ডিজিটাল যুগে এখন সবকিছু তথ্যপ্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তাইতো দিন দিন কম্পিউটারের ব্যবহার ও বেড়ে চলেছে। কম্পিউটার ব্যবহার করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া এখন কঠিন। তবে এর যেমন ব্যবহারও বেড়েছে তার সাথে সাথে এর সমস্যাগুলো বেড়েছে। কম্পিউটারের ব্যবহারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কম্পিউটার ভাইরাস। তাই আজকের পোস্টে আপনারা কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আজকের পোস্টে যা যা থাকছে কম্পিউটার ভাইরাস কি, কম্পিউটার ভাইরাসের প্রকারভেদ, গুরুত্বপূর্ণ কিছু কম্পিউটার ভাইরাসের নাম,কম্পিউটার এন্টিভাইরাসের নাম সহ বিভিন্ন বিষয়ে। সম্পূর্ণ বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
কম্পিউটার ভাইরাস কি?
কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন একটি প্রোগ্রাম যা কম্পিউটার ব্যবহারকারীর বিনা অনুমতিতে কম্পিউটারকে সংক্রমিত করে এবং ধীরে ধীরে পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে যার।Computer virus এর মূল কাজ হলো আপনার কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে ফাইল গুলো মোডিফাই করে ক্ষতিকর কিছু প্রোগ্রাম লিখে দেয়।
এই ক্ষতিকর প্রোগ্রাম লেখার ফলে কম্পিউটারে সেই ভাইরাস কাজ করতে শুরু করে। হঠাৎ দেখবেন, আপনার কম্পিউটার নির্দেশনা ছাড়া কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে।এই প্রোগ্রাম বা ভাইরাস কিভাবে আপনার কম্পিউটারে ঢুকলো সেটা আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না।
কম্পিউটার ভাইরাসের ইতিহাস ও আবিষ্কারক
Robert Thomas নামক এক ব্যক্তি ১৯৭১ সালে, কম্পিউটার ভাইরাস তৈরি করেন। এনি কম্পিউটারকে ডেভলপ করবার জন্য এই ধরনের একটি মজাদার ভাইরাস তৈরি করেছিলেন। যেটি পরবর্তীকালে খারাপ প্রোগ্রামাররা ডেভেলপ করে কম্পিউটারের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
এই ভাইরাস বা প্রোগ্রামটির নামকরণ করা হয়েছিল ‘Creeper‘ Virus।
এরপর ১৯৮২ সালে, Richard Skrenta নামক এক ব্যক্তি Floppy Disks এর মাধ্যমে Apple II Operating Systems কে Infect করেন। কিন্তু এই ভাইরাসকে তৈরি হয়েছিল Prank বা মজা করবার জন্য। সুতরাং এটি ছিল একটি Malicious Programs।পরবর্তীকালে ১৯৮৩ সালে এই Malicious Programs টির, Fred Cohen নামক এক ব্যক্তি নামকরণ করেন। এবং এই ভাইরাসের নাম রাখেন Computer Virus।
কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার?
কম্পিউটার ভাইরাস এর ক্ষমতা অনুযায়ী এবং সেটি কোন জায়গায় বিশেষ ভাবে সমস্যা তৈরি করতে পারে, এই পদ্ধতি অনুযায়ী কম্পিউটার ভাইরাসকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়।
কম্পিউটার ভাইরাস মূলত ৯ ধরনের। এগুলি হল-
- Boot Sector Virus
- Resident Virus
- Macro Viruses
- Direct Action Virus
- Polymorphic Virus
- Overwrite Virus
- Polymorphic Viruses
- File Infectors Virus
- Multipartite Virus
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
১।Boot Sector Virus
এই ধরনের ভাইরাস Removable Media যেমন Usb, CD, Pen Drive এর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এই ধরনের ভাইরাস কম্পিউটার থেকে ডিলিট করা খুবই কঠিন কাজ। এই জন্য এই ধরনের ভাইরাস কম্পিউটার থেকে দূর করার জন্য পুরো কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম কে ফরমেট করার প্রয়োজন পড়ে। কোন রিমুভাল মিডিয়া থেকে কম্পিউটারে বুট করার সময়, এই ধরনের ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করে।।
২।Resident Virus
কোনো Untrusted ওয়েবসাইট থেকে গেম, অ্যাপ্লিকেশন বা কোনো ফাইল ডাউনলোড করবার সময়, সেই ফাইলের মধ্যে থেকে কম্পিউটার প্রবেশ করে। এবং কিম্বা এপ্লিকেশন ইন্সটল হওয়ার সময় ভাইরাসটিও কম্পিউটারে ইন্সটল হয়ে যায়। এই ধরনের ভাইরাস খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল।
