ভিসা ক্রেডিট কার্ড-বর্তমান আধুনিক যুগে টাকার ফিজিক্যাল ব্যবহার কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিক মানি। এতে সাধারণ মানুষের টাকা বহন করার ঝামেলা যেমন থাকছেনা তেমনি টাকা হারিয়ে যাওয়া কিংবা ছিড়ে বা অন্য কোন উপায়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ারও ভয় থাকছেনা। আর এই সুযোগটি করে দিচ্ছে ভিসা কার্ড, মাষ্টার কার্ডসহ অন্যান্য আরও কিছু কার্ড এবং বিট কয়েন যার কথা আপনারা অনেক আগেই শুনেছেন। আজকে পোস্টে আমরা আলোচনা করব ভিসা ক্রেডিট কার্ড কি, ভিসা ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা, ভিসা ক্রেডিট কার্ডের ধরন সহ অন্যান্য কার্ডের বিস্তারিত বর্ণনা।
ভিসা কার্ড কি?
ভিসা ইনকর্পোরেটেড বা ভিসা কার্ড হল একটি আমেরিকান বহুজাতিক আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যার সদর দপ্তর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত। এই আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সারা পৃথিবীতে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে সকল সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার সরবরাহ করে থাকে। সাথে সারা বিশ্বের মানুষকে ভিসা ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড সরবরাহ করে।
যদিও আগেই বলেছি তারা সারা বিশ্বের মানুষকে ভিসা ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড সরবরাহ করে থাকে কিন্তু তারা মোটেই সরাসরি সাধারণ মানুষকে এই সেবা দেয়না।
তারা বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের কাষ্টোমারদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশের এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদের প্রয়োজন ও সুবিধামত এই এই কার্ড দিয়ে থাকে।
ভিসা নেটওয়ার্ক কি?
VISA হল একটি আন্তর্জাতিক কর্পোরেশন যা আর্থিক পরিষেবা প্রদান করে। এটি ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড কার্ড এবং উপহার কার্ডের জন্য অর্থপ্রদানের একটি মাধ্যম অফার করে যাতে সারা বিশ্বের সর্বত্র নগদহীন লেনদেন করা যায়। VISA কার্ড ইস্যু করে না বা এটি লোকেদের কোন আর্থিক অধিকার প্রদান করে না।
এটি কেবল একটি নেটওয়ার্ক সরবরাহ করে যা তহবিল স্থানান্তরের জন্য গ্রাহক, ব্যবসায়ী এবং ব্যাঙ্ককে সংযুক্ত করে। ভিসা ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা একটি VISA ক্রেডিট কার্ড বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক স্বীকৃত কার্ড পরিষেবাগুলির মধ্যে একটি। লোকেরা অন্যান্য ধরণের ক্রেডিট কার্ডের চেয়ে ভিসা পছন্দ করার একটি প্রধান কারণ হল একটি উচ্চ গ্রহণযোগ্যতা নেটওয়ার্ক।
এটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অফার করে একটি EMV চিপের আকারে যা কার্ডে এম্বেড করা আছে। একটি EMV চিপ মূলত উচ্চ-মূল্যের লেনদেন করার জন্য উচ্চতর সুরক্ষা প্রদান করে।
একটি ভিসা কার্ড জালিয়াতি এবং চুরির ক্ষেত্রে শূন্য শতাংশ দায় প্রদান করে। ধরুন আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে একটি অননুমোদিত লেনদেন করা হয়েছে, তাহলে আপনাকে কোম্পানিকে সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে না।
ভিসা কার্ড কত প্রকার
প্রধানতঃ ভিসা কার্ড মূলত দুই প্রকার। যথা-
1.ভিসা ডেবিট কার্ড
2.ভিসা ক্রেডিট কার্ড
ভিসা ডেবিট কার্ড
