নভোথিয়েটারের সময়সূচী-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের বিজয় সরনিতে অবস্থিত একটি স্থাপনা। এখানে নভোমন্ডল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এবং নভো মন্ডলের ধারণা পাওয়ার জন্য কৃত্রিম নভোমন্ডল তৈরি করা আছে। ৫.৪ একর জায়গায় স্থাপিত নভোথিয়েটারটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালনায় চলছে।
আজ আপনারা জানতে পারবেন নভোথিয়েটার কি,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে কি কি আছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের প্রদর্শনীর সময়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার টিকিট মূল্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার কোথায় অবস্থিত,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে কিভাবে যাবেন,নভোথিয়েটারের বৈজ্ঞানিক প্রদর্শন,নভোথিয়েটারের আশে পাশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত।
নভোথিয়েটার কি?
নভোথিয়েটার বলতে সাধারণত একটা জায়গাকে বোঝায় যেখানে কিছু বিশেষ যন্ত্রপাতি থাকে, আর সেই যন্ত্রপাতির সাহায্যে কৃত্রিম আকাশ দেখানো হয়। এটা মূলত জ্যোতির্বিজ্ঞান ও নাবিকদের শিক্ষা দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। সাধারণ মানুষও এটা দেখে মজা পায়। নভোথিয়েটার বলতে আমরা যে যন্ত্রকে বুঝি তাতে অনেকগুলো লেন্স, প্রিজম ও আয়না বিভিন্ন আঙ্গিকে বসানো থাকে।
আর এ যন্ত্র থাকে গোল গম্বুজাকার একটা ঘরে। এ ঘরের ছাদের কৃত্রিম আকাশকে লক্ষ করে সূর্য, চাঁদ, গ্রহ তারাসহ সৌরজগতের বিচিত্র সব জিনিস দেখানো হয়। সেই সাথে দেখানো হয় নভোমণ্ডলের জ্যোতিষ্ক, নক্ষত্রের অবস্থান ও গতিবিধি। এর প্রদর্শিত দৃশ্যগুলো চমৎকার ও মুগ্ধকর।
১৯২৩ সালে পূর্ব জার্মানির জেনার ‘জিস অপটিক্যাল কোম্পানি’র ‘ওয়ালজার বায়ারস ফ্রেন্ড’ নামে এক ব্যক্তি প্রথম নভোথিয়েটার তৈরি করেন। যন্ত্রটি গোল গম্বুজাকার একটি ঘরে রাখা ছিল। আসল আকাশের চেহারা যন্ত্রটি তুলে ধরতে পারত।
বিভিন্ন জ্যোতিষ্ক এক বছরের অবস্থান ও গতিবিধি খুব কম সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করতে পারত। পৃথিবীর বড় শহরে লোকজনকে শিক্ষা দেয়ার জন্য নভোথিয়েটার স্থাপন করা হয়। রাশিয়ার মস্কোতে পৃথিবীর বড় নভোথিয়েটার অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোয় একটা নভোথিয়েটার আছে।
ভারতের মুম্বাইয়ে নেহরু আর কলকাতার বিড়লা নভোথিয়েটার বিশ্বের নামকরা নভোথিয়েটারগুলোর তালিকায় অবস্থান করছে । আমাদের দেশে ১৯৭৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ই নভোথিয়েটার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বর্তমানে ঢাকার বিজয় সরণিতে আধুনিক ও তথ্যবহুল বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার বিখ্যাত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারটি বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৫ সালে নির্মাণ করেন। গণপূর্ত বিভাগের উপ-পরিচালক জনাব আলী ইমাম নভোথিয়েটারটির নকশা তৈরি করেন। ১৭ জুলাই, ২০০০ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হয়। এটি মূলত ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের কাছে স্থাপন করার উদ্দেশ্যে ছিল, কিন্তু তার পরিবর্তে বিজয় স্বরনীতে নির্মিত হয়েছিল।
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ
১৭ জুলাই ২০০০ থেকে ৭ নভেম্বর ২০০১ নভোথিয়েটারের কাজ চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায় এবং তারপর ২০০২সালের মাঝামাঝি সময়ে পুনরায় চালু করা হয়। এর নির্মাণ কাজ মে ২০০৩ সালে শেষ হয় এবং এটি ২৫ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদ্বোধন করেন। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। পূর্বে এটি ( Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Novo Theatre ) ভাষানী নভোথিয়েটার নামে পরিচিত ছিলো।
নভোথিয়েটারে কি কি আছে
বাংলাদেশে, এটি একমাত্র থিয়েটার যার নামে থিয়েটার শব্দটি রয়েছে, যদিও এটি আপনার সাধারণ মুভি থিয়েটার নয়। এখানে আপনি বিজ্ঞান-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেখতে পারেন। একটি 5D মুভি থিয়েটার ছাড়াও, এই নভোথিয়েটারে একটি 5D ইন্টারেক্টিভ এডুটেনমেন্ট সিমুলেটর, ডিজিটাল এবং বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনের একটি গ্যালারি, একটি সিমুলেটর রাইড এবং সুপরিচিত বিজ্ঞানীদের প্রতিকৃতি ছাড়াও গ্রহ ও সৌরজগতের বিভিন্ন প্রতিরুপ রয়েছে।
তাছাড়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার একটি 150 আসনের অডিটোরিয়াম, একটি ৫০ আসনের সম্মেলন কক্ষ, একটি হাইড্রোলিক লিফট এবং পার্কিং সুবিধা রয়েছে ।
নভোথিয়েটারের সময়সূচী
১।প্রতি শনি, রবি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট, দুপুর ১২ টা, বেলা ২ টা, বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিট, বিকাল ৫ টা এবং সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে প্রদর্শনী শুরু হয়।
২।আর প্রতি শুক্রবার প্রদর্শনী শুরু হয় সকাল ১০ টা, ১১ টা ৩০ মিনিট, বেলা ২ টা ৩০ মিনিট, বিকাল ৪ টা, বিকাল ৫ টা ৩০ মিনিট এবং সন্ধ্যা ৭ টায়।
৩।প্রতি সপ্তাহের বুধবার নভোথিয়েটার বন্ধ থাকে।
৪।সন্ধ্যার প্রদর্শনীটি শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালীন অর্থাৎ মার্চ থেকে অক্টোবর মাসে প্রদর্শীত হয়।
নভোথিয়েটারের টিকেট মূল্য
১।প্যানেটেরিয়াম প্রদর্শনীর টিকেটের মূল্য ১০০ টাকা।
২। ২ বছরের নিচে বাচ্চাদের কোন টিকিটের প্রয়োজন নেই।
৩।5D মুভি থিয়েটারের প্রতি টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা।
৪।5D ইণ্টেরিয়েকটিভ এডুটেইনমেণ্ট সিমুলেটরের টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা।
৫।ডিজিটাল ও সায়েন্টিফিক এক্সিবিটস গ্যালারির প্রতি টিকেট মূল্য ১০০ টাকা।
৬। রাইড সিমুলেটরের জনপ্রতি টিকেট মূল্য ২০ টাকা।
চাইলে টেলিটক মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে নভোথিয়েটারের যাওয়ার তিন দিন পূর্বে অগ্রীম টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।
নভোথিয়েটারে যোগাযোগের ঠিকানা
নভোথিয়েটার সম্পর্কে কিছু জানার থাকে নিচের ঠিকানা তে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ঠিকানা
বিজয় স্বরণী, তেজগাঁও, ঢাকা।
ফোন নম্বর – 9139577, 9138878, 8110155, 8110184
ওয়েব সাইট – www.novotheatre.gov.bd
নভোথিয়েটার কোথায় অবস্থিত
রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণীর মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার অবস্থিত যা একসময় ভাসানী নভোথিয়েটার নামে পরিচিত ছিল।
নভোথিয়েটারে কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে সিএনজি, ট্যাক্সি কিংবা বাসে করে বিজয় স্বরণীর নভোথিয়েটার আসতে পারবেন। অথবা যদি আপনার পছন্দমত ব্যবস্থায় ফার্মগেট বা জিয়া উদ্যানের কাছে আসতে পারেন তবে মিনিট পাঁচেক পায়ে হেটেই নভোথিয়েটারে পৌঁছে যাবেন।
নভোথিয়েটার বৈজ্ঞানিক প্রদর্শন