৩।Macro viruses
যে সকল অ্যাপ্লিকেশন Macro Language Commands সাপোর্ট করে, শুধুমাত্র সেই সকল অ্যাপ্লিকেশনেই এই ধরনের ভাইরাস ক্ষতিসাধন করতে পারে। যেমন Microsoft Excel, Microsoft Word ইত্যাদি।
৪।Direct Action Virus
এটি Malware ওয়েবসাইট থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করবার সময় সেই ফাইল এর মধ্যে থেকে কম্পিউটারে প্রবেশ করে। তবে এই ধরনের ভাইরাস শুধুমাত্র কম্পিউটারের নির্দিষ্ট ফাইলকেই Interect করতে পারে। এটি কম্পিউটার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এবং অপারেটিং সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে না।
৫।Polymorphic Virus
এই ধরনের ভাইরাস Identity করা খুবই মুশকিল কাজ। কোন সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার দ্বারা এদিকে আইডেন্টি করা সম্ভব নয়। তাই কম্পিউটার থেকে এ ধরনের ভাইরাস Remove করার জন্য হাই কোয়ালিটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। কারণ এই ধরনের ভাইরাস সর্বদাই তার Pattern পরিবর্তন করে থাকে।
৬।Overwrite Virus
এই ধরনের ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করলে সমস্ত ফাইল, অটোমেটিক একে একে ডিলিট হয়ে যেতে শুরু করে। এইজন্য ইউজারকে সমস্ত Infected Files গুলি ডিলিট করে দিতে হয়। নির্দিষ্ট কম্পিউটারের Data Loss করবার জন্য এই ধরনের ভাইরাস প্রবেশ করানো হয়। এবং এই ধরনের বাইরে সাধারণত ইমেইল এর দ্বারা পাঠানো হয়ে থাকে।
৭।Polymorphic Viruses
বড় বড় Cybercriminals এই ধরনের ভাইরাস ব্যবহার করে থাকে। এই ধরনের ভাইরাস খুঁজে বের করার জন্য, High Protected Anti-Malware সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। কারণ Normal Anti-Malware সফটওয়্যার এটিকে খুঁজে বের করার সাথে সাথেই, এই ভাইরাস নিজে নিজে Modify হয়ে নতুন রূপ ধারণ করে।
৮।File infectors Virus
এই ধরনের ভাইরাস নির্দিষ্ট ফাইলের মধ্যে থাকে। এবং কোন নির্দিষ্ট ফাইল তৈরি করার সময় প্রোগ্রামাররা এই ধরনের ভাইরাস তৈরি করে সেই ফাইলের মধ্যে রেখে দেয়। এবং কম্পিউটারে পার্টিকুলার প্রোগ্রাম বা ফাইল Run করবার সময়, ওই ফাইলে থাকা ভাইরাসটিও কম্পিউটারে Install হয়ে যায়।
৯।Multipartite Virus
এই ধরনের ভাইরাস বিভিন্ন প্রকারে কম্পিউটারের ক্ষতি করবার চেষ্টা করে। এটি Executable Files এবং Boot Sector কে একসাথে Infect করে থাকে।
কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশের মাধ্যমে গুলো
কম্পিউটারে কিভাবে ভাইরাস ঢুকে সেটা হয়তো আমাদের অনেকের অজানা। যার কারণে আমাদের কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রমণ করে।
তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করার কিছু মাধ্যমে সম্পর্কে।
(১) ইউ এস বি (USB) ডিভাইসের মাধ্যমে
আমরা কম্পিউটারে বিভিন্ন সফটওয়্যার, অডিও, ভিডিও বা অন্যান্য ডকুমেন্ট গুলো কপি করে নেওয়ার জন্য অন্যের পেন ড্রাইভ (pen drive) ব্যবহার করি।
এই পেন ড্রাইভের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকতে পারে। তাছাড়া, আপনি নিজেও জানেন না এই পেন ড্রাইভে ভাইরাস মুক্ত কিনা।
(২) ইন্টারনেটের মাধ্যমে
কম্পিউটারে আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তখন বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট গুলোতে প্রবেশ করতে হয়। এই ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।
সাধারণত ৭০% ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে adware, spyware এবং malware ভাইরাস গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রবেশ করে।
(৩) ইমেইলের মাধ্যমে
আপনার ইমেইল বক্স প্রতিদিন চেক করে দেখবেন কত ধরনের মেইল আসে। এই ইমেইলের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ বা ঢুকতে পারে।
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কি কি?
