আযানের জবাব ও দোয়া (বাংলা অর্থসহ)

5/5 - (1 vote)

আজান হচ্ছে নামাজের জন্য আহ্বান। প্রত্যেক মুসলমানের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ বিধান আদায়ের জন্য মসজিদে মোয়াজ্জিন আজান দিয়ে আহ্বান জানায়। মুসলিমদের জন্য আজানের গুরুত্ব অপরিসীম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা যেমন মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে আজান দেওয়া বা নামাজের আহ্বান জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদে যে আযান দেয় তাকে বলা হয় মোয়াজ্জিন। মুয়াজ্জিন আজান দেওয়ার সময় মুসলমানদের জন্য আজানের জবাব ও দোয়া পড়ার ফজিলত অনেক। মসজিদে মুয়াজ্জিন প্রতিবার আযানের বাক্য বলার সাথে সাথে মুসলমান শ্রোতারা সেই প্রতিটি বাক্য অনুরূপভাবে বলবেন।

আযানের জবাব ও দোয়া সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আজকের ব্লগে আলোচনা করব। কিভাবে আজানের জবাব দিতে হবে কিভাবে আজানের পরে দোয়া পাঠ করতে হবে সেই সম্পর্কে জানতে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কেননা মসজিদের আজান আপনার কানে আসবে তখন তার জবাব দেওয়া মুসলমান হিসেবে আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই আযানের জবাব দেওয়া ও দোয়া সম্পর্কে ইসলামের বিধানগুলো জানতে আমাদের সাথে থাকুন।

আযানের জবাব দোয়া

মসজিদে মুয়াজ্জিন যখন আযান দিবে তখন মুসলমান শ্রোতা হিসেবে যখনই আজানের ধ্বনী আপনার কানে আসবে তখনই আপনি আযানের বাক্য গুলো মুয়াজ্জিনের মত অনুরূপভাবে বলবেন। এটি হলো আজানের জবাব। নিচে দেখুন আযানের জবাব কিভাবে দিবেন 👇

মসজিদের মাইকে মোয়াজ্জিন যখন আযান দিবেন তখন তার জবাব দেওয়া সুন্নত। আজানের জবাব দেওয়ার নিয়ম হলো প্রতিটি আযানের বাক্যের সাথে সাথে যখন আজান কানে শুনবেন তখন অনুরূপভাবে মুখে বলবেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, এর জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১১)

আযানের সময় আজানের প্রতিটি বাক্য শোনার সাথে অনুরূপভাবে নিজ মুখে বলা হলো আযানের জবাব। শুধুমাত্র “হাইয়্যা আলাস সালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলার সময় যিনি শুনবেন তিনি বলবেন “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।”

(সহিহ মুসলিম, হাদিস ৩৮৫)

তবে অনেক হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী “হাইয়্যা আলাস সালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ” শোনার পর অনুরূপভাবে মুয়াজ্জিনের সাথে শ্রোতা এটিও আপনার জবাব দিতে পারেন। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানী, হাদিস ৪৫৮)

ফজরের নামাজের আযানে “আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” এর জবাবে সাদাকতা ও বারারতা পড়ার জন্য অনেক হাদিসেই নির্দেশ করা হয়েছে। কিন্তু কুরআন ও সুন্নাহের কোন প্রমাণ এর উপর পাওয়া যায়নি। সুতরাং বিশুদ্ধ মতানুসারে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ শ্রোতা আজানের জবাবে “আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” বলবে।

আযানের দোয়া বাংলা অর্থসহ

আযান শোনার আজানের জবাব ও দোয়া পড়া সুন্নত। আযানের জবাব ও দোয়ার ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস শরীফে সহিহভাবে বর্ণনা করা আছে।

রাসুল সাঃ বলেন, “যে ব্যক্তি আজান শোনার পর ‘আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ…. এই দোয়াটি তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।” (বুখারি, হাদিস: ৬১৪)

আযান শোনার পরে যে দোয়াটি পড়তে হয় সেটি হলো

ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪ

উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-জিহিদ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-য়িমাতি, আ-তি মুহাম্মাদান আল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা, ওয়াব‘আসহু মাকা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়াআদতাহ’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই প্রভু! মুহাম্মদ (স.)-কে অসিলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফজিলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন।’ (বুখারি: ১/২৫২,নং ৬১৪)

আযানের জবাব না দিলে কি গুনাহ হয়

আজানের জবাব ও দোয়া পড়া সুন্নত।প্রতি ওয়াক্তে আযান শোনার পর আজানের জবাব দেওয়া খুবই ফজিলতপূর্ণ আমল। আজানের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে অলসতা করা উচিত নয়।

আজানের জবাবের বিষয়ে আবু সাঈদ খুুদরি রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুল সাঃ বলেন, “যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলবে।” (বুখারী ৩৯৯)

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজে যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