প্লানেটেরিয়াম শো ছাড়াও নভোথিয়েটারে কিছু বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনী রয়েছে যেমন সৌরজগতের গ্রহের আকার, সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদের মডেল, নক্ষত্রের আকার এবং স্বচ্ছ সেলেস্টিয়াল গ্লোব। নভোথিয়েটারে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের কিছু ছবিও পাওয়া যায়। নভোথিয়েটারে একটি ১৫০টি বসার সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম, ৫০টি বসার বিশাল সম্মেলন কক্ষ, হাইড্রোলিক লিফট এবং একটি গাড়ি পার্কিং এরিয়া রয়েছে যার ধারণক্ষমতা ১০০টি গাড়ি রয়েছে৷
নভোথিয়েটারে শুরু থেকেই কম্পিউটার মেলা, মহাকাশ মেলা, ইন্টারনেট মেলা, বিভিন্ন সেমিনার, বৈজ্ঞানিক কর্মশালা ইত্যাদি নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে।
রাইড সিমুলেটর ২৩ অক্টোবর ২০০৮ থেকে চলছে। একটি স্পেস শাটলের উল্লম্ব এবং অনুভূমিক গতি প্রায় ৩০ ডিগ্রি কোণ যা পিরামিড এবং রোলার কস্টার, মনো রেল, মিশর এবং বিমান ফাইটারের প্রাচীন বিশ্বের দিকে নিয়ে যায়। রাইড সিমুলেটরের মোট আসন ক্ষমতা একবারে ৩০ এবং প্রতিটি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা মাত্র।
নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে শীঘ্রই আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনীও স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মোট পদ ৬০টি। বর্তমানে নভোথিয়েটারে পরিচালকসহ ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।
নভোথিয়েটারের আশে পাশের দর্শনীয় স্থান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার দেখার পর আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে আপনি বঙ্গবন্ধু সামরিক যাদুঘর, চন্দ্রিমা উদ্যান , বিমান বাহিনী যাদুঘর , সংসদ ভবন ও ঘুড়ে আসতে পারেন। এই টুরিস্ট স্পট গুলোও আপনার ভালো লাগবে বলে আমরা আশাবাদী।
নভোথিয়েটার নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১।নভোথিয়েটারের ভিতরে খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে?
উত্তরঃনা, নভোথিয়েটারের ভেতর খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।
২।প্রতিটি শো কত মিনিট ব্যাপী হয়?
উত্তরঃ৩০ মিনিটের অথবা ১০ মিনিটের।
৩।নভোথিয়েটারের সাপ্তাহিক বন্ধ কবে?
উত্তরঃবুধবার।
৪।নভোথিয়েটারের শো এর সময়সূচী কি বা কখন কখন শো হয়?
উত্তরঃসকাল ১০ঃ৩০, দুপুর ১২ঃ০০, দুপুর ২ঃ০০, বিকেল ৩ঃ৩০, বিকেল ৫ঃ০০, সন্ধ্যা ৬ঃ৩০
শুক্রবারের – সকাল ১০ঃ০০, সকাল ১১ঃ৩০, দুপুর ২ঃ৩০, বিকেল ৪ঃ০০, বিকেল ৫ঃ৩০ এবং সন্ধ্যা ৭ঃ০০
৫।পৃথিবীর বড় নভোথিয়েটার কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃরাশিয়ার মস্কোতে
শেষ কথা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার একটি অতি আধুনিক প্ল্যানেটেরিয়াম নভোথিয়েটার। নভোথিয়েটারটি ডিজিটাল এবং বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনের একটি গ্যালারি। আশাকরি সম্পুর্ণ পোস্টটি পড়ে নভোথিয়েটার সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পেরেছেন।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন টিকেট করার নিয়ম পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকিট বুকিং করার নিয়ম ইউনিক বাস অনলাইন টিকেট কাটার নিয়ম বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকিট কাটার নিয়ম জাতীয় জাদুঘর অনলাইন টিকেট করার নিয়ম
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।