এশার নামাজ মোট কয় রাকাত ও কি কি? পড়ার নিয়ম এবং দোয়া

5/5 - (2 votes)

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত-প্রতিটি মুমিন এবং মুসলমানদের জন্য ফরজ ইবাদত হচ্ছে সালাত আদায় করা। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সর্বপ্রথম স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ। যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় না করে সে আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে গুনাহগারের শাস্তি ভোগ করবেন।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের মধ্য (ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব, এশার) পঞ্চম ওয়াক্ত নামাজ হলো এশার।এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। অনেকেই বলেন এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত আবার অনেকেই বলেন এশার নামাজ মোট ১৫ রাকাত। এশার নামাজ মোট কত রাকাত এই বিষয়টি আজকে আপনাদের ক্লিয়ার করব। সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ আদায় করার পরে আদায় করতে হয় এশার নামাজ।

প্রিয় মুসলমান ভাই বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আমাদের প্রতিটি মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলার প্রতি ইবাদত গুলোর মধ্যেও সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হচ্ছে নামাজ।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে সর্বশেষ ওয়াক্ত হলো এশার।

আমাদের আজকের আর্টিকেলে এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। অনেকেই এশার নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হন। কারো মতে এশার নামাজ ১৫ রাকাত কারো মতে এশার নামাজ ১৭ রাকাত।

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত, এশার নামাজ পড়ার নিয়ম গুলো কি কি, কখন পড়তে হবে সকল বিস্তারিত বিষয় জানতে পারবেন আজকের আর্টিকেলে । এশার নামাজ মোট কয় রাকাত ১৫ রাকাত নাকি ১৭ রাকাত এই বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে হলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এটি জানা প্রতিটি মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এশার নামাজের রাকাত সংখ্যা সঠিকভাবে না জানলে নামাজ পড়তে সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। কারো কারো মতে এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত। কারো মতে এশার নামাজ মোট ১৫ রাকাত। কেউ বলেন এশার নামাজ মোট ৯ রাকাত। কারো মতে এশার নামাজ মোট ৬ রাকাত। তবে এদের মধ্যে সঠিক উত্তর কোনটি তা অনেকেই জানেন না। তবে তার ব্যাখ্যা করব আজকের আলোচনায়।

এশার নামাজ ১৭ রাকাত কি কি

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলেন এশার নামাজ ১৭ রাকাত।এশার নামাজ কিভাবে ১৭ রাকাত এটি যদি আপনার প্রশ্ন হয়ে থাকে তাহলে দেখুন এশার নামাজ ১৭ রাকাত হয় কিভাবে।

👉এশার নামাজের প্রথম চার রাকাত সুন্নতে গায়রে মক্কাদা (যা না পড়লে কোন গুনাহ হবে না কিন্তু পড়লে সওয়াব পাওয়া যাবে)।

👉চার রাকাত সুন্নত আদায় করার পর চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয় (যা পড়া বাধ্যতামূলক না পড়লে কবিরা গুনাহ হবে)।

👉চার রাকাত ফরজ পড়ার পর দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা (ওজর ছাড়া সুন্নতে মক্কাদা না পড়লে গুনাহ হবে, অর্থাৎ এটি পড়তে হবে)।

👉এরপর দুই রাকাত নফল নামাজ (নফল নামাজ পড়লে সোয়াব আছে, না পড়লে কোনো গুনাহ নেই)।

👉তারপর রয়েছে পাঁচ রাকাত বেতর নামাজ (বেতের নামাজ পড়া ফরজের সমতুল্য, এটি পড়া  ওয়াজিব। পাঁচ রাকাত না পারলেও তিন রাকাত বেতর সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। না আদায় করলে গুনাগার হতে হবে)।

এইভাবে এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত। অর্থাৎ যাদের মতে এশার নামাজ ১৭ রাকাত তারা এই হিসাবে বলেন এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত।

এশার নামাজ রাকাত কি কি

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলেন এশার নামাজ মোট ৯ রাকাত। এশার নামাজ ৯।রাকাত কিভাবে তার ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো;

👉৯ রাকাত এশার নামাজের মধ্য প্রথম চার রাকাত ফরজ (যা পড়তে হবে বাধ্যতামূলক, না পড়লে কবিরা গুনাহ)।

👉৪ রাকাত ফরজ আদায় করার পর ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা (ওজর ছাড়া সুন্নতে মক্কাদা না পড়লে গুনাহ হবে, অর্থাৎ এটি পড়তে হবে)।

