইয়া খালেকু, ইয়া রাররূ, আল্লাহুমা আজির না মিনান্নারি, ইয়া মূজিরু ইয়া মুজিরু, বিরাহ্মাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।)

বাংলা অর্থ:হে আল্লাহ, আমরা তোমার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই। হে জান্নাত ও জাহান্নামের স্রষ্টা, তোমার রহমতের মাধ্যমে। হে পরাক্রমশালী, হে ক্ষমাশীল, হে দানশীল, হে পর্দাশীল, হে দয়ালু, হে জবরদস্ত, হে স্রষ্টা, হে নেককার। হে আল্লাহ, আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী। তোমার রহমতের মাধ্যমে, হে সর্বাপেক্ষা দয়ালু।

শেষ কথা

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে তারাবির নামাজের নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত নিয়ে আলোচনা করা হলো। অনেক মুসলিম ভাই-বোনেরাই তারাবির নামাজের নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে জানতেন না । তাই আপনাদের অনুরোধের ভিত্তিতে আমাদের আজকের আর্টিকেলে তারাবির নামাজের নিয়ম,দোয়া ও মোনাজাত নিয়ে আলোচনা করা হলো।আপনাদের নিজেদের মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম জেনে নিন

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ  সম্পর্কে জেনে নিন

তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত ও কি কি? পড়ার নিয়ম এবং দোয়া

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️IMO চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো: সানাউল বারী পেশায় একজন ব্লগার এবং ইউটিউব ও ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।

Leave a Comment