জন্ডিস হলে কি কি খাবেন –জন্ডিস নিজে কোনো রোগ নয়, বরং এটি রোগের লক্ষণ। জন্ডিস হতে পারে নানা কারণে। জন্ডিস বলতে সাধারণত লিভারের প্রদাহজনিত জন্ডিসকেই বোঝানো হয়। ভাইরাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ওষুধ, অ্যালকোহল ইত্যাদি কারণে লিভারে প্রদাহ হতে পারে। আমাদের দেশে লিভার প্রদাহের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস ই, এ এবং বি ভাইরাস। এর মধ্যে প্রথম দুটি পানি ও খাদ্যবাহিত আর তৃতীয়টি ছড়ায় মূলত রক্তের মাধ্যমে। হেপাটাইটিস এ ভাইরাস প্রধানত শিশুদের জন্ডিসের কারণ, তবে যেকোনো বয়সের মানুষই হেপাটাইটিস ই ও বি ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
আজ আলোচনা করবো জন্ডিস রোগী কি কি খাবার খাবে আর কি কি খাবার এড়িয়ে যাবে তা নিয়ে।
জন্ডিস রোগ কি?
জন্ডিস হলো লিভার বা রকৃতেয় রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা সত্য হলেও অনেক ক্ষেত্রে জন্ডিসের আরো অনেক কারণ থাকে।
সহজভারে বললে রক্তে বিলিরুবিলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে চামড়া, চোখ, প্রস্রাব, মুখগহবরে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তাকে জন্ডিস বলে। বিলিরুবিন হচ্ছে রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙে গিয়ে তৈরি রাসায়নিক উপাদান।
কোন কোন খাবারে আমরা আয়োডিন পেয়ে থাকি তার তালিকা
বিলিরুবিন লিভারে গিয়ে পিত্ততে পরিণত হয়। পিত্ত লিভার থেকে বের হয়ে যায় বলেই আমাদের জন্ডিসে আক্রান্ত হতে হয় না।
কাজেই কোন কারণে লোহিত কনিকা বেশি বেশি ভেঙে বিলিরুবিণ তৈরি হলে। বিলিরুবিন লিভারে পিত্ততে পরিণত না হতে পারলে অথবা পিত্ত লিভারে তৈরি হলো ঠিক কিন্তু বের হবার রাস্তায় কোন বাধা থাকলে জন্ডিস হয়ে থাকে।
জন্ডিসের প্রকারভেদ
জন্ডিসকে তিনভাগে ভাগ করা যায়
১. প্রি-হেপার্টিক:
রক্তের লোহিত কনিকা কোন কারণে বেশি বেশি ভাঙলে। যেমন: ক. হিমোলাইটিক এনেমিয়া, খ. ম্যালেরিয়া, গ. থ্যালাসেমিয়া।
২. হেপাটিক:
লিভারের মধ্যে কোন সমস্যা থাকলে। অধিকাংশ জন্ডিস এ কারণেই হয়ে থাকে। যেমন: ভাইরাল হেপাটাইটিস (অ, ই, ঈ, উ, ঊ), অতিরিক্ত মদাপানের ফলে, লিভার ক্যান্সার হলে।
৩. পোস্ট হেপার্টিক
পিত্ত লিভারে তৈরি হবার পর লিভার থেকে বের হবার রাস্তায় কোন সমস্যা থাকলে। যেমন: পিত্তনালীয় রাস্তায় পাথর, পিত্তনালীর ক্যান্সার।
জন্ডিস রোগ কেন হয়
জন্ডিসের অনেকগুলো কারণ আছে। আমরা সহজভাবে বলি, হেপাটাইটিস কিছু ভাইরাস আছে, যেগুলো শরীরে জন্ডিস সৃষ্টি করে। যেমন: হেপাটাইটিস-এ ভাইরাস, বি ভাইরাস, সি ভাইরাস, ডি ভাইরাস, ই ভাইরাস। এ ভাইরাসগুলো শরীরে জন্ডিস করে। এ ভাইরাসটা ছোট বাচ্চাদেরকে জন্ডিস করে। ই ভাইরাসটা বড়দের জন্ডিস করে। বি এবং সি ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস সবারই হতে পারে।
সাধারণত জন্ডিস বিভিন্নভাবে হতে পারে। জন্ডিসের জীবাণুটা শরীরে দুইভাবে ঢুকতে পারে। একটা হলো খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে ঢুকতে পারে। আরেকটা রক্তের মাধ্যমে বা সিরিঞ্জ এগুলোর মাধ্যমে ঢুকতে পারে। বি এবং সি নিডল/সিরিঞ্জ, রক্তের মাধ্যমে ঢুকতে পারে বা সেক্সের মাধ্যমে ঢুকতে পারে। আর হেপাটাইটিস এ এবং ইটা খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে, হোটেলে খাইলাম বা কোথাও দাওয়াত খাইলাম, তখন এই জন্ডিসটা শরীরে ঢোকে।