👉শেষের তিন রাকাত বেতর (বেতের নামাজ পড়া ফরজের সমতুল্য, এটি পড়া  ওয়াজিব। তিন রাকাত বেতর সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। না আদায় করলে গুনাগার হতে হবে)।

এইভাবে সব মিলিয়ে এশার নামাজ মোট ৯ রাকাত।এশার নামাজের এই ৯ রাকাত নামাজ অবশ্যই আদায় করতে হবে।এই নয় রাকাত নামাজ (ফরজ, সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং ওয়াজিব)না পড়লে গুনাহ হবে।

এশার নামাজ কয় রাকাত সুন্নত কয় রাকাত ফরজ

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। কেউ বলে ৯ রাকাত, কেউ বলে ১৫ রাকাত, কেউ বলে ১৭ রাকাত। তবে ৯/১৫/১৭ তিনটিই সঠিক। তবে ৯ রাকাত এশার নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক এর কম পড়া যাবে না।এখন প্রশ্ন হলো এশার নামাজে কয় রাকাত সুন্নত এবং কয় রাকাত ফরজ?এশার নামাজের ৪ রাকাত ফরজ(বাধ্যতামূলক)  এবং ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা(পড়তে হবে) । তবে সাহাবায়ে কেরাম ফরজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়া মুস্তাহাব  বলে মনে করতেন (অপশনাল)। কিন্তু এই চার রাকাত সুন্নত না পড়লে গুনাহ নেই।

এশার নামাজ কয় রাকাত নিয়ত

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত  এবং এর নিয়ত যারা জানেন না তাদের জন্য এই পর্যায়ে এই বিষয়  নিয়ে আলোচনা করব। ইতোমধ্যে এশার নামাজ মোট কয় রাকাত তার সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা ধারণা দিয়েছি। চলুন দেখে নেই এশার নামাজ মোট কয় রাকাত-

১৭ রাকাত

৪ রাকাত সুন্নাত (মুস্তাহাব)।

৪ রাকাত ফরজ (অবশ্যই পড়তে হবে)।

২ রাকাত সুন্নত (সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, পড়তে হবে)।

২ রাকাত নফল (পড়লে সোয়াব,না পড়লে গুনাহ নেই)।

৫ রাকাত বেতর (ফরজের সমতুল্য ওয়াজিব, তিন রাকাত অবশ্যই পড়তে হবে)।

রাকাত

৪ রাকাত ফরজ ((অবশ্যই পড়তে হবে)।

২ রাকাত সুন্নত (সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, পড়তে হবে)।

৩ রাকাত বেতর (ফরজের সমতুল্য ওয়াজিব, তিন রাকাত অবশ্যই পড়তে হবে)।

৯ রাকাত এশার নামাজ পড়া অনিবার্য।

১৫ রাকাত

৪ রাকাত সুন্নাত (মুস্তাহাব)।

৪ রাকাত ফরজ (অবশ্যই পড়তে হবে)।

২ রাকাত সুন্নত (সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, পড়তে হবে)।

২ রাকাত নফল (পড়লে সোয়াব,না পড়লে গুনাহ নেই)।

৩ রাকাত বেতর (ফরজের সমতুল্য ওয়াজিব, তিন রাকাত অবশ্যই পড়তে হবে)।

এশার নামাজের নিয়ত

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত আশা করি এ বিষয়টি এখন যথেষ্ট পরিষ্কার সবার কাছে। এই পর্যায়ে এশার নামাজের বিভিন্ন রাকাতের নিয়ত সমূহ আরবি বাংলা উচ্চারণ এবং বাংলা অর্থসহ দেখে নিন ;

এশার চার-রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَالَى اَرْبَعَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْعِشَاءِسُنَّةُ رَسُوْلِ للَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল এশাই সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর।

বাংলা অর্থ

এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

এশার চার-রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْعِشَءِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল এশাই ফারদুল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর

বিঃদ্রঃ-ঈমামের পিছনে পড়লে ফারদীল্লা-হি তাআ’লা বলার পরে ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম বলবে।

বাংলা অর্থ

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

এশার দুই-রাকাত সুন্নাত নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন

نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْعِشَاءِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকায়াতি ছালাতিল এশাই সুন্নাতু রাসুলল্লাহি তা’য়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতি শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ

এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ

এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

এশার দুই-রাকাত নফল নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى رَكْعَتِ صَلَوةِالْنَفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতি ছালাতিল নফলে মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ

এশার দুই-রাকাত নফল নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলা মুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

এশার তিন-রাকাত বেতর নামাজের নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى ثَلَثَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْوِتْرِوَاجِبُ اللَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা-উচ্চারন

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা সালাছা রাকায়াতি ছালাতিল বিতরে ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

এশার নামাজ পড়ার নিয়ম

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই প্রসঙ্গে এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম।এশার নামাজে ৯  রাকাত পড়া বাধ্যতামূলক। প্রথম চার রাকাত ফরজ তারপর দুই রাকাত সুন্নত তারপর তিন রাকাত বেতের। তবে অথবা ১৭ রাকাত নামাজ পড়তে হলে প্রথমে ফরজ চার রাকাতের আগে চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে হবে। এখন জেনে নিব এশার নামাজ পড়ার নিয়ম

রাকাত সুন্নত

নামাজের পূর্ব শর্ত হলো ওযু করা। ওযু করার পর কেবলামুখী হয়ে নামাজের জন্য করতে হবে।

এরপর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত কাঠ বরাবর উঠিয়ে তাকবীরে  তাহরিমা বাধতে হবে(বাম হাত নিচে ডান হাত উপরে দিয়ে বুকের উপর  বাধতে হবে) ।

এরপর সানা পাঠ করতে হবে। ছানা পড়ার পর সূরা ফাতিহা পাঠ করে সুরা ফাতিহার সাথে যে কোন একটা সূরা মিলিয়ে পড়বেন।

সূরা পড়া হয়ে গেলে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে গিয়ে তিনবার পড়বেন সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম।

এরপর সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা বলে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রব্বানা লাকাল হামদ বলে সিজদায় যেতে হবে। এরপর সুবহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আলা তিনবার পড়তে হবে।

সিজদা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলতে হবে এবং পুনরায় সেজদা করতে হবে।

এভাবে একই নিয়মে দ্বিতীয় রাকাত নামাজ পড়ার পর উঠে তাশাহুদ দোয়া পাঠ করতে হবে।

তাশাহুদ পড়া হয়ে গেলে পুনরায় উঠে দাঁড়িয়ে বাকি দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। এবং শেষ বৈঠকে তাশাহুদ এর সাথে দুরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরাতে হবে।

রাকাত ফরজ 

চার রাকাত ফরজ নামাজ ও উপরোক্ত নামাজের মতোই আদায় করতে হবে।উপরে চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত দেওয়া আছে। সেভাবে নিয়ত করতে হবে তারপর চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়মের মতোই নামাজ ও আদায় করতে হবে।

তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে ফরজ নামাজ ইমামের পেছনে জামাতে আদায় করলে বেশি উত্তম। এতে করে ২৭ গুন সওয়াব বেশি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত(নফল)  নামাজ আদায় করল (সহিহ মুসলিম ১৩৭৭)।’

রাকাত সুন্নত

চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজের জন্য নিয়ত করতে হবে।উপরে দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা আদায় করার জন্য নিয়ত বাংলা উচ্চারণসহ আরবিতে দেওয়া আছে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই এই সুন্নতে মুয়াক্কাদা কখনো ছেড়ে দেননি। তাই এই সুন্নতে মুয়াক্কাদা অবশ্যই পড়তে হবে।

দুই রাকাত সুন্নত নামাজ ও উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী আদায় করতে হবে।

বেতর নামাজ 

ফরজ ও সুন্নত আদায় করার পর আপনি চাইলে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।তবে এটি পড়লে সওয়াব না পড়লে কোন গুনাহ নেই।

এরপর তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করতে হবে বাধ্যতামূলক। এই ক্ষেত্রে আপনি যদি শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে চান  তাহলে তার পরেও বেতর নামাজ পড়তে পারবেন।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

তবে আপনার যদি এশার নামাজের পরে বেতর নামাজ পড়ে ফেলা সুবিধা মনে হয় সে ক্ষেত্রে আপনি সেটি করতে পারেন।

বেতর নামাজ ৩ রাকাত, ৫ রাকাত,৭ রাকাত   পড়া যায়। আপনি যদি তিন রাকাত পড়তে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত বেতর নামাজের নিয়ত করে যথারীতি নামাজ আদায় করবেন।