কেউ যদি নিয়মিত আযানের ওপর জবাব দেয় তাহলে সে সুন্নতের উপর আমল করে সুন্নত আদায়ের সোয়াব পাবে। কিন্তু আজানের জবাব না দিলে কোন গুনাহ নেই। আজানের জবাব দেওয়ার সাথে নামাজের কোন সম্পৃক্ততা নেই।আযানের জবাব না দিলেও নামাজ শুদ্ধ না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই ।

ফজরের আযানের জবাব নিয়ম

আযানের জবাব ও দোয়া পড়া সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে আযানের জবাব দেওয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ। শুধুমাত্র শরীয়তের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন অবস্থায় ছাড়া সকল অবস্থায় আজান শোনামাত্র আযানের জবাব দেওয়া যাবে। ফজরের আযানের জবাব দেওয়ার সময় মুয়াজ্জিন আযানের বাক্যগুলো যেভাবে বলবেন অনুরূপভাবে সকল বাক্য শ্রোতাকেও বলে জবাব দিতে হবে।

ফজরের নামাজের আযানে “আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” এর জবাবে সাদাকতা ও বারারতা পড়ার জন্য অনেক হাদিসেই নির্দেশ করা হয়েছে। কিন্তু কুরআন ও সুন্নাহের কোন প্রমাণ এর উপর পাওয়া যায়নি। সুতরাং বিশুদ্ধ মতানুসারে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ শ্রোতা আজানের জবাবে “আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” বলবে।

ফজরের আযানের সময়

ফজরের আযানের সময় শুরু হয় সুবহে সাদিক হওয়ার সাথে এবং উদয়ের আগ পর্যন্ত নামাজের সময় থাকে। ফজরের আযান কানে শোনার পর আযানের জবাব ও দোয়া পড়ে অজু করে সূর্য ওঠার আগেই ফজরের নামাজ পড়তে হবে।

ফজরের নামাজ রাকাত

১)দুই রাকাত সুন্নত।

২)দুই রাকাত ফরজ।

প্রথম দুই রাকাত সুন্নত। দ্বিতীয় দুই রাকাত ফরজ।

আজকে ৭ অক্টোবর ২০২৪,সোমবার আজকের ফজরের আজানের সময় ভোর  ৪:৩৯ মিনিটে।নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়  ৪:৩৯ মিনিটে এবং শেষ হয় ভোর ৫:৫১ মিনিটে।

মাগরিবের আজানের সময়

সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় মাগরিবের ওয়াক্ত। পশ্চিম আকাশে সূর্য যখন অস্ত যায় তখনই মাগরিবের আজানের সময়। মাগরিবের আজান সোনার পর আযানের জবাব ও দোয়া পড়ে মাগরিবের নামাজে দাঁড়াতে হবে।

মাগরিবের নামাজ ৭ রাকাত। প্রথম তিন রাকাত ফরজ তারপরের দুই রাকাত সুন্নত। তারপরের দুই রাকাত নফল। তবে মুসাফির অবস্থায় থাকলে শুধুমাত্র তিন রাকাত ফরজ আদায় করতে পারবে।

আজকের মাগরিবের আজানের সময় ছিল ৫:৪২ মিনিটে।

প্রশ্ন উত্তর

আজানের ফজিলত কি?

নামাজের জন্য যেই ধ্বনির দ্বারা নামাজের আহ্বান করা হয় সেটি হলো আজান। মুসলমানদের জন্য আজান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আজানের ফজিলত সম্পর্কে বুখারী হাদিসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন নামাজের আহবান করার জন্য আযান দেওয়া হয় তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পালায় যাতে সে আজানের শব্দ না শুনে।”

আযান দেওয়া কি?

আযান দেওয়া হচ্ছে নামাজের জন্য আহ্বান করা। আজান একটি আরবি শব্দ। মুসলমানদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য মাইকে মোয়াজ্জিন আজান দেওয়ার মাধ্যমে নামাজের জন্য ডাক দেন।

আজানের পরে কি দোয়া পড়তে হয়?

রাসুল সাঃ বলেন, “যে ব্যক্তি আজান শোনার পর ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-জিহিদ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-য়িমাতি, আ-তি মুহাম্মাদান আল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা, ওয়াব‘আসহু মাকা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়াআদতাহ’ এই দোয়াটি তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।” (বুখারি, হাদিস: ৬১৪)

শেষ কথা –

আযানের জবাব ও দোয়া সম্পর্কে অনেক মুসলমান ভাই-বোনেরাই জানতেন না। আজানের জবাব ও দোয়া জানা মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি ফজিলত সম্পূর্ণ আমল। আজকের আর্টিকেলে আমরা আযানের ও দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।এই সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের কমেন্ট করতে পারেন।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম জেনে নিন

মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ  সম্পর্কে জেনে নিন

তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ

এশার নামাজ মোট কয় রাকাত ও কি কি? পড়ার নিয়ম এবং দোয়া

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️IMO চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

Welcome to our banking tips blog! I'm Sanaul Bari, a passionate financial educator and experienced banking professional dedicated to helping individuals and businesses navigate the complex world of finance. With over a decade of experience in the banking industry, I’ve held various positions, from customer service representative to financial advisor, gaining a comprehensive understanding of banking products, services, and strategies.

Leave a Comment