কোন ব্যাংকে যদি আপনার যেকোন ধরনের একাউন্ট থাকে তাহলেই আপনি ডেবিট কার্ডের মালিক হতে পারেন। তবে বিভিন্ন ব্যাংক ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের কার্ড সরবরাহ করে থাকে। যেমনঃ ভিসা, মাস্টার কার্ড, নেক্সাস, এমেক্স ইত্যাদি।
কিভাবে খুলবেন ব্যাংক একাউন্ট
সরাসরি ব্যাংকে চলে যান বা অনেক ব্যাংক অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে তাদের ব্যাংকে একাউন্ট খোলার কাজ সহজ করে দিয়েছে। এর জন্য সরাসরি ব্যাংক বা ঐ নির্ধারিত ব্যাংকের আপস খুলে নির্ধিধায় ঐ ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট আউলেটে গিয়েও একাউন্ট খুলতে পারেন।
ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি
- তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (একাউন্ট হোল্ডারের)
- নমিনির ছবি ( যাকে নমিনি করবেন তার ছবি)
- বাসার যেকোন ইউটিলিটি বিলের কপি
- টিনের (TIN) কপি
- ব্যাংকের নির্ধারিত ফর্ম পূরন
- প্রাথিমিক ডিপোজিট (২০০০ থেকে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে)
ভিসা ডেবিট কার্ড কিভাবে পাবেন
একাউন্ট খোলার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই ( কোন কোন ব্যাংকে দশ দিনও লাগতে পারে) আপনি আপনার নামে ডেবিট কার্ড, চেক বই ইত্যাদি পেয়ে যাবেন। আপনার ডেবিট কার্ডটি ভিসা কিংবা মাস্টার কার্ড কিংবা অন্য যেকোন রকম যেমন নেক্সাস বা এমেক্সও হতে পারে। আপনি যদি যদি ভিসা কার্ড চান তাহলে একাউন্ট খোলার সময় ব্যাংকের কর্মকর্তাকে বলে রাখুন।
ভিসা ডেবিট কার্ড কিভাবে সচল করবেন
কার্ডটি আপনার হাতে পাবার পর সাথে দেয়া ইন্সট্রাকশনগুলো পড়ে নিন ভাল ভাবে। নিরাপত্তার খাতিরে আপনার কার্ডটি ইনেক্টিভ অবস্থায় থাকবে, আপনাকে এক্টিভ করে নিতে হবে। বেশির ভাগ ব্যাংকের কার্ড এক্টিভ করার জন্য ঐ ব্যাংকের কাস্টমার হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে এক্টিভ করে নিতে হয়।
কাস্টমার হেল্পলাইনে ফোন দিলে তারা আপনার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, কার্ডের নাম্বার এবং কার্ডের ভ্যালিডিটি তারিখ জানতে চাইতে পারে। আপনি সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে কাস্টমার কেয়ার থেকে সয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডটি এক্টিভ করে দিবে।
আপনার কার্ডের সাথে আরেকটি খাম থাকবে যেটা খুললে আপনার কার্ডের পিন নম্বর পেয়ে যাবেন। কিছু কিছু ব্যাংকের ভিসা কার্ডের পিনও হেল্পলাইনে কল করে জেনারেট করে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে পিন কোড নির্বাচন করে নিতে ভুলবেন না।
খাম থেকে পিন নম্বর দেখে নিয়ে পিন নম্বরটি মুখস্ত করে ফেলুন এবং খামটি ছিড়ে ফেলুন। আপনার পিন নম্বর কারও সাথে শেয়ার করবেন না কখনই।
এছাড়া আপনা চেক বইও ইনেক্টিভ অবস্থায় থাকবে। হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে চেকবইও এক্টিভ করে নিতে ভুলবেন না।
অনেকেই তার ভিসা ডেবিট কার্ড অনলাইনে ট্রানজেকশনে ব্যবহার করতে চান। তারা ভিসা কার্ড হাতে পেয়েই হেল্পলাইনে কল করে এটা জানাতে ভুলবেন না। কারণ বেশির ভাগ সময়ই অনলাইন ট্রানজেকশনের গেটওয়ে বন্ধ করা থাকে। রিকোয়েষ্ট করে এই গেটওয়ে খুলে নিতে হয়।
ভিসা ক্রেডিট কার্ড
ভিসা ক্রেডিট কার্ড হল এমন একটি একাউন্ট যে একাউন্টে টাকা না থাকলেও আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা কিছু নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে আপনি খরচ করতে পারবেন লোন হিসেবে পাবেন।