এশার নামাজ ১৫ রাকাত কি কি

অনেকেই এশার নামাজ ১৫ রাকাত পড়ে থাকেন। এশার নামাজ মোট কয় রাকাত পড়তে হবে এই বিষয়ে যদি আপনার প্রশ্ন থাকে তাহলে বলব আপনি এশার নামাজ চাইলে ১৫ রাকাত পড়তে পারেন। তবে এই ১৫ রাকাত কিভাবে তা জেনে নিন;

👉৪ রাকাত সুন্নত।

👉৪ রাকাত ফরজ।

👉২ রাকাত সুন্নত।

👉২ রাকাত নফল।

👉৩ রাকাত বেতর।

এশার নামাজ রাকাত কিভাবে পড়তে হয়

৯ রাকাত এশার নামাজ পড়া আবশ্যিক। এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এই হিসাব করে নামাজ পড়লে ১৫ রাকাত ১৭ রাকাত পড়া যাবে কিন্তু যদি কেউ এর চেয়ে কম পড়তে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই নয় রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। এই নয় রাকাত নামাজ কিভাবে পড়বেন দেখে নিন:

👉প্রথম চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত করবেন। তারপর ওপরে উল্লেখিত ফরজ চার রাকাত নামাজের নিয়ম অনুযায়ী ফরজ আদায় করবেন।

👉তারপর দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত করবেন। সুন্নত দুই রাকাত নামাজের নিয়ম উপরে উল্লেখিত রয়েছে। একই পদ্ধতিতে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করবেন।

👉এরপর তিন রাকাত বেতের নামাজ। বেতর তিন রাকাতের নিয়ত করবেন এবং যথারীতি তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করতে হবে। মনে রাখবেন বেতের নামাজ কোনভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না এটি ওয়াজিব অর্থাৎ ফরজের কাছাকাছি।

প্রশ্ন উত্তর

এশার নামাজ কত রাকাত কিভাবে পড়তে হয়?

কারো মতে এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত, ১৫ রাকাত, ৯ রাকাত। তবে নয় রাকাত আবশ্যক। এশার নামাজ নয় রাকাত আদায় না করলে গুনাগার হতে হবে।

এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ (আবশ্যিক), এরপর দুই রাকাত সুন্নত (সুন্নতে মুয়াক্কাদা পড়তে হবে), শেষের তিন রাকাত বেতর (ফরজের কাছাকাছি, ওয়াজিব) ।

রাত ১২ টার পরে এশার নামাজ পড়া যাবে কি?

সাধারণত মাগরিবের পরে এশার নামাজের ওয়াক্ত। তাই ওয়াক্তের সময় নামাজ আদায় করা উত্তম। তবে কারো যদি একান্তই কোন জরুরী সমস্যা থাকে তাহলে রাত ১২ টার পরেও আদায় করতে পারবেন। তবে যদি আপনি ইচ্ছাকৃত ওয়াক্ত ছেড়ে দেন সে ক্ষেত্রে বারোটার পর নামাজ আদায় করা যাবে না। বারোটার পর কিংবা শেষ রাতে এশার নামাজ আদায় করাকে উলামায়ে কেরামগণ মাকরুহ বলেছেন।

এশার নামাজের বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?

বেতর নামাজ নামাজের মতোই।বেতের নামাজের নিয়ত করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করার পর প্রথম বৈঠকে তাশাহুদ পড়তে হয়। এবং তাশাহুদ পড়ার পর উঠে দাঁড়িয়ে তৃতীয় রাকাত নামাজ করতে হয় সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা মিলিয়ে।এরপর কি রাত শেষ করার পর তাকবির বলে দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার তাকবীরে তাহরিমা ভাবতে হয়। তারপর রুকু দিয়ে উঠে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হয়।

শেষ কথা –

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আমাদের আজকের ব্লগে সম্পূর্ণ এশার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এশার নামাজ মোট কয় রাকাত এটি জানার পাশাপাশি এশার নামাজ প্রসঙ্গে আরো অনেক কথাই জানতে পারলেন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের সামান্য হলেও উপকারে আসবে। এই প্রসঙ্গে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লেখায় কোন ভুলত্রুটি থাকলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আল্লাহ হাফেজ।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম জেনে নিন

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ  সম্পর্কে জেনে নিন

তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️IMO চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

 

Assalamu Alaikum wa Rahmatullah. I am Md. Sanaul Bari a blogger and YouTube and Facebook content creator by profession.

Leave a Comment