কিছু রোগের কারণে জন্ডিস হয়। যেমন: থ্যালাসেমিয়া বা এক ধরনের অ্যানিমিয়া। অনেক সময় কোনো ওষুধ বা ড্রাগসের কারণে। আমরা বিভিন্ন ওষুধপত্র খাই। এগুলো থেকে অনেক সময় জন্ডিস হয়। যেমন: পেইন কিলার এনএসএডি বা প্যারাসিটামল বা অ্যাস্টেরয়েড ওরাল পিল, ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল। তারপরে বিভিন্ন রকম অ্যান্টিরিউমেটিক ড্রাগ, অ্যান্টি সাইকোটিক ড্রাগ বা অ্যান্টি টিবি ড্রাগ, এসব কারণে জন্ডিস হতে পারে। আবার অনেক সময় পিত্তথলিতে বা পিত্তনালিতে পাথর হইছে বা টিউমার হইছে বা ওয়ার্মস (কৃমি) ঢুকছে, এগুলোর কারণে জন্ডিস হতে পারে।
জন্ডিস রোগের লক্ষণ
১।জন্ডিস রোগীরা প্রথমেই যেটা বলে, হালকা জ্বর থাকে, খেতে পারে না, বমি হয়। এটা দিয়েই জন্ডিসটা শুরু হয়।
২। পরবর্তী পর্যায়ে আস্তে আস্তে প্রশ্রাব হলুদ হয়।
৩। তারপরে চোখ হলুদ হয়।
৪।একসময় দেখা যায় যে, প্যাশেন্টের জ্বরটা কমে যায়, বমিও কমে যায়, কিন্তু খেতে পারে না; গন্ধ লাগে এবং চোখ হলুদ, প্রশ্রাব হলুদ হয়ে যায়।
৫।অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, রোগীর চুলকানি হয়। এটা বিশেষ করে যখন জন্ডিসটা অনেক দিন থাকে, তখন শরীর চুলকায়।
সাধারণত একজন মানুষের জন্ডিসের এ উপসর্গগুলো চার থেকে ছয় সপ্তাহ নাগাদ থাকতে পারে। সাধারণত চার সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নরমাল জন্ডিসগুলো ভালো হয়ে যায়, কিন্তু যদি দেখা যায় জন্ডিস চার সপ্তাহ পার হয়ে গেছে বা ছয় সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, তখন নরমাল জন্ডিস না, অন্য কোনো কারণে জন্ডিস বা খারাপ কোনো কারণে জন্ডিস হয়েছে মনে করা হয়। যেমন: স্টোন, টিউমার বা অন্য খারাপ কোনো কারণে জন্ডিস হয়েছে কি না, তখন আমরা ধারণা করি।
এ জন্য কারও জন্ডিস হওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে ভালো না হলে আপনারা অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। কারণ যে জন্ডিস চার সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, এটা নরমাল জন্ডিস না; এটা সাধারণত সেকেন্ডারি বা খারাপ কোনো কারণে জন্ডিস।
জন্ডিস রোগের প্রতিকার
১।সব সময় বিশুদ্ধ খাদ্য ও পানি খেতে হবে।
২।শরীরে রক্ত নেওয়ার দরকার হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং করে নিতে হবে। ডিসপোজিবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করাটাও খুবই জরুরি।
৩।বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি-এর টিকা প্রত্যেকেরই নেওয়া উচিত।
৪। যাঁরা সেলুনে শেভ করেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আগে ব্যবহার করা ব্লেড বা ক্ষুর পুনরায় ব্যবহার করা না হয়।
৫।জন্ডিস হলে টিকা নিয়ে কোনো লাভ হয় না। তাই সুস্থ থাকতে আগেই টিকা নিতে হবে। হেপাটাইটিস বি-এর ক্ষেত্রে প্রথম মাসে একটি, দ্বিতীয় মাসে একটি বা ছয় মাসের মধ্যে একটি ডোজ দেওয়া হয়। হেপাটাইটিস এ-এর ক্ষেত্রে একটি ডোজই যথেষ্ট। আর দুই ক্ষেত্রেই পাঁচ বছর পর পর বুস্টার টিকা দেওয়া হয়।
জন্ডিস রোগের চিকিৎসা