নির্দিষ্ট পরিমান টাকা মানে আপনার মান্থলি লিমিট যা ব্যাংক আপনার সামাজিক মর্যাদা বুঝে আপনাকে প্রদান করবে। আর নির্দিষ্ট শর্ত মানে হল আপনি আপনার বিল তারিখের ১৫ দিনের মধ্যে টাকা শোধ করতে হবে, না করতে পারলে আপনার তার জন্য ইন্টারেস্ট দিতে হবে।
ভিসা ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবেন
ডেবিট কার্ডের মত ক্রেডিট কার্ড পাবার নিয়মও একই। তবে এখানে আপনার সামাজিক মর্যাদাও বিবেচনায় আসে। আপনার কোন ব্যবসা বা চাকুরি না থাকলে আপনি ক্রেডিট কার্ড নাও পেতে পারেন। তবে হ্যা, ব্যাংকে আপনার ফিক্সড ডিপোজিট থাকলে তার বিপরীতে আপনি ভিসা ডেবিট কার্ড পেতে পারেন।
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ
আপনি যদি চাকুরীজীবী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার লিমিট নির্ভর করবে, আপনার মাসিক বেতনের উপর, আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তাহলে ট্রাঞ্জেকশনের উপর ভিত্তি করে লিমিট দেবে, আবার আপনার ফিক্সড ডিপোজটের উপর ভিত্তি করে আপনাকে আপনার লিমিট প্রদান করবে।
ভিসা ক্রেডিট কার্ড পেতে যেসব কাগজপত্র লাগবে
ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি
- তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (একাউন্ট হোল্ডারের)
- নমিনির ছবি ( যাকে নমিনি করবেন তার ছবি)
- বাসার যেকোন ইউটিলিটি বিলের কপি
- টিনের (TIN) কপি
- ব্যাংকের নির্ধারিত ফর্ম পূরন
- প্রাথিমিক ডিপোজিট (২০০০ থেকে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে)
এখানে আরও লাগবে আপনার ব্যাংক স্টেট্মেন্ট এবং আপনার আফিসের স্যালারি সার্টিফিকেট। যে ব্যাংকে আপনার স্যালারি হয় সেই ব্যাংকের স্টেটমেন্ট হলে ভাল হয়।
মনে রাখবেন, আপনার ক্রেডিট কার্ডটি ভিসা, মাস্টার, এমেক্স, নেক্সাস ইত্যাদি যেকোন ব্রান্ডেরই হতে পারে।
ভিসা ক্রেডিট কার্ড কিভাবে সচল করবেন
ভিসা ডেবিট কার্ড যেভাবে এক্টিভ করেছেন একই পদ্ধতিতে আপনি আপনার ভিসা ক্রেডিট কার্ড এক্টিভ করে নিবেন। এখানেও চেক বই থাকবে। চেক বইও এক্টিভ করে নিতে ভুলবেন না।
ডুয়েল কারেন্সি কার্ড
দেশের বাইরের কোন ওয়েভসাইটে যদি আপনার লেনদেন করতে হয় তাহলে অবশ্যই আপনার কার্ডটি ডুয়েল কারেন্সির হতে হবে। লোকাল কারেন্সির কার্ড দিয়ে আপনি বাইরের কোন লেনদেন করতে পারবেন না।
তাছাড়া ডুয়েল কারেন্সির ডলার পার্ট সাধারণত ইনেক্টিভ থাকে।
ভিসা ক্রেডিট কার্ডের ধরন
- ভিসা গোল্ড ক্রেডিট কার্ড
এই কার্ডগুলি ডাইনিং, খুচরা কেনাকাটা, ক্যাশব্যাক এবং বিভিন্ন কেনাকাটায় গিফট। ভাউচারে ছাড় দেয়। আপনি ভ্রমণ এবং চিকিৎসা সহায়তাও পাবেন। বিদেশ ভ্রমণের সময়, আপনি উদ্বিগ্ন হতে পারেন কারণ ভিসা গোল্ড ক্রেডিট কার্ডগুলি 1.9 মিলিয়ন এটিএম সহ বিশ্বব্যাপী গৃহীত হয়৷
- ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড
প্লাটিনাম কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য 100 টিরও বেশি ডিল এবং অফার রয়েছে। এই ভিসা কার্ডটি বিশ্বব্যাপী গৃহীত হয় এবং এটি কার্ডধারীদের জন্য 24/7 গ্রাহক যত্ন সহায়তা প্রদান করে। ডাইনিং, অনলাইন শপিং এবং আরও অনেক কিছুর অফার উপভোগ করুন। উপরন্তু, গল্ফ টুর্নামেন্ট অ্যাক্সেস পান. ভিসা প্লাটিনামক্রেডিট কার্ড অফার আপনি অনেক আকর্ষণীয় জীবনধারা বিশেষাধিকার.
- ভিসা ক্লাসিক ক্রেডিট কার্ড
বিশ্বব্যাপী 200 টিরও বেশি দেশে 1.9 মিলিয়নেরও বেশি এটিএম অ্যাক্সেসের সাথে, কার্ডটি সারা বিশ্ব থেকে তার ব্যবহারকারীদের ঝামেলামুক্ত পরিষেবা দেয়। ভ্রমণ হোক, কেনাকাটা হোক বা ডাইনিং হোক, ভিসা ক্লাসিক কার্ডগুলি প্রায় যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্রেডিট কার্ডগুলির সর্বোত্তম অংশ হ’ল জরুরী পরিস্থিতিতে এগুলি অবিলম্বে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
- ভিসা স্বাক্ষর ক্রেডিট কার্ড
খাবার, ভ্রমণ, খুচরা, জীবনযাত্রা, ইত্যাদিতে ক্যাশব্যাক এবং পুরষ্কার উপভোগ করুন। স্বাক্ষর কার্ডের মাধ্যমে আপনি প্রতি বছর প্রশংসাসূচক বিমানবন্দর লাউঞ্জ অ্যাক্সেস পেতে পারেন।
- ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
VISA Infinite ক্রেডিট কার্ড আপনাকে গলফ ক্লাব এবং গল্ফ টুর্নামেন্টে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার দেয়। এছাড়াও আপনি বিনামূল্যে বার্ষিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ পরিদর্শন উপভোগ করতে পারেন। আপনি অনলাইন কেনাকাটার পাশাপাশি নির্বাচিত রেস্তোরাঁ এবং হোটেলগুলিতে খাবারের উপর ছাড় পাবেন।
ভিসা ক্রেডিট কার্ড সুবিধাসমুহ
ভিসা কার্ড এর সুবিধাসমূহ এর প্যাকেজের উপর নির্ভর করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিসা কার্ড এর প্যাকেজ ভিত্তিক সুবিধাসমূহ সম্পর্কে।
১।বেসিক
ভিসা কার্ড বেসিক প্যাকেজে জরুরী সহায়তা, জরুরী কার্ড রিপ্লেসমেন্ট, এক্সটেনডেড বায়িং ওয়ারেন্টি, রেন্টে নেওয়া গাড়ির সুরক্ষার মত সুবিধা পাওয়া যায়।
২।সিগনেচার
মিড-রেঞ্জ এর ভিসা কার্ড প্যাকেজ এর নাম হলো সিগনেচার। বেসিক প্যাকেজের সকল সুবিধার পাশাপাশি সিগনেচার প্যাকেজে অনলাইন পোর্টাল ডিসকাউন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট, ট্রাভেল, স্পোর্টস ইভেন্ট, ইত্যাদি ক্ষেত্রে এক্সক্লুসিভ সুবিধা ও অফার পাওয়া যায়।
৩।ইনফিনিট
উল্লেখিত দুইটি প্যাকেজের সুবিধাসমূহর সাথে আরো বাড়তি সুবিধা যোগ করে ভিসা ইনফিনিট প্যাকেজ। মূলত উচ্চবিত্তদের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই ভিসা প্যাকেজটি তৈরী করা হয়েছে যা দ্বারা প্রায় কার্ড ব্যবহার করে প্রাপ্ত সকল ধরণের সুবিধা পাওয়া যায়।
ভিসা কার্ড নাকি মাস্টার কার্ড ব্যবহার করবেন
আপনার হাতে সুযোগ থেকে যাচ্ছে পছন্দ করার। কোন কার্ড নেবেন? ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, এমেক্স নাকি নেক্সাস? আসলে বিভিন্ন ধরনের কার্ড আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেবে।
যেমন ভিসা এবং এমেক্স কার্ডে আপনি কেনা-কাটায় বিভিন্ন শপিংমলে ছাড় পাবেন। আবার মাস্টার কার্ডে আপনি হোটেল বুকিং এ ডিস্কাউন্টের সুবিধা পেতে পারেন।
তবে, অনলাইন ট্রানজেকশনে আপনি ভিসা অথবা মাস্টার উভয় কার্ডেই সমান সুবিধা পেতে পারেন। সুতরাং আমার মনে আপনার জন্য ভিসা কিংবা মাস্টার কার্ডই ভাল হবে। এমেক্স কিংবা নেক্সাস তেমন খুব একটা প্রচলিত নয় সারা বিশ্বে।
ভিসা কার্ড দিয়ে অনলাইন কেনা-কাটায় সাবধান