কম্পিউটার ভাইরাস গুলোর মধ্যে এমন অনেক ভাইরাস রয়েছে যে গুলো কম্পিউটারে প্রবেশ করলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।কারণ, এক একটি ভাইরাসের এক একটি লক্ষণ দেখা যায়। আসলে এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনার কম্পিউটারে কোন ভাইরাস প্রবেশ করেছে সেটার উপর।আপনি কম্পিউটারে যদি ইন্টারনেট চালু করলে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পান তাহলে বুঝতে হবে adware virus আপনার কম্পিউটারে আক্রমণ করেছে।
এমন ভাবে এক একটি ভাইরাসের লক্ষণ এক এক ধরনের হয়ে থাকে। তবে, নিচে কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকলে বুঝবেন এমন কিছু লক্ষণ নিচে উল্লেখ করেছি।
- কম্পিউটার স্লো (slow) কাজ করবে।
- কম্পিউটার ওপেন (open) হতে অনেক বেশি সময় নিবে।
- কম্পিউটার নিজে নিজে রিস্টার্ট হয়ে যাবে।
- কম্পিউটার চলতে চলতে হটাৎ হ্যাং (hang) হয়ে যাবে।
- সফটওয়্যার গুলো ওপেন হতে সময় লাগবে।
- ইনস্টল (install) করা সফটওয়্যার আনইনস্টল (uninstall) করতে পারবেন না।
- ইন্টারনেট চালু করলে হঠাৎ বিজ্ঞাপন চলে আসবে।
কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে প্রতিরোধের করা যায়
কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকতে বাধা দেওয়া বা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।সাধারণত কম্পিউটারে ৭০% ভাইরাস ঢুকে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে। কিন্তু, এই ভয়ে তো আমরা আর ইন্টারনেট ব্যবহার করা বাদ দিতে পারবো না।তবে, কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক ভাবে থাকতে হবে। তাছাড়া নিচের নিয়ম গুলো মেনে চলুন।
- কম্পিউটারে অবশ্যই পেইড এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।
- এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার সব সময় আপডেট (up to date) রাখবেন।
- ইন্টারনেটে থাকা বিশ্বাস্ত ওয়েবসাইট থেকে সফটওয়্যার সহ অন্যান্য ডাটা ডাউনলোড করবেন।
- অন্যের USB ড্রাইভ ব্যবহার করার সময় যাচাই করে নিন ভাইরাস আছে কিনা।
- কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ইন্টারনেট সিকিউরিটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ
কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের তালিকা
কম্পিউটারের ক্ষতি করার জন্য অনেক ধরনের কম্পিউটার ভাইরাস রয়েছে এবং সেই কম্পিউটার ভাইরাস কে প্রতিরোধ করার জন্য, এন্টিভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। সবথেকে ক্ষতিকর কম্পিউটার ভাইরাস এবং পপুলার অ্যান্টিভাইরাস এর তালিকা নিচে দেওয়া হল।
কম্পিউটার ভাইরাসের তালিকা
পৃথিবীর সবথেকে বিষাক্ত কম্পিউটার ভাইরাস গুলির তালিকা নিচে দেওয়া হল। এগুলি হল সবথেকে বিষাক্ত কম্পিউটার ভাইরাসের নাম।
- Morris Worm
- Nimda
- CryptoLocker
- SQL Slammer
- ILOVEYOU
- Stuxnet
- Conficker
- Welchia
- Tinba
- Shlayer
এন্টিভাইরাসের তালিকা
আজকের দিনে যে সমস্ত অ্যান্টিভাইরাস গুলো সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় এবং যে সমস্ত অ্যান্টিভাইরাসগুলি সবথেকে বেশি কার্যকরী সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
- Bitdefender Antivirus Plus
- Avira Antivirus Pro
- Webroot SecureAnywhere AntiVirus
- F-Secure Antivirus SAFE
- G-Data Antivirus
- Norton AntiVirus Plus
- Kaspersky Anti-Virus
- Trend Micro Antivirus+ Security
কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য
কম্পিউটার ভাইরাস অনেক ধরনের প্রোগ্রাম যেটি কম্পিউটারের মধ্যে প্রবেশ করে কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
অ্যান্টিভাইরাস এ ধরণের software যেটি, কম্পিউটারের ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার গুলি খুঁজে বের করার পর সেগুলিকে কম্পিউটার থেকে Remove করার কাজ করে।
কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার কে ডেমেজ করার জন্য তৈরি করা হয় এবং অ্যান্টিভাইরাস, ভাইরাসের হাত থেকে কম্পিউটারকে Damage হওয়া থেকে রক্ষা করতে কাজে আসে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কম্পিউটার ভাইরাস
(১) Cryptolocker
২০১৩ সালে ইমেইল অ্যাটাচমেন্টের মাধ্যমে এই ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাস আক্রমণের ফলে কম্পিউটারের ফাইল গুলো ব্লক করে দেয়।
এবার কম্পিউটারের স্কিনে একটা অফার দেখতে পাবেন যেখানে বলা হবে অর্থের বিনিময়ে আপনি কম্পিউটারের ডাটা গুলো ফেরত নেওয়ার জন্য।
Cryptolocker ভাইরাসের প্রধান কাজ কম্পিউটারের ডাটা গুলো জিম্মি করে অর্থ আদায় করা। আপনি চাইলে কম্পিউটার থেকে এই ভাইরাস ডিলিট করে দিতে পারবেন কিন্তু ডাটা গুলো ফেরত নিতে পারবেন না।
২০১৪ সালে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার আগে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে এর মূল হোতা।
(২) Sasser & Netsky
মাত্র ১৭ বছর বয়সে জার্মানির এক কিশোর দুটো প্রোগ্রাম তৈরি করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। এই দুইটা প্রোগ্রামের মধ্যে তেমন কোনো মিল না থাকলেও কোডিং মিল ছিলো।
যার ফলে নিরাপত্তা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সহজে বুঝতে পারেন এই দুইটা প্রোগ্রাম তৈরি করেছে একই ব্যাক্তি।
এই ভাইরাস ছড়ানো হলো ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে। আপনার কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের সিস্টেমের সাথে সংযোগ স্থাপন করে স্যাসার ডাউনলোড করতে বাধ্য করবে।
এভাবে স্যাসার পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। একবার পুরো কম্পিউটারে স্যাসার ছড়িয়ে পড়লে সেটা বন্ধ করা সম্ভব হতো না।
তখন এটাকে প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হলো কম্পিউটারের পাওয়ার ক্যাবল খুলে ফেলা। এটা মূলত ইমেইল এবং উইন্ডোজ ব্যবহার করে ছড়িয়ে পড়ে।
(৩) Storm Worm
২০০৬ সালের দিকে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে বের করেন। Storm Worm হচ্ছে এক ধরনের ট্রোজান হর্স প্রোগ্রাম।
এর কিছু সংস্কারণ কম্পিউটারকে সয়ংক্রিয় রোবটে পরিনত করে। কম্পিউটার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে পুরো নিয়ন্ত্রণ ভাইরাসের হোতা নিয়ে নেই।
২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকের কিছু দিন আগে ইমেইলের মাধ্যমে এর নতুন সংস্কারণ ছড়িয়ে পড়ে। ইমেইলের মাধ্যমে লেখা গুলো এমন থাকতো যাতে যেকেউ দেখে ইমেইল ওপেন করবো।
(৪) Nimda
২০০১ সালে এই nimda virus এর যাত্রা শুরু হয়। এই ভাইরাস এতোটাই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিলো যে অন্য ভাইরাসের রেকর্ড ভাঙতে মাত্র ২২ মিনিট সময় নিয়েছিলো।
প্রথমে এটা ইন্টারনেট সার্ভারকে লক্ষ্য করে ইন্টারনেটে ঢুকে পড়ে। তারপর ইমেইলের মাধ্যমে ও কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
এই ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করে পুরো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় যিনি ভাইরাস তৈরি করেছেন সেই হোতা।
(৫) MyDoom
Nimda virus এর মতো আর একটি ভাইরাস হলো মাইডুম। মূলত এই ভাইরাস দুইটি ধাপে ইন্টারনেটে প্রবেশ করে।
এই ভাইরাস কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে কম্পিউটার থেকে ডাটা চুরি করার জন্য চোরকে দরজা খুলে দেয়।
(৬) The Klez Virus
২০০১ সালের শেষের দিকে এই ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাসের আক্রমণে কয়েক মাস ধরে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা তটস্থ হয়েছিল।
অন্যান্য ভাইরাস গুলোর মতো এই ভাইরাস ইমেইল এবং মেসেজের মাধ্যমে কম্পিউটারকে আক্রমণ করতো।
(৭) Code Red and Code Reed 2
২০০১ সালে এই দুইটা ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাস কম্পিউটারে buffer overflow problem সৃষ্টি করতো।
এর ফলে কম্পিউটার যতটুকু বাফার নিয়ন্ত্রণ করে তার থেকে বেশি বেশি ডাটা গ্রহণ করতে শুরু করে।
(৮) Melissa
১৯৯৯ সালে ডেভিড এল স্মিথ নামে এক ব্যাক্তি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ভিত্তিক এই melissa virus তৈরি করেন। তিনি এমন ভাবে এটাকে তৈরি করেন যাতে সহজে ইমেইল এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
ডেভিড এল স্মিথ পরবর্তী সময়ে পুলিশের হাতে এই ভাইরাস তৈরি করার জন্য ধরা পড়েন। এর জন্য তাকে ২০ মাসের জেল এবং ৫০০ ডলার জরিমানা করা হয়।
(৯) ILoveYou
আই লাভ ইউ ভাইরাস কে তৈরি করেন তাকে খুঁজে বের করা যায়নি। তবে, অনেকে ধারণা করেন ওনার দে গজম্যান এই ভাইরাস তৈরি করেছেন।
এই ভাইরাস ইমেইলের মাধ্যমে কম্পিউটার ছড়িয়ে দেওয়া হতো। ইমেইলে আপনাকে এমন রোমান্টিক ভাবে মেইল করা হবে যাতে আপনি মেইল ওপেন করেন।
(১০) SQL Slammer
২০০৩ সালে জানুয়ারি মাসে এই নতুন ভাইরাস SQL Slammer কম্পিউটারের ওয়েব সার্ভারে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কম্পিউটার ডিভাইস গুলো মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
যার ফলে ব্যাংক অব আমেরিকা এর এটিএম সার্ভার ক্রাশ করে নিয়েছিলো। ধারণা করা হয় এই ভাইরাসের কারণে ১ বিলিয়ন এর বেশি ডলার ক্ষতি হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উওর
১।কম্পিউটার ভাইরাস কোনটি?
কম্পিউটার ভাইরাস ফ্লপি ডিস্ক, পেনড্রাই, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ায়। কয়েকটি ভাইরাসের নাম-Aids, Bye Bye, Bad Boy, Cindrella, CIH, I Love You ইত্যাদি। সিআইএইচকে মাদার অব অল ভাইরাস বলা হয়।
২।কম্পিউটার ভাইরাস কি বা কাকে বলে?
কম্পিউটার ভাইরাস হল এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ব্যবহারকারীর অনুমতি বা ধারণা ছাড়াই নিজে নিজেই কপি হতে পারে বা নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে। মেটামর্ফিক ভাইরাসের মত তারা প্রকৃত ভাইরাসটি কপিগুলোকে পরিবর্তিত করতে পারে অথবা কপিগুলো নিজেরাই পরিবর্তিত হতে পারে।
৩।কম্পিউটার ভাইরাসের নামকরণ করা হয় কত সালে?
এরপর থেকে এই প্রোগ্রাম িনিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলে। ১৯৮৩ সালে ফ্রেডরিক বি কোহেন এমন একটি প্রোগ্রাম আবিষ্কার করেন যেটি নিজের প্রতিরূপ নিজে তৈরি করতে সক্ষম। তিনি তার শিক্ষক লিউনার্দো অ্যাডেলম্যানের পরামর্শে এর নাম দেন কম্পিউটার ভাইরাস।
৪।কম্পিউটার ভাইরাস সৃষ্টির কারণ কি?
এখানে কম্পিউটার ভাইরাসের কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে: সন্দেহজনক ইমেল সংযুক্তি খোলা । অসুরক্ষিত অপসারণযোগ্য বা বাহ্যিক স্টোরেজ ডিভাইস সংযুক্ত করা (যেমন, ফ্ল্যাশ ড্রাইভ, বাহ্যিক হার্ড ড্রাইভ, মেমরি কার্ড) দূষিত ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস কর।
৫।কম্পিউটারের জন্য প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাস কোনটি ?
MS-DOS-এর জন্য প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস ছিল “Brain” এবং এটি 1986 সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ফ্লপি ডিস্কে বুট সেক্টরকে ওভাররাইট করবে এবং কম্পিউটারকে বুট হতে বাধা দেবে। এটি পাকিস্তানের দুই ভাই দ্বারা লিখিত এবং মূলত একটি অনুলিপি সুরক্ষা হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল।
শেষকথা
আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা অনেক। তবে জীবনযাত্রাকে সহজ করার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে নানা দিক সমস্যা। তবে সচেতনতা ও সতর্কতার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো থেকে বাঁচা যায়। সঠিকভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করলে এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে চলা যায়। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনারা কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।
এই ভাইরাস গুলো কিভাবে কাজ করে এবং এ থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায় গুলো আপনাদের উপকারে আসবে। সঠিকভাবে সব কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনার কম্পিউটার ব্যবহার অনেক সহজ হবে এই আশায় করছি।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-
প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নাম্বার জেনে নিন-২০২৪ পূবালী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।