যেহেতু জন্ডিস কোনো রোগ নয়, তাই এর কোনো ওষুধ নেই। ৭ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে গেলে জন্ডিস এমনিতেই সেরে যায়। এই সময়ে পর্যাপ্ত বিশ্রামই চিকিৎসা। এ সময় ব্যথার ওষুধ যেমন: প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন, ঘুমের ওষুধসহ অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ও কবিরাজি ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। এককথায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই বাস্তবে সেবন করা ঠিক না। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার ঝুঁকিটাই বেশি থাকে।
জন্ডিস রোগীর সাবধানতা
রোগীকে বাইরের খাবার সব সময় পরিহার করতে হবে। বিশেষ করে খুব সাবধান থাকতে হবে পানির ক্ষেত্রে। জন্ডিস থাক বা না থাক, না ফুটিয়ে পানি পান করা যাবে না। বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে ফুচকা, চটপটি, বোরহানি আর সালাদের ব্যাপারে। কারণ, হেপাটাইটিস এ বা ই-এর মতো পানিবাহিত ভাইরাসগুলো এসবের মাধ্যমেই ছড়িয়ে থাকে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের খুব সাবধান থাকা উচিত। এ সময় মায়েরা প্রায়ই বাইরের খাবার খেয়ে থাকেন। আর গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসে যদি হেপাটাইটিস ই হয়, তবে তা থেকে মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি।
নবজাতকের জন্ডিস রোগ
সব ঠিকঠাক থাকলেও জন্মের পর শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নবজাতকের জন্ডিস হতে পারে। জন্ডিস আক্রান্ত শিশুর প্রায় ৫০ শতাংশের বেলায় একে বলে স্বাভাবিক জন্ডিস। শিশুর যকৃৎ পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে উঠতে একটু দেরি হলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে এই জন্ডিস হয়। এ সময়ে কোনো অবস্থায়ই নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত রাখা যাবে না।
স্বাভাবিক জন্ডিস সাত দিনের মধ্যেই সেরে ওঠার কথা। তবে জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জন্ডিস দেখা দিলে, সাত বা দশ দিনের পরও না সারলে, শিশু খাওয়া বন্ধ করে দিলে বা কমিয়ে দিলে, জ্বর বা সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে, বিলিরুবিনের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
জন্ডিস রোগীর খাবার তালিকা
১.তাজা ফলমূল
তাজা ফল এবং সবজিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে। এই উপাদান লিভারের বিপাকীয় ক্ষতি হ্রাস করে। ফলে লিভার দ্রুত সুস্থ হতে পারে। এছাড়া এই উপাদান হজমকে সহজতর করে তুলতে পারে। ফাইটোকেমিক্যালস সমৃদ্ধ এবং নানা উপকারী উপাদান সমৃদ্ধ পদার্থ থাকা ফল লিভারের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। এবার লিভারের পক্ষে উপকারী ফলগুলি হল-
ক্রানবেরি, ব্লুবেরি, আঙুর পাতিলেবু এবং গ্রেপ ফ্রুটস মতো সাইট্রাস নানা ফল পেঁপে এবং মেলন এভোকাডো ইত্যাদি।
২.তাজা শাকসবজি
শাকসবজিতে ভিটামিন সি এবং ই, বিটা ক্যারোটিন, দস্তা, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড সহ অনেক ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। এই খাবারে চর্বি বা ফ্যাট, চিনি বা সুগার এবং লবণের পরিমাণ কম। এছাড়া ফাইবার এবং পাচক এনজাইমের পরিমাণ বেশি। তাই সবজি জন্ডিস আক্রান্তদের ডায়েটের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। লিভার এর পক্ষে উপকারী সবজি হল-
আমাদের সঙ্গে গুগোল নিউজের যুক্ত থাকুন –ফলো গুগোল নিউজ
কুমড়ো, মিষ্টি আলু ,টমেটো,গাজর, শালগম, শালগম,ব্রোকোলি, ফুলকপি এবং ব্রাসেলস স্প্রাউটের মতো ক্রুসিফেরাস সবজি,আদা, রসুন,পালং শাক।