মনে রাখবেন, ভিসা কিংবা মাস্টার কার্ড যাই ব্যবহার করেন না কেন আপনাকে একটু সাবধান হতেই হবে। নইলে হ্যাকিং এর পাল্লায় পড়তে পারেন। ভুলেও আপনি আপনার ভিসা কার্ডের নাম্বার, পিন নম্বর কাওকে দেবেন না। ভিসা কার্ডের বিপরীত পাশে যে CVV নাম্বার থাকে সেটিও নয়।
যেকোন ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন করার জন্য আপনার আপনার নাম, ভিসা কার্ড নম্বর, মেয়াদ এবং CVV নাম্বারই যথেষ্ট। যে কেও আপনার কার্ড দিয়ে অনলাইনে কিছু কিনে ফেলতে আরে। তাই আপনার ভিসা কার্ডের ছবি অনলাইনে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
অনলাইনে ভিসা কার্ডের ইনফরমেশন দেয়ার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন সাইটটি সিকিউরড কিনা। এটা বুঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হল যে সাইটে পেমেন্ট করছেন সেই সাইটের এড্রেসের আগে “https” আছে কিনা। যদি শুধু “http” থাকে “s” না থাকে তাহলে সেই সাইটে পেমেন্ট না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং ভিসার মধ্যে পার্থক্য
1.ভিসা ডেবিট কার্ড অন্য দশটি ডেবিট কার্ডের মতই কাজ করে। আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা থাকলে এই ডেবিট কার্ড দিয়ে সেই টাকা তুলতে বা খরচ করতে পারবেন। অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ডও অফার করে ভিসা ক্লাসিকঃ বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় এই ক্রেডিট কার্ড। প্রায় যেকোনো ধরনের শপিং, ট্রাভেলিং ও ডাইনিং ট্রানজেকশকন করা যায় এই ধরনের কার্ড দ্বারা।
2.ভিসা গোল্ডঃ এই ধরনের কার্ড দ্বারা অধিক ক্রেডিট লাইন অ্যাকসেস করা যায়। এই কার্ড দ্বারা ট্রাভেল, মেডিকেল ও লিগ্যাল এসিস্টেন্স পাওয়া যায়। এছাড়া বিশ্বব্যাপী ট্রাভেল, ডাইনিং ও রিটেইল পারচেজ এর ক্ষেত্রেও স্পেশাল অফার পাওয়া যায়।
3.ভিসা প্লাটিনামঃ এটি মূলত প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ড। এই ধরণের কার্ড হোল্ডারগণ অনেক ধরণের সুবিধা ও রিওয়ার্ড পেয়ে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন লিডিং হোটেল, ইলেকট্রনিক রিটেইল স্টোর, মেডিকেলে স্টোর ভিসা কার্ড ব্যবহারে অফার দিয়ে থাকে।
4.ভিসা সিগনেচারঃ এই ধরণের কার্ডের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ধরণের সেবা ও সুবিধা পাওয়া যায়। বিশ্বের প্রায় সকল দেশে সার্বক্ষণিক এই কার্ড ব্যবহার করা যায়। এছাড়া হোটেল, ট্রাভেল, শপিং এর ক্ষেত্রেও এই কার্ডে অফার পাওয়া যায়।
5.ভিসা ইনফিনিটঃ এই কার্ডটিকে ভিসা এড় এলিট কার্ড বলা চলে। এই কার্ড দ্বারা সর্বোচ্চ প্রকার অফার ও সুবিধা ব্যবহার করা সুযোগ আছে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর
১।ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বন্ধ করা যায়?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ড বন্ধ করতে চাইলে আপনি ফোন করতে পারেন আপনার ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে। ওই নম্বরে কল করে ক্রেডিট কার্ড বাতিল করতে পারেন। ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চে গিয়েও আপনি ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার আবেদন করতে পারেন। আপনি ক্রেডিট কার্ড বন্ধের জন্য ইমেলের মাধ্যমেও আবদন করতে পারেন।
২।ভিসা কার্ডের চার্জ কত?
উত্তরঃ ভিসা ক্রেডিট কার্ড
১।মাসে ৪৯,৯৯৯.৯৯ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রতি পেমেন্টে ১.৪৯% বা ১০০ টাকা চার্জ প্রযোজ্য (যে চার্জ সর্বনিম্ন)
২।মাসে সর্বমোট ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি বিল পেমেন্টে ১.৪৯% (প্রতি পেমেন্টে) চার্জ প্রযোজ্য
যেকোনো ভিসা ক্রেডিট কার্ডের বিল পেমেন্টের ক্ষেত্রে চার্জটি প্রযোজ্য হবে
৩।ক্রেডিট কার্ডে নগদ অগ্রিম কি?
উত্তরঃএকটি ক্রেডিট কার্ড নগদ অগ্রিম হল আপনার ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্ট থেকে নগদ তোলা । মূলত, আপনি আপনার পকেটে নগদ রাখার জন্য আপনার ক্রেডিট কার্ড থেকে ধার নিচ্ছেন। যাইহোক, ক্রেডিট কার্ড নগদ অগ্রিম নেওয়ার খরচ আছে এবং কিছু ক্ষেত্রে, আপনি যে পরিমাণ টাকা তুলতে পারবেন তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
৪।ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃএকটি ক্রেডিট কার্ড প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি সাধারণত শুরু করতে $5,000 থেকে $10,000 খরচ করে। এর মধ্যে একজন বণিক পরিষেবা প্রদানকারী, সফ্টওয়্যার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের খরচ অন্তর্ভুক্ত।
৫। আন্তর্জাতিক পেমেন্টের জন্য আমার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারি?
উত্তরঃআপনি ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে বা কার্ড প্রদানকারীর অ্যাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য আপনার ক্রেডিট কার্ড সক্ষম করতে পারেন ৷ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনার জানা দরকার যে আপনি যদি আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাহলে আন্তর্জাতিক লেনদেন চার্জ প্রযোজ্য হবে।
৬।ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ড হল একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড, যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থার ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। এই কার্ডের বাহক পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারেন এবং মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। সাধারণত স্থানীয় ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়ন ভোক্তাদের কাছে এই কার্ডগুলি ইস্যু করে থাকে।
৭।ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ড হল একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড, যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থার ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। এই কার্ডের বাহক পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারেন এবং মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। সাধারণত স্থানীয় ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়ন ভোক্তাদের কাছে এই কার্ডগুলি ইস্যু করে থাকে।
৮।ক্রেডিট কার্ডের কাজ কি?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ড হল একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড, যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থার ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। এই কার্ডের বাহক পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারেন এবং মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন।
৯।ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা কি কি?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে, আপনি সাধারণত যা করতে পারেন তার চেয়ে বেশি ক্রয় করতে পারেন। এটি একটি নির্দিষ্ট আছেক্রেডিট সীমা যা পর্যন্ত আপনি অর্থ ব্যয় করতে পারেন। এটি আপনাকে ইলেকট্রনিক্স, টু-হুইলারের মতো বড় কেনাকাটা করার ক্ষমতা দেয়স্বাস্থ্য বীমা, ছুটির বুকিং, ইত্যাদি এবং নগদ কম পড়ার বিষয়ে চিন্তা করবেন না।
১০।ক্রেডিট কার্ড ক্ষতিকর কেন?
উত্তরঃক্রেডিট কার্ডগুলি অতিরিক্ত খরচ করা খুব সহজ করে তোলে ৷ ক্রেডিট দিয়ে কেনা আপনার ক্রয়কে আরও ব্যয়বহুল করে তুলতে পারে, আপনি সেগুলিতে যে সুদ দিতে পারেন তা বিবেচনা করে।
শেষ কথা
আশাকরি উপরোক্ত আলোচনায় ভিসা ক্রেডিট কার্ড কি এবং এর ব্যবহারবিধিসহ প্রাপ্তির স্থান এবং এটি ব্যবহারে সতর্কতা ও সুবিধাসমূহ আপনাদের উপকারে আসবে ও প্রয়োজন অনুযায়ী আপনারা তা সংগ্রহ করতে ও ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-
প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল নাম্বার জেনে নিন-২০২৪ পূবালী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।