ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার ও কি কি জেনে নিন

Rate this post

ডিজিটাল যুগে লেনদেনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এখন ক্রেডিট কার্ড। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়ায় কঠিন।

বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক এবং আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করছে। এই ক্রেডিট কার্ড গুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করা যায়। তবে অনেকেই জানে না ক্রেডিট কার্ড বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আজকের পোস্টে আমরা জানানোর চেষ্টা করব   ক্রেডিট কার্ড কি, ক্রেডিট কার্ড কয় ধরনের, ক্রেডিট কার্ড করতে কি কি লাগে, কারা ক্রেডিট কার্ড করতে পারে, কিভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারিত হয় সম্পর্কে বিস্তারিত ।

ক্রেডিট কার্ড কি?

ক্রেডিট কার্ড হলো মূলত একটি চিপ-ভিত্তিক প্লাস্টিকের কার্ড (সাধারণত) যাতে ক্রেডিট কার্ডধারীর নাম, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, মেয়াদ শেষ এর তারিখ, সিভিভি, ক্রেডিট কার্ডধারীর স্বাক্ষর এই যে এটা দেখছিস এবং কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের বিবরণ, ইত্যাদি তথ্য দেওয়া থাকে।

ক্রেডিট কার্ড মূলত কার্ডধারীর অর্থ ব্যয়ের সুবিধা নিশ্চিত করে। ব্যবহারকারী যখন কোনো অর্থ প্রদানের জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, তখন উক্ত অর্থ সেভিংস/কারেন্ট একাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়না। বরং খরচ করা অর্থ ব্যাংক বা কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান আপনাকে বাকিতে লেনদেনের সুবিধা দিয়ে থাকে।

অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ড এর কাজই হচ্ছে ব্যবহারকারীদের বাকিতে লেনদেনের সুবিধা প্রদান করা। প্রতিটি ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রে আগে থেকেই ঠিক করে দেওয়া ক্রেডিট লিমিট থাকে। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট অংকের লেনদেনের পর আর ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ খরচ করা যায়না। ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করার পর আবার এটি ব্যবহার করা যায়। সাধারণত এক মাসের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরের মাসের কোনো এক সময়ে প্রদান করতে হয়।লেখা শেষ কর তাড়াতাড়ি তারপর বসে থাকব তো

ক্রেডিট কার্ড করতে কি কি লাগে

আমাদের দেশে ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদনকারীর কিছু সাধারণ যোগ্যতা যাচাই করা হয়।  এছাড়াও আরো কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রয়েছে সেগুলো নীচে উল্লেখ করা হলো।

-জাতীয় পরিচয় পত্র।

-টিআইএন (TIN)সার্টিফিকেট।

-চাকুরিজীবীদের জন্য আ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার, স্যালারি সার্টিফিকেট এবং ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে৷

-ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স, Memorandum of Association ৩ মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশন স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে।

এছাড়াও আপনার যদি আগে থেকেই কোনো ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট থাকে।

কারা ক্রেডিট কার্ড পেতে পারে

ক্রেডিট কার্ডে প্রথমে আপনার জন্য কিছু অর্থ ডিপোজিট থাকে। সেই অর্থ আপনি নিজের ইচ্ছামতো খরচ করতে পারেন। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই ঋণ ব্যাংকে পরিশোধ করতে হয়।কারা ক্রেডিট কার্ড পেতে পারে তা দেওয়া হল –

১. ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে প্রথমে আপনাকে একটা ব্যাংক একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে।

২. একাউন্ট খোলার পর আপনার একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখতে হবে।

৩. একাউন্টে টাকা জমা রাখার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে ক্রেডিট কার্ড এর জন্য।

৪. এরপর তারা আপনার আয়ের উৎস ও কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা যাচাই করে আপনাকে একটি ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করবে।

৫. এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ক্রেডিট কার্ড পেয়ে যাবেন।

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে ব্যবহার করবেন

একটা ক্রেডিট কার্ডের জন্য এর সঠিক ব্যবহারটা জানা অনেক জরুরী। আপনি যদি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি সঠিক ব্যবহার না করতে পারেন তবে বিভিন্ন ধরনের করতে পারেন। তাই এই সকল সমস্যা এড়ানোর জন্য ক্রেডিট কার্ডের সঠিক ব্যবহারটি জেনে নিন।

  1. এক্টিভেশন

ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের কাছে একটি লোনস্বরূপ। যখন কোনো ব্যাংক আপনাকে একটি ক্রেডিট কার্ড দিবে তখন প্রথমেই আপনাকে এটি এক্টিভ করতে হবে। কার্ড এক্টিভ না হলে সেটি দিয়ে আপনি লেনদেন করতে পারবেন না।

  1. পাসওয়ার্ড

ক্রেডিট কার্ড অথবা ডেবিট দুই ক্ষেত্রেই শুরুতে আপনাকে ৪ ডিজিটের একটি পিনকোড সেট করতে হবে। তাই ক্রেডিট কার্ড একটিভ করার সময় ৪ ডিজিটের একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং নাম্বারটি মনে রাখুন। কখনো এই পিনকোড কাউকে বলবেন না।

  1. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ

ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার সময় প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্টস জমা দিতে হয়। ডকুমেন্টসগুলির অনুকপি নিজের কাছে যত্নে রাখবেন। কার্ডের যেকোনো সমস্যা হলে উক্ত ডকুমেন্টসগুলি দরকার হবে।

  1. নিশ্চিন্তে কেনাকাটা

অনলাইনে তো বটেই অফলাইনেও বিভিন্ন স্টোরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করা হয়। ক্রেডিট কার্ড সচল থাকলে অনলাইন ও অফলাইন, যেকোনো জায়গায় আপনি খুব সহজেই বিল পে করতে পারবেন।

  1. ক্রেডিট কার্ডের খরচ শর্ত

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের উপর কিছু চার্জ প্রযোজ্য থাকে। তাই অবশ্যই এটি ব্যবহারের আগে এর চার্জ ও শর্ত জানুন।

  1. গোপনীয়তা নিশ্চিত করুন

ক্রেডিট কার্ড এর বিভিন্ন ইনফরমেশন খুব সেনসিটিভ একটা বিষয়। মাথায় রাখবেন কোনোভাবেই যেন এই তথ্যগুলো প্রকাশ না হয়। বিশেষ করে আপনার পিনকোডের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন।

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করার আগে অবশ্যই ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে সকলের জানা উচিত। সবকিছু যেমন ভালো দিক আছে তেমন মন্দ দিকও আছে। অসুবিধা সমূহ সম্পর্কে জেনে সচেতন হওয়ায় ভালো। তবে এর সুবিধা অনেক তাইতো আজ আপনারা এই লেখা থেকে জানতে পারবেন এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ –

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা-

১।দ্রুত লেনদেন

অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার না করে কার্ড ব্যবহার করে হাতে থাকা অর্থের চেয়ে বেশি দামে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা।

২।পুরস্কার পয়েন্ট বিশেষ করে বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে এটি খুবই আকর্ষণীয়, যে সুবিধা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করলে পাওয়া যায়।

৩।নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি থেকে মুক্তি।

৪।অধিকতর নিরাপদ

প্রচলিত ডেবিট কার্ডের চেয়ে ক্রেডিট কার্ডের সুরক্ষা অনেক বেশি।

ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা-

১।অতিরিক্ত খরচের মানসিকতা

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক খরচের মানসিকতা সৃষ্টি হতে পারে। যেহেতু ক্রেডিট কার্ডের মূল লক্ষ্য আপনার জমানো টাকার বাইরে খরচের সুবিধা প্রদান করা, তাই হিসাব করে খরচ না করার ফলে বাড়তি খরচের অভ্যাস তৈরী হতে পারে, যেটা অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতি বয়ে আনে।

২।ঋণ

ক্রেডিট কার্ডে অতিরিক্ত খরচের ফলে ঋণের কবলে পড়তে পারেন। নিয়মিত খরচের হিসাব না রাখলে অল্প সময়ের মধ্যে অর্থের স্বল্পতায় ভোগার পাশাপাশি অতিরিক্ত ঋণ জমে যেতে পারে। তাই যে পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব, শুধুমাত্র সে পরিমাণ অর্থ খরচ করাই শ্রেয়। মনে রাখতে হবে, ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু ধার করা অর্থ ব্যবহার করছেন। সুতরাং হিসাব রেখে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করলে ঋণের মুখোমুখি হতে বেশি সময় লাগবেনা।

৩।ফি ইন্টারেস্ট

ক্রেডিট কার্ডের ফি ও ইন্টারেস্ট এমন দুইটি বিষয় যা ব্যবহারকারীর অজান্তেই বাড়তে পারে। বিশেষ করে ইন্টারেস্ট বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে চলে যেতে পারে যে তা ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

ইন্টারেস্ট এর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী দেরিতে পেমেন্ট, ব্যালেন্স ট্রান্সফার, ক্যাশ এডভান্স, ফরেইন ট্রানজেকশন, ইত্যাদি বিষয়ে ফি চার্জ করে থাকে। কিছু ইস্যুকারী তো এমনকি শুধুমাত্র কার্ড ব্যবহারের জন্য বার্ষিক ফি চার্জ করে।

ক্রেডিট কার্ড প্রকারভেদ

আমাদের প্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকি।তবে অনেকেই জানে না ক্রেডিট কার্ডের প্রকারভেদ। ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে আপনি কোন কাজের জন্য ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করতে চান। নিচে নয় প্রকারের ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হল –

১।লো ইনকাম আর্নারের ক্রেডিট কার্ড

২।ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড

৩।শপিং ক্রেডিট কার্ড

৪।এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড

৫।রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড

৬।ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড

৭।ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড

৮।এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড

৯।সেক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড

ক্রেডিট কার্ডের বর্ণনা থেকে আপনারা ধারণা পাবেন আপনাদের ব্যবহৃত ক্রেডিট কার্ডটি  কোন ধরনের হওয়া উচিত।নিচে বিভিন্ন প্রকারের ক্রেডিট কার্ডের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –

১।লো ইনকাম আর্নারের ক্রেডিট কার্ড

যে সকল লোকের মাসিক ইনকাম ২৫ হাজার টাকার নিচে তারা সহজে এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। উক্ত লো ইনকাম আর্নরের ক্রেডিট কার্ড এর বাষিক ফি টাকার পরিমাণ অনেক কম থাকে।

ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও এই ধরনের ক্রেডিট কার্ডের যোগ্যতা শর্তাবলী গুলো যথেষ্ট সহজ হয়ে থাকে।

আর বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এই কার্ডগুলো থেকে বেশ ভালো সুবিধা গ্রহণ করা যায়।

২।ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড

আপনাকে যদি মাঝে মাঝে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক যাত্রা করতে হয় সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্রেডিট কার্ড রাখা আপনার পক্ষে অনেক লাভজনক।

আপনি এই ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড থেকে এয়ারলাইন টিকেট বুকিং ছাড় পেয়ে যাবেন।

তাছাড়া এয়ারলাইন থেকে দেওয়া বিভিন্ন বিশেষ সার্ভিস এবং কম বৈদেশিক টাকা লেনদেনের ফি, রেন্টাল সার্ভিস এবং হোটেল বুকিং করতে ভালো ছাড় পেয়ে যাবেন।

তাই এই ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড থেকে আপনি প্রতি খরচে ভালো রেওয়ার্ড গ্রহণ করতে পারবেন। আর আপনার পাওয়া রেওয়ার্ড গুলো আপনি পরবর্তী বুকিং এর সময় ব্যবহার করতে পারবেন।

এছাড়া আপনি এই ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড এর সাহায্যে বাসের টিকেট, ট্রেনের টিকেট, গাড়ি বুকিং এবং অন্যান্য ট্রাভেলিং এর খাতেও ছাড় পেয়ে যাবেন।

৩।শপিং ক্রেডিট কার্ড

আপনি যদি অনলাইনে শপিং করতে পছন্দ করেন বা অফলাইনে শপিং করতে আগ্রহী থাকেন। তাহলে যত দ্রুত সম্ভব একটি শপিং ক্রেডিট কার্ড করে নিতে পারেন।

আপনারা যত বেশি কেনাকাটা করবেন তত আপনার কার্ডের রিওয়ার্ড পয়েন্ট যুক্ত করা হবে।

আর এই পয়েন্টগুলো থেকে আপনি সহজে বিভিন্ন ক্যাশব্যাক এবং কেনাকাটাতে ছাড় পেয়ে যাবেন। আপনি অনলাইন এবং অফলাইন যেখানে খুশি সেখানে শপিং করুন।

আর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করলে সারা বছর ধরে, আপনি বিভিন্ন ধরনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

৪।এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড

আপনার যদি মাঝেমধ্যে বিদেশের সফর করতে চান? সে ক্ষেত্রে একটি এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য অনেক সুবিধাজনক হতে পারে।

সাধারণত এই সকল ক্রেডিট কার্ড গুলোর সাথে বিভিন্ন এয়ারলাইন ব্র্যান্ড যুক্ত করা রয়েছে। আপনার চাইলেই সেই এয়ারলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।

আপনারা এ কার্ডগুলো ব্যবহার করে এই এয়ারলাইন্স গুলোর প্লেনের টিকিট বুকিং করলে আপনারা রিওয়ার্ড পয়েন্ট বাড়াতে পারবেন।

আর যার জন্য আপনি এই এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো থেকে শেষটা সার্ভিস ভিআইপি সার্ভিস লাউঞ্জ এক্সেস পেয়ে যাবেন।

৫।রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড

আমরা কম বেশি সব ক্রেডিট কার্ডে অনলাইন বা অফলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে রিভার পয়েন্ট পেয়ে থাকি।

কিন্তু রিওয়ার্ড ক্রেডিট কার্ড গুলো বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট খরচের উপর বেশি রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং একটা পয়েন্ট সংগ্রহ করার জন্য। এই রিওয়ার্ড পয়েন্ট আসলে হচ্ছে, আপনার ব্যয় করা টাকার একটা অংশ মাত্র।

কিন্তু আপনি সময়ের সাথে সাথে এ পয়েন্ট এর ভিত্তিতে আপনি আপনার বিমান যাত্রার খরচ, ভাউচার এবং বিভিন্ন হাতে টাকা দেওয়ার জন্য ব্যবহার বা রিডিম করে নিতে পারবেন।

৬।ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড

ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে, আপনি প্রতিটি লেনদেনে ক্যাশব্যাক গ্রহণ করতে পারবেন। এ ধরনের ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড দাতারা ব্যাংকগুলো আপনার ক্রেডিট কার্ডে স্টেটমেন্ট ক্রেডিট প্রদান করে।

মানে এই স্টেটমেন্ট ক্রেডিট আপনার ক্রেডিট ব্যালেন্স থেকে কেটে নেয়া হলেও এটাকে আপনার মাসিক নূন্যতম টাকার মধ্যে ধরা হয় না।

কিছু কার্ড সরাসরি ক্যাশব্যাক দিলেও অনেক কার্ড আবার রিওয়ার্ড পয়েন্ট এর আকারের স্টেটমেন্ট হিসেবে, ক্যাশব্যাক প্রদান করে থাকে।

৭।ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড

ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড থেকে আপনি আপনার গাড়ির জ্বালা নিয়ে ভাবুন যে খরচ করে থাকেন সেখান থেকে কিছুটা টাকা ছাড় পেয়ে যাবেন।

উক্ত ছাড় ‍গুলো আপনি পেতে পারেন ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট বা রিওয়ার্ড পয়েন্ট আকারে।

এছাড়া, ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড এর সাথে বিভিন্ন ফুয়েল ব্র্যান্ডগুলোসহ ব্র্যান্ডিং করা হয়ে থাকে। উক্ত কারণে, এই কার্ড ব্যবহার করে আপনি জ্বালানি এর ওপর ছাড় এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড পেয়ে যাবেন।

তাছাড়া, আপনি ভবিষ্যৎ এর কোন খরচেও এই পেয়ে যাওয়া। রিওয়ার্ড গুলো রিডিম ব্যবহার করতে করতে পারবেন।

৮।এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড

এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড একটি জনপ্রিয় কার্ড। আপনি যদি মুভি বা কনসার্ট প্রেমী হয়ে থাকেন। তবে এই ধরনের এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড গুলো আপনার বিনোদনমূলক খরচের জন্য। আপনাকে রিওয়ার্ড পয়েন্ট প্রদান করে থাকে।

পিভিআর হোক আর বুকমাইশো এ ধরনের এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ডগুলোর সাথে বিভিন্ন এন্টারটেইনমেন্ট ব্র্যান্ড সহ ব্র্যান্ডিং করা হয়ে থাকে।

তারা আপনার বিনোদন খাতে করা খরচ এর বিনিময়ে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে।

৯।সেক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড

সেক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয় আপনার ফিক্সড ডিপোজিট এর আমানতকে সাক্ষী করে। মানে সেক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড করার সময় আপনাকে একাউন্টে নগদ টাকা ডিপোজিট করে রাখতে হবে।

আপনার ক্রেডিট কার্ড স্কোর খারাপ হলে এই কার্ডগুলো আপনার ইউজ কর বাড়াতে সহায়তা করবে।

ডিপোজিট করা থাকায় এই ধরনের, সেক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড গুলো টাকা প্রদানকারীর ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

উক্ত ক্রেডিট কার্ড গুলো ছাড়া আরো অসংখ্য ক্রেডিট কার্ডের প্রকার রয়েছে। যেগুলো আপনারা ক্রেডিট কার্ড দাতা সংস্থার কাছ থেকে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিতে পারবেন।

ক্রেডিট কার্ড লিমিট কি?

ক্রেডিট সীমা বলতে বোঝায় ক্রেডিট ইস্যুকারী একজন ঋণগ্রহীতাকে ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেবে এমন সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্রেডিট। এটি সহ একাধিক কারণের উপর নির্ভর করেআয় এবং আর্থিক অবস্থা। ক্রেডিট ইস্যুকারী ক্রেডিট সীমা বা ক্রেডিট কার্ড বা ক্রেডিট লাইন প্রসারিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যখন একজন ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী একজন ব্যক্তির জন্য একটি ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন করে, তখন এটি ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তি কতটা ব্যয় করতে পারে তার একটি সীমা নির্ধারণ করে।

আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ

এই সীমাকে ক্রেডিট লিমিট বলা হয়। একবার ব্যক্তি নির্দিষ্ট ক্রেডিট সীমাতে পৌঁছে গেলে, কিছু ব্যালেন্স পরিমাণ অর্থ প্রদান করা না হলে ব্যক্তি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন না। যাইহোক, কিছুক্রেডিট কার্ড ব্যক্তিদের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করার অনুমতি দিতে পারে, কিন্তু একটি অতিরিক্ত সীমা পেনাল্টি ফি চার্জ করবে।

ক্রেডিট লিমিট ইস্যু করার আগে একজন ব্যক্তির সম্পূর্ণ আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়। এতে ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ফর্মে তালিকাভুক্ত আয়ের পাশাপাশি ক্রেডিট ইতিহাস এবং মুলতুবি ঋণের মতো অন্যান্য কারণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যদি একজন ব্যক্তির ক্রেডিট দ্বারা সমর্থিত হয়জামানত, একটি হোম ইকুইটি লাইন বলুন, ক্রেডিট ইস্যুকারী ক্রেডিট সীমা বেস করবে ব্যক্তির বাড়িতে কতটা ইকুইটি আছে তার উপর।

ক্রেডিট সীমার সাথে ভাল অবস্থান থাকা ব্যক্তিকে সময়ের সাথে সাথে বর্ধিত ক্রেডিট সীমার সুবিধা পেতে সহায়তা করতে পারে। কম-ঝুঁকির ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিরা উচ্চতর ক্রেডিট সীমা আকৃষ্ট করতে পারে যখন উচ্চ-ঝুঁকির ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিরা কম ক্রেডিট সীমা আকর্ষণ করতে পারে।

কোন ব্যাংক কি কি ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে

১।ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ-

-ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড।

-গোল্ড ক্রেডিট কার্ড।

-ক্লাসিক ক্রেডিট কার্ড।

-সিগনেচার ক্রেডিট কার্ড।

-প্ল্যাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।

২।ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ-

-ভিসা গোল্ড ক্রেডিট কার্ড।

-ভিসা গোল্ড ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড।

-ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।

-ভিসা ক্লাসিক লোকাল ক্রেডিট কার্ড।

-ভিসা ক্লাসিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড।

-মাস্টার কার্ড ক্লাসিক লোকাল ক্রেডিট কার্ড।

৩।স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ-

-ভিসা সিগনেচার ক্রেডিট কার্ড।

-ভিসা সিলভার ক্লাসিক ক্রেডিট কার্ড।

-প্লাটিনাম ভিসা/ মাস্টার কার্ড ক্রেডিট কার্ড।

-স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড গ্রামিনফোন ক্রেডিট কার্ড।

-সুপার ভেল্যু টাইটানিয়াম ক্রেডিট কার্ড।

-গোল্ড ভিসা/ মাস্টার ক্রার্ড ক্রেডিট কার্ড।

৪।সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ-

-সিটি আলো অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস ক্রেডিট কার্ড।

-অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস গ্রীণ ব্লু ক্রেডিট কার্ড।

-অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।

-অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস গোল্ড ক্রেডিট কার্ড।

৫।ইস্টার্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ-

-ইবিএল ভিসা গোল্ড ক্রেডিট কার্ড।

-ইবিএল ভিসা ক্লাসিক ক্রেডিট কার্ড।

-ইবিএল ভিসা প্লাটিনাম লাইট ক্রেডিট কার্ড।

-ইবিএল ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।

-ইবিএল ভিসা সিগনেচার আসসি-শিল্ড ক্রেডিট কার্ড।

-ইবিএল ভিসা উইমেন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর

১।ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি?

উত্তরঃক্রেডিট কার্ড হল একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড, যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থার ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। এই কার্ডের বাহক পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারেন এবং মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। সাধারণত স্থানীয় ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়ন ভোক্তাদের কাছে এই কার্ডগুলি ইস্যু করে থাকে।

২।ক্রেডিট কার্ড কি ধরনের হয়?

উত্তরঃআমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ডগুলি সর্বদা 3 নম্বর দিয়ে শুরু হয়, আরও নির্দিষ্টভাবে 34 বা 37৷ ভিসা কার্ডগুলি 4 নম্বর দিয়ে শুরু হয়৷ মাস্টারকার্ডগুলি 5 নম্বর দিয়ে শুরু হয়৷ আবিষ্কার কার্ডগুলি 6 নম্বর দিয়ে শুরু হয়৷

৩।কোন সরকারি ব্যাংক সর্বোচ্চ সুদের হার দেয়?

উত্তরঃনির্ধারিত প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে, বন্ধন ব্যাঙ্ক 500 দিনের মেয়াদের জন্য 7.85% pa পর্যন্ত সেরা FD সুদের হার অফার করে। নির্ধারিত পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে, 444 দিনের মেয়াদের জন্য পাঞ্জাব ও সিন্ধু ব্যাঙ্ক 7.40% পর্যন্ত সর্বোচ্চ FD হার অফার করে।

৪।ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা কি?

উত্তরঃএকটি ক্রেডিট কার্ড হল একটি আর্থিক হাতিয়ার যা ব্যক্তিদেরকে একটি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার করতে সাহায্য করে যা পরে অর্থ পরিশোধ করার বিলাসিতা করে ৷ আপনি অফলাইন বা অনলাইন স্টোরগুলিতে কেনাকাটা করতে বা ভ্রমণ বা থাকার জন্য বুকিং করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

৫।ক্রেডিট কার্ড ভালো নাকি খারাপ?

উত্তরঃএকটি ক্রেডিট কার্ড পাওয়া ক্রেডিট এবং আর্থিক কেনাকাটা তৈরি করার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে তবে এটি আপনার ক্রেডিট স্কোরকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এবং ঋণের কারণ হতে পারে – এটি শেষ পর্যন্ত আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।

শেষ কথা

ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করার পূর্বে আপনারা অবশ্যই জেনে নিবেন কোন ধরনের ক্রেডিট কার্ডের আপনার প্র‍য়োজন। আর আপনার আবেদন করার যোগ্যতা এ সকল বিষয় প্রয়োজনীয় ক্রেডিট কার্ডটি গ্রহণ করতে পারবেন।

আজকের পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করেছি ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার ও কি কি সে বিষয়ে বিস্তারিত। আশাকরি পোস্টটি থেকে ক্রেডিট কার্ড এর প্রকারভেদ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

  • ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম, আমি একজন অনলাইন কনটেন্ট রাইটার। আমার লেখাগুলো পড়ে বিন্দুমাত্র আপনার কোন উপকারে আসলে অবশ্যই পোস্টটিতে কমেন্টস করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ

Leave a Comment