৩. দানা শস্য
দানা শস্য প্রচুর পরিমাণে লিভারের পক্ষে উপকারী পুষ্টি পদার্থ যেমন ভালো ফ্যাট, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ থাকে। তাই এই খাবার আপনি খেতেই পারেন। মনে রাখবেন, এই খাবারে থাকা নানা পুষ্টিগুণ শুধু লিভার নয়, তার পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য় অঙ্গেরও ক্ষতি করে। তাই সতর্ক হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। তবেই সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন। অন্যথায় জটিলতা তৈরি হবে শরীরে। তাই এই খাবার প্রতিদিন খান।
৪. বাদাম এবং শুটি জাতীয়
বেশিরভাগ বাদাম এবং শিম জাতীয় শস্য ভিটামিন ই এবং ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিতে সমৃদ্ধ। বাদাম এবং শিম জাতীয় শস্যগুলিতে সাধারণত প্রচুর ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে আখরোট এবং অন্যান্য গাছের বাদাম নিয়মিত খাওয়া হলে লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তাই এই খাবার প্রতিদিন আপনি অল্প করে খেতেই পারেন। এভাবেই ভালো থাকবেন আপনি।
৫. চা
জন্ডিসের সময় চা পান করলেও দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে। চায়ের মধ্যে উপস্থিত উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে, এটি লিভারে প্রদাহ হ্রাস করে, হজমে সহায়তা করে এবং জন্ডিস থেকে সেরে উঠতে সহায়তা করে।
৬. সুগার জাতীয় খাবার
জন্ডিস হলে সুগার জাতীয় খাবার খেতে হবে তবে তা পরিমিত হতে হবে। যেমন- আখের রস জন্ডিসের জন্য খুবই উপকারী। তবে হ্যা, রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া আখের রস খাবেন না। বাড়িতে আখ কিনে এনে কেটে খান কিংবা রস করে খেতে পারেন। এছাড়া সামান্য চিনি দিয়ে ইয়োগার্ট খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত চিনি লিভারের জন্য ক্ষতিকর।
৭. পুদিনার পাতা
লিভার ফাংশনের জন্য খুবই উপকারী পাতা হচ্ছে পুদিনা। এর পাতা প্রতিদিন সকালে চার-পাঁচটি খেলে জন্ডিসের জন্য ভালো উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া পুদিনার জুস করে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
৮. লেবুর রস
পাকস্থলির জন্য সহায়ক লেবুর রস। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানির মধ্যে করে লেবুর রস খেলে আপনার পরিপাকতন্ত্রে ভালো কাজ করবে।
৯. আনারস
জন্ডিসে আখের রস যেমন ভালো কাজ করে তেমনি আনারসও সেই ভূমিকা পালন করে। এছাড়া লিভার পরিশোধনে আনারস খুবই উপকারী।
জন্ডিস রোগী যে খাবার খেতে পারবে না
জন্ডিস হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা ভালো-
১. কোক, কফি খাবেন না|
২. দুধ দিয়ে তৈরি খাবার খাবেন না|
৩. রান্নায় তেল কম খাবেন। চেষ্টা করুন সেদ্ধ খাবার বেশি খেতে। বেশি লবণ খাওয়া ঠিক নয়।
৪. রাস্তার কাটা ফল বা আখের রস খাবেন না| ফল কিনে এনে ধুয়ে খান।
৫.চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার।
৬. কাঁচা লবণ।
৭.অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার।
৮. রেড মিট (গরু, মহিষ, ছাগলের মাংস) ।
৯. অ্যালকোহল
১০. ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
জন্ডিস রোগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১।বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয়?
উত্তরঃরক্তে বিলিরুবিনের ঘনত্ব 1.2 mg/dL এর নিচে থাকে (25 µmol/L এর নিচে)। 3 mg/dL বা 50 µmol/L এর বেশি হলে জন্ডিস হয়।
২।জন্ডিস হলে কি ঔষধ খাব?
উত্তরঃযেহেতু জন্ডিস কোনো রোগ নয়, তাই এর কোনো ওষুধ নেই। ৭ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে গেলে জন্ডিস এমনিতেই সেরে যায়। এই সময়ে পর্যাপ্ত বিশ্রামই চিকিৎসা। এ সময় ব্যথার ওষুধ যেমন: প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন, ঘুমের ওষুধসহ অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ও কবিরাজি ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
৩।জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে?
উত্তরঃজন্ডিস হলে বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। তখন রোগীর পেট ভাল থাকে না। তাই বেশি ফ্যাট জাতীয় খাবার (মাখন, ডিম ইত্যাদি) কম খাওয়া উচিত। বরং সহজপাচ্য খাবার খান।
৪।জন্ডিস হলে বুঝবো কি করে?
উত্তরঃজন্ডিসের সাধারণ উপসর্গ হলো চোখ ও প্রস্রাবের রং হলদে হয়ে যাওয়া। ত্বক বা মুখের ভেতরও হলুদ দেখায়। এ ছাড়া অরুচি, ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব বা বমি, অবসাদ, জ্বর জ্বর ভাব, কখনো পেটব্যথাও হতে পারে। কখনো চুলকানি হতে পারে।
৫।হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ কি কি?
উত্তরঃহেপাটাইটিস বি ভাইরাসের অ্যাকিউট সংক্রমণের লক্ষনগুলো হল খাদ্যে অরুচি, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, শরীর ব্যাথা, হালকা জ্বর, প্রস্রাব গাঢ় হওয়া ইত্যাদি। এ লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে জন্ডিসে রূপ নিতে থাকে। দেখা গেছে যে, সব ধরনের হেপাটাইটিস এর ক্ষেত্রেই গা চুলকানো একটি সম্ভাব্য লক্ষন হতে পারে।
শেষকথা
জন্ডিস কোনো রোগ নয় বলে একে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। জন্ডিসের চিকিৎসা নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। কেউ ঝাড়ফুঁক করে জন্ডিস নামায়, রোগীকে অতিরিক্ত হলুদ দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়ান, কেউ আবার বিভিন্ন গাছের শেকড় খান। এগুলো সম্পুর্ণ ভুল ধারণা। জন্ডিস হলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।আর নিয়মিত খাবার ও পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
Post Tags –
জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়,জন্ডিস হলে ডিম খাওয়া যাবে কি,জন্ডিস হলে কি মানুষ মারা যায়,জন্ডিস হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে,বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয়,জন্ডিস হলে কি করতে হবে,জন্ডিস হলে কি ডাব খাওয়া যায়,জন্ডিস হলে কি খাবে কি খাবে না,
আপনার জন্য আরো –
- ইংলিশে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ব্লগিং,ইউটিউবিং,ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত সকল ভিডিও পেতে –এখানে ভিজিট